কেন্দ্রের পরামর্শ নিতে শনিবার দিল্লি উড়ে আসেন রমেশ। ফাইল ছবি
সেপ্টেম্বর: ঝাড়খণ্ডের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে আলোচনা করতে দিল্লি এসেছিলেন ওই রাজ্যের রাজ্যপাল রমেশ ব্যাস। কিন্তু অমিত সরকারি কাজে দিল্লির বাইরে থাকায় শনিবার রাত পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত হয়নি রমেশের। ফলে ঝুলে রইল ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের ভাগ্য।
খনি লিজ় দুর্নীতিতে হেমন্ত সোরেনের বিধায়ক পদ থাকা বা না থাকা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সুপারিশ গত বৃহস্পতিবার থেকে খামবন্দি হয়ে পড়ে রয়েছে ঝাড়খণ্ডের রাজভবনে। ঘর বাঁচাতে রাজ্যের শাসক জোট জেএমম-কংগ্রেস ও আরজেডির বিধায়কেরা গা-ঢাকা দিয়েছেন ভিন্ রাজ্যে। সূত্রের খবর, কেন্দ্রের পরামর্শ নিতে গত কাল দিল্লি উড়ে আসেন রমেশ। যদিও সরকারি ভাবে রাজভবন সূত্রে দাবি করা হয়েছে, চিকিৎসার কারণে দিল্লি গিয়েছেন রাজ্যপাল।
বিজেপি নেতৃত্ব আশা করছিলেন, খনি লিজ় দুর্নীতিতে হেমন্তের বিধায়ক পদ খারিজের সঙ্গেই তাঁকে আগামী ছয় বছরের জন্য যে কোনও ধরনের নির্বাচন লড়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করবে নির্বাচন কমিশন। তা হলে জোট সরকার ভেঙে যাবে। কিন্তু সূত্রের মতে, খামবন্দি চিঠিতে কেবল সোরেনের বিধায়ক পদ খারিজের সুপারিশই করা হয়েছে। তা হলে সরকার পড়ে যাওয়ার কোনও আশু সম্ভাবনা নেই বলেই দাবি শাসক জোটের।
কিন্তু সোরেনের মুখ্যমন্ত্রিত্ব ঘিরে ধোঁয়াশা তৈরি হওয়ায় সরকারের উন্নয়নমূলক কাজে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে সরব হয়েছেন জেএমএম নেতৃত্ব। তার জন্য প্রকারান্তরে রাজভবনের ‘দীর্ঘসূত্রিতাকেই’ দায়ী করছে শাসক জোট। পরবর্তী পদক্ষেপ কী করা উচিত, তা নিয়েই বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করতে রমেশ দিল্লি গিয়েছেন বলে দাবি জেএমএম নেতৃত্বের।
সূত্রের মতে, আজ অমিত শাহকে ফোন করে রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে সময় চেয়েছিলেন রমেশ। কিন্তু তিরুঅনন্তপুরমে দক্ষিণ জ়োনাল কাউন্সিলের বৈঠকে অমিত ব্যস্ত থাকায় রাত পর্যন্ত রমেশের সঙ্গে সাক্ষাৎ সম্ভব হয়নি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, কাল সকাল ন’টায় আমদাবাদ পুরসভার স্মার্ট স্কুল উদ্বোধনে গুজরাতে থাকার কথা রয়েছে অমিত শাহের। কাল সন্ধে সাতটায় আমদাবাদে আরও একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পরে গভীর রাতে অথবা সোমবার সকালে দিল্লি ফিরে আসার কথা তাঁর। সে ক্ষেত্রে আজ তো বটেই, আগামিকালও দু’জনের মুখোমুখি সাক্ষাতের সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
রাজনৈতিক শিবির মনে করছে, এ যাত্রা যদি দু’জনের মধ্যে ঝাড়খণ্ডের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা না হয়, সে ক্ষেত্রে হেমন্ত সোরেনের ভাগ্যে কী রয়েছে, জানতে আরও বেশ কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হবে সব পক্ষকেই। জেএমএম নেতৃত্বের আশঙ্কা, এর সুযোগ নিয়ে ফের বিধায়ক ভাঙানোর জন্য তৎপরতা শুরু হবে বিজেপি শিবিরে।