ফাইল চিত্র।
কাশ্মীরে গোলমাল নিয়ন্ত্রণে ছররা বন্দুকের ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আর্জি খারিজ করল জম্মু-কাশ্মীর হাইকোর্ট। ২০১৬ সালের অশান্তির সময়ে বাহিনীর যে সব জওয়ান-অফিসার ওই অস্ত্র যাঁরা ব্যবহার করেছেন তাঁদের বিচার শুরুর নির্দেশ দিতেও রাজি হয়নি হাইকোর্ট। জম্মু-কাশ্মীর সরকার ছররায় আহতদের নিয়ম মেনে ক্ষতিপূরণও দিয়েছে বলে জানিয়েছে বেঞ্চ।
২০১৬ সালে অশান্তির সময়ে বিক্ষোভকারীদের উপরে ছররা ব্যবহার নিয়ে প্রবল সমালোচনা শুরু হয়। ওই অস্ত্রকে প্রাণঘাতী নয় বলে দাবি করে প্রশাসন। কিন্তু ছররার আঘাতে মৃত্যু এবং অক্ষম হয়ে যাওয়ার বহু অভিযোগ ওঠে। এই অস্ত্রের উপরে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে হাইকোর্টে আর্জি পেশ করে জম্মু-কাশ্মীর বার অ্যাসোসিয়েশন।
আজ বিচারপতি আলি মহম্মদ মাগরে ও বিচারপতি ধীরজ সিংহ ঠাকুরের বেঞ্চ জানায়, যত দিন জনতা হিংসার পথ বেছে নেবে তত দিন তা থামাতে বলপ্রয়োগও করতে হবে। কোথায়, কতটা বলপ্রয়োগ করা প্রয়োজন তা সেখানে উপস্থিত দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিই স্থির করতে পারেন। বিচারপতিরা বলেন, ‘‘উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের রিপোর্ট ছাড়া কোনও পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করা হয়েছিল কি না তা স্থির করা সম্ভব নয়। তা ছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ছররার বিকল্প খুঁজতে বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়েছে। সেই কমিটির রিপোর্ট জমা পড়া ও সরকারি কোনও সিদ্ধান্ত ঘোষিত হওয়ার আগে আমরা বিশেষ পরিস্থিতিতে ছররা ব্যবহারের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারি না।’’
হাইকোর্টের মতে, ‘‘অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করা হয়েছে এমন কোনও তথ্য আমরা পাইনি। ফলে সেই বলপ্রয়োগের জন্য দায়ীদের বিচার শুরুর নির্দেশও দিতে পারি না। অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার অভিযোগ যাঁরা করছেন তাঁরা প্রয়োজনে উপযুক্ত মঞ্চে মামলা করতে পারেন।’’
ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রসঙ্গেও আবেদনকারীদের আর্জিকে গুরুত্ব দিতে রাজি হয়নি হাইকোর্ট। বিচারপতিরা বলেন, ‘‘সাংবিধানিক নিয়ম মেনে রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্তদের এককালীন ক্ষতিপূরণ দিয়েছে বলেই আমরা মনে করি।’’
জম্মু-কাশ্মীর সরকারের তরফে হাইকোর্টে সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্তদের একটি তালিকা পেশ করা হয়েছে। সরকার জানিয়েছে, যাঁরা সম্পূর্ণ অক্ষম হয়ে গিয়েছেন তাঁদের নিয়ম মেনে ৭৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। যাঁরা আংশিক ভাবে অক্ষম হয়েছেন তাঁদের ৫০ হাজার টাকা করে দিয়েছে সরকার।