জসলিন ভল্লা
বৃত্তটা সম্পূর্ণ হল। করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্কবার্তা গোটা দেশ শুনেছিল তাঁর গলার স্বরে। সেটা গত বছরের মার্চ। এ বার প্রতিষেধক নিয়েও আশ্বাসবাণী শোনাচ্ছেন সেই জসলিন ভল্লা। বললেন, ‘‘আমি নিজেও অধীর আগ্রহে এই বৃত্তটা সম্পূর্ণ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।’’
শনিবার, ১৬ জানুয়ারি দেশজুড়ে শুরু হয়েছে প্রথম দফায় করোনা-প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ। সেই সঙ্গেই ফোন করলে ইংরেজি ও হিন্দিতে শোনা যাচ্ছে জসলিনের গলা। সাম্প্রতিক কলারটিউনে তিনি বলছেন, নতুন বছরে ভারতে তৈরি প্রতিষেধক আশার আলো নিয়ে এসেছে। ভারতে তৈরি প্রতিষেধকে আস্থা রাখতে এবং গুজবে কান না দিয়ে সময় এলে প্রতিষেধক নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে ওই বার্তায়।
করোনা সতর্কতা থেকে শুরু করে লকডাউন, আনলক পর্ব— কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের উদ্যোগে বিভিন্ন ধাপে সচেতনতা প্রচারের জন্য মোবাইলের কলারটিউন হিসেবে বাজত নানা বার্তা। প্রথমটি রেকর্ড করার পরই ব্যাপক পরিচিতি পান জসলিন। তার আগে দশ বছর ধরে নানা বিখ্যাত বিজ্ঞাপন, দিল্লি মেট্রোর মতো জায়গায় তাঁর গলার স্বর বাজলেও দিল্লিনিবাসী জসলিনের নাম জানতেন না কেউই। তিনি বলছেন, ‘‘ভয়েসওভার শিল্পীদের নাম তেমন কেউই জানেন না। কিন্তু এই কয়েকটা রেকর্ডিং পুরোপুরি আলাদা ছিল। অসংখ্য মানুষ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এই বার্তাগুলো আমাকে একটা স্বীকৃতি দিয়েছে। মনে হচ্ছে এই ক’মাসে দেশের অনেকের সঙ্গে একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েছে।’’
তাঁর পরিচিতির ব্যাপ্তিটা যে এমন আকার নেবে তা অবশ্য প্রথমে একেবারেই আন্দাজ করতে পারেননি জসলিন। তিনি জানাচ্ছেন, চিত্রনাট্য পড়ে আন্দাজ করেছিলেন এই বার্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তবে তা এতটা জনপ্রিয় হবে বলে তিনি ভাবেননি। প্রথমদিকে অনেকে তাঁকে ‘করোনা-ভয়েস’ বলেছেন। তা জেনে খারাপ লাগলেও পরে মনে হয়েছে এত বিপুল মানুষকে যে তিনি সচেতন থাকার বার্তা দিতে পারছেন, সেটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
মাঝে ওই কলারটিউনে শোনা যাচ্ছিল বলিউড তারকা অমিতাভ বচ্চনের গলায় সতর্কবার্তা। তবে তাঁর গলা বাদ দিতে জনস্বার্থ মামলাও হয়। অতিমারি-পর্বের শেষে এসে অবশ্য প্রতিষেধকের সুখবর শোনাচ্ছেন জসলিনই। দশ মাস আগে করোনার আশঙ্কা জানিয়ে সতর্কবার্তা দিয়ে শুরু করে প্রতিষেধকের খবর দিতে পারার এই তৃপ্তি তুলনাহীন, বলছেন জসলিন। তাঁর কথায়, ‘‘সবার মতো আমিও এই পরিস্থিতি নিয়ে প্রথমে খুবই উদ্বেগে ছিলাম। আমি নিজেও এই দিনটার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। এমন সুসংবাদের বাহক হতে পারাটা সবচেয়ে বেশি আনন্দের।’’