ছবি এপি
কাশ্মীরে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আজ ফের প্রশ্নের মুখে পড়ল কেন্দ্র ও জম্মু-কাশ্মীর সরকার। আর কত দিন উপত্যকায় নিষেধাজ্ঞা থাকবে তা জানতে চায় আদালত। বিচারপতিরা জানান, জাতীয় স্বার্থে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলেও তা নিয়মিত ভাবে পুনর্বিবেচনা প্রয়োজন। পাশাপাশি জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া আর্জিগুলির শুনানি সাংবিধানিক বেঞ্চে হবে বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।
কাশ্মীরে নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে মামলার আগের শুনানিতেই প্রশ্নের মুখে পড়েছিল প্রশাসন। ক্ষুব্ধ বিচারপতিরা মন্তব্য করেন, ‘‘কাশ্মীর নিয়ে যা বোঝাবেন তা-ই বুঝব এমন ভাববেন না।’’ এর পরে নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশের ফাইলও দেখতে চেয়েছিলেন বিচারপতিরা।
এ দিনও সরকারের কাছ থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে ‘স্পষ্ট’ জবাব চায় বিচারপতি এন ভি রামানার বেঞ্চ। সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের আইনজীবীরা জানান, ৮-১০টি থানা এলাকা ছাড়া কাশ্মীরের সব জায়গা থেকে যাতায়াতের উপরে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। উপত্যকার প্রায় ৯৯% এলাকায় এখন এই ধরনের কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। চালু হয়েছে ল্যান্ডলাইন ও পোস্টপেড মোবাইল। নিষেধাজ্ঞা নিয়মিত পুনর্বিবেচনা করা হয় বলেও জানান সরকারি কৌঁসুলিরা।
কিন্তু আবেদনকারীদের কৌঁসুলি বৃন্দা গ্রোভার সরকারের বক্তব্যের বিরোধিতা করে জানান, উপত্যকায় এখনও ইন্টারনেট চালু হয়নি। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ‘‘উটপাখির মতো মাটিতে মুখ গুঁজে থাকলে চলবে না। ইন্টারনেট চালু হলে কাশ্মীরে জঙ্গি কার্যকলাপ বাড়তে পারে। তাই উপত্যকায় ইন্টারনেট চালুর প্রভাব পড়তে পারে আন্তর্জাতিক স্তরেও।’’ মেহতা জানান, ২০১৬ সালে জঙ্গি নেতা বুরহান ওয়ানি নিহত হওয়ার পরে তিন মাস কাশ্মীরে ইন্টারনেট বন্ধ ছিল। তখন কেউ সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানাননি। গ্রোভার সরকারি তথ্য তুলে ধরে মন্তব্য করেন, ‘‘সরকারই তো জানাচ্ছে এখন সন্ত্রাস অনেক কমেছে।’’
আগের শুনানিতে আবেদনকারী অনুরাধা ভাসিনের আইনজীবীরা জানান, নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশ প্রকাশ করতে রাজি হচ্ছে না প্রশাসন। জবাবে আজ সরকারি আইনজীবীরা জানান, সরকারি নির্দেশে কেন নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে তা লেখা থাকে না। কারণ, সে ক্ষেত্রে কেন ওই নির্দেশ জারি করা হচ্ছে তা প্রকাশ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ওই নির্দেশ আবেদনকারীদের দেওয়া সম্ভব নয়। বিচারপতিদের দেখার জন্য তা শীর্ষ আদালতে পেশ করতে রাজি আছে সরকার। ৫ নভেম্বর ফের এই মামলার শুনানি হবে।
অন্য দিকে, জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার শুনানি ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে হবে বলে এ দিন জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।