শ্রীনগরে কড়া প্রহরা। ছবি: পিটিআই।
টি-২০ বিশ্বকাপে রবিবার ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের জয়ের পর দেশবিরোধী স্লোগান তোলায় শ্রীনগরের দু’টি মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রছাত্রী, পরিচালক মণ্ডলীর সদস্য এবং হস্টেল ওয়ার্ডেনের বিরুদ্ধে ইউএপিএ-র আওতায় (বেআইনি কার্যকলাপ বিরোধী) দু’টি এফআইআর করল জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের পর এ ধরনের ঘটনা জম্মু-কাশ্মীরে এই প্রথম। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কাশ্মীরে উপস্থিত থাকার সময়েই এই ঘটনা সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়েছে।
শ্রীনগরে ‘গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ (জিএমসি) এবং শের-ই-কাশ্মীর ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এসকেআইএমএস)-এ এমন ঘটনা ঘটে। এ ধরনের একাধিক ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যেখানে দেখা যাচ্ছে, পাকিস্তানের সমর্থনে স্লোগান তুলছেন অভিযুক্তরা। পাল্লা দিয়ে শোনা গিয়েছে কড়া ভারত-বিরোধী সুরও। সৌরা এবং করণ নগর থানায় এই এফআইআর দু’টি দায়ের হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরের উচ্চ পদস্থ এক পুলিশ কর্তার বার্তা, ‘‘তদন্ত চলছে। এই মামলার মাধ্যমে আমরা উদাহরণ তৈরি করব।’’ ওই ঘটনাগুলিতে এখনও অবশ্য কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ভিডিয়োগুলি খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটি ২০১৭ সালের বলেও মনে করা হচ্ছে। তাঁদের আশ্বাস, ‘‘তদন্তে পুরো বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে।’’ ভিডিয়োগুলিকে নিয়ে সমাজ মাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বহু মানুষ। জিএমসি-র এক ছাত্রীর কথায়, ‘‘এমন চিকিৎসকেরা মানবতার জন্য ঝুঁকির। কাশ্মীরে কর্মরত সেনাদের তাঁরা কী ভাবে চিকিৎসা করবেন ঈশ্বরই জানেন!’’
শোনা যাচ্ছে পাল্টা সুরও। পুলিশের অবস্থানের বিরোধিতা করে জম্মু-কাশ্মীর ‘পিপ্লস কনফারেন্স’-এর নেতা সাজাদ লোনের টুইট, ‘‘আমি এর বিরোধিতা করছি। অন্য একটি দলের জন্য গলা ফাটানোয় আপনারা যদি মনে করেন তাঁরা (অভিযুক্তরা) পুরোপুরি দেশপ্রেমী নন, তা হলে তেমন অভ্যাস ফিরিয়ে আনার সাহস থাকা উচিত। শাস্তি দিয়ে কোনও লাভ নেই।’’ এসকেআইএমএস সূত্রের খবর, বিষয়টি খতিয়ে দেখতে কমিটি গড়া হয়েছে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।
এ দিকে, ২০১৯ সালে পুলওয়ামায় যে সিআরপি ক্যাম্পে আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা, যাতে ৪০ জন আধাসেনা নিহত হয়েছিলেন গত কাল সেখানেই রাত কাটিয়েছেন অমিত শাহ। সেখানেই নিরাপত্তা বাহিনীর উদ্দেশে তিনি বার্তা দিয়েছেন, ‘‘সম্পূর্ণ শান্তি না-ফেরা পর্যন্ত স্বস্তি নেই।’’
তবে এর মধ্যে মঙ্গলবার ফের বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল জম্মু-কাশ্মীরের বান্দিপোরা এলাকা। সকাল ১০টা ২০মিনিট নাগাদ এক সেনা কনভয়ে গ্রেনেড হামলায় ছ’জনের জখম হয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রের খবর। গ্রেনেডটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে রাস্তার ধারে বিস্ফোরণটি ঘটায়। আহতেরা সকলেই সাধারণ নাগরিক।