রাম জেঠমলানী ও অরুণ জেটলি
আইনি পেশায় দু’জনের রেষারেষির ইতিহাস বহু পুরনো। বিজেপির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও কোনওদিনই ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন না তাঁরা। দিল্লি হাইকোর্টে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে জেরা করার সময়ে যেন সেই রেষারেষিকেই ফের টেনে আনলেন প্রাক্তন বিজেপি নেতা রাম জেঠমলানী।
দিল্লি সচিবালয়ে সিবিআইয়ের হানার পিছনে জেটলির হাত আছে বলে অভিযোগ করেছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। কেজরীবালের আম আদমি পার্টির দাবি ছিল, দিল্লি ক্রিকেট সংস্থার দুর্নীতিতে জেটলি জড়িত। কেন্দ্রের নির্দেশে সেই দুর্নীতি সংক্রান্ত ফাইল সরাতেই হানা দিয়েছিল সিবিআই। এর পরে কেজরীবালের আম আদমি পার্টির বিরুদ্ধে ১০ কোটি টাকার মানহানির মামলা করেন জেটলি। সেই মামলাতে কেজরীবালের আইনজীবী জেঠমলানী।জেটলিকে জেঠমলানীর জেরা করার সম্ভাবনা রয়েছে শুনে দিল্লি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট এজলাসে সকাল থেকেই ভিড় হয়েছিল প্রচুর। প্রথম থেকেই প্রতিপক্ষকে বিঁধতে উদ্যোগী ছিলেন জেঠমলানী। সওয়ালের সময়ে জেটলির আইনজীবীকে বলেন, ‘‘আপনি আগে হাসতে শিখুন।’’ জবাবে জেটলির আইনজীবী জানতে চান, ‘‘আপনার প্রশ্নটা কী?’’ জেঠমলানীর জবাব,‘‘আমি আপনার আইনের শিক্ষক নই। প্রশ্ন এখন বলতে পারব না।’’
এর পরে শুরু হয় সাক্ষীর আসনে থাকা জেটলির সঙ্গে প্রশ্নোত্তর পর্ব। জেঠমলানী জানতে চান, ‘‘আপনার সম্মানের অপরিমিত ক্ষতি হয়েছে বলে আর্জিতে জানিয়েছেন। এই শব্দের অর্থ কী? আপনার ভাবমূর্তির যা ক্ষতি হয়েছে তা আর সংশোধন করা সম্ভব নয় বলেও জানিয়েছেন। এরই বা মানে কী?’’ জবাবে জেটলি বলেন, ‘‘আমার খ্যাতির কথা ধরলে ভাবমূর্তির অপরিমিত ক্ষতি হয়েছে। যে ক্ষতিপূরণ চেয়েছি তার অঙ্কে ওই ক্ষতির কিছুটা মাত্র মাপা যাচ্ছে।’’
সঙ্গে সঙ্গেই আক্রমণ শানান জেঠমলানী, ‘‘তাহলে এই ক্ষতির হিসেব পুরোপুরি নিজের মহত্ত্ব সম্পর্কে আপনার ধারণার উপরে নির্ভরশীল। টাকার অঙ্কে বিষয়টি বিচার করা যায় না।’’
জেটলির জবাব, ‘‘বিষয়টি নিয়ে আমার বন্ধুবান্ধব, শুভার্থী ও সাংবাদিকরা নিজেদের মত জানিয়েছেন। ক্ষতি কতটা হয়েছে, সেটা তা থেকেই হিসেব করেছি।’’ জমজমাট জেরা পর্বের পরে জেঠমলানী বলেন, ‘‘আমার জেরা শুনতে এখনও যে এত মানুষ আসেন দেখে ভাল লাগছে।’’