দীপক খাজুরিয়া। অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার।
উদ্দেশ্য ছিল যাযাবর সম্প্রদায়ের মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া। এ নিয়ে ছকও কষে ফেলেছিলেন তিনি। আর সেই ছক অনুযায়ী কাজ করতে গিয়ে জম্মু-কাশ্মীরের এক পুলিশ অফিসার রীতিমতো ‘ভক্ষক’ হয়ে উঠলেন!
নিজের উদ্দেশ্য ‘সফল’ করতে গ্রামের মাঠে ঘোড়া চরানো যাযাবর সম্প্রদায়ের এক নাবালিকাকে অপহরণ করেন ওই পুলিশ অফিসার। এক সপ্তাহ ধরে আটকে রেখে লাগাতার ধর্ষণ করেন ওই নাবালিকাকে। তার পর খুন করে ফেলে দেন গ্রামেরই মাঠে।
অপহরণ, ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগে বৃহস্পতিবার ওই পুলিশ অফিসারকে গ্রেফতার করে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ। ধৃত ওই অফিসারের নাম দীপক খুজারিয়া। তিনি কাঠুয়ার হীরানগর থানার স্পেশ্যাল পুলিশ অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন।
আরও পড়ুন: জম্মুতে সেনা ক্যাম্পে জঙ্গি হানা, নিহত ১ অফিসার, আহত ৬
গত ১০ জানুয়ারি ঘটনাটি ঘটে হীরানগর থানার রাসানা গ্রামে। ওই গ্রামেই যাযাবর সম্প্রদায়ের কয়েকটি পরিবারের বাস। পুলিশ জানিয়েছে, ওই দিন দুপুরে মাঠে ঘো়ড়া চরাচ্ছিল মেয়েটি। আশপাশে তখন কেউ ছিল না। সেই সুযোগটাই কাজে লাগান দীপক। নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর মেয়েটির পরিবার হীরানগর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করে। তদন্তে নামে পুলিশ। মেয়েটিকে খুঁজে বের করার দায়িত্বে যে টিম তৈরি হয়, সেই দলে দীপকও ছিলেন। তখনও পুলিশ ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি সর্ষের মধ্যেই ভূত রয়েছে!
নিখোঁজ হওয়ার এক সপ্তাহ পরে ওই নাবালিকার ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। তার পরেই গ্রামবাসীরা খেপে ওঠে। অপরাধীকে ধরার জন্য বিক্ষোভ দেখানো হয়। বিক্ষোভকারীদের উপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। সেই দলেও ছিলেন খুজারিয়া।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টে শুনানিরও এ বার লাইভ সম্প্রচার?
এর পর তদন্তভার যায় জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-এর হাতে। তারা তদন্তে নেমেই তুলে আনে চাঞ্চল্যকর তথ্য। রাজ্যের ক্রাইম ব্রাঞ্চের এডিজি অলোক পুরী জানান, তদন্তে খুজারিয়ার নাম উঠে আসে। হাতে আসে এই ঘটনায় তাঁর জড়িয়ে থাকার তথ্যপ্রমাণও। তার পরই ওই পুলিশ অফিসারকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, জেরায় অভিযুক্ত তাঁর অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। পুরী আরও জানান, পুরোপুরি পরিকল্পনা করেই বিষয়টি ঘটানো হয়েছে। খুজারিয়ার সঙ্গে আরও এক জন নাবালক এই ঘটনায় জড়িত ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে প্রথমে ওই নাবালককে গ্রেফতার করা হয়। তাকে জেরা করে দীপকের নাম উঠে আসে। জেরায় পুলিশকে ওই নাবালক জানিয়েছে, নাম বললে তার মা-বাবাকে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছিল দীপক।