কুকুরকে আদর করে স্বাগত জানালেন আইনজীবী জয় অনন্ত দেহাদ্রাই। ছবি: এক্স।
নিজের পোষ্য সারমেয়কে ফিরে পাওয়ার ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে পোস্ট করলেন আইনজীবী জয় অনন্ত দেহাদ্রাই। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে রটওয়েলার প্রজাতির এই পোষ্যকেই ‘অপহরণ’-এর অভিযোগ করেছিলেন জয়। বৃহস্পতিবার মহুয়াকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে সংসদের এথিক্স কমিটি। তার কিছু পরেই এক্স (পূর্বতন টুইটার) হ্যান্ডলে পোষ্য হেনরির ফিরে আসার ভিডিয়ো পোস্ট করেন জয়। জানান, ঘরে ফিরে হেনরি ‘উত্তেজিত’। ভিডিয়োটি বৃহস্পতিবারের কি না, তার কোনও উল্লেখ অবশ্য জয়ের বক্তব্যে নেই।
এক্সে জয় লিখেছেন, ‘‘স্বাগত হেনরি! আপনাদের সমর্থন, প্রার্থনা, শুভেচ্ছার জন্য ধন্যবাদ। ঘরে ফিরে হেনরি উত্তেজিত।’’ ভিডিয়োতে তাঁকে পোষ্যের উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, ‘‘শরীরচর্চা করোনি বলে মোটা হয়ে গেছ!’’
এই পোষ্য নিয়েই মহুয়া এবং জয়ের বচসা তুঙ্গে ওঠে। দু’জনেই নিজেকে পোষ্যের মালিক বলে দাবি করেন। মহুয়া আঙুল তোলেন, তাঁর পোষ্যকে চুরি করেছেন জয়। একই অভিযোগ জয়ও করেন। গত মাসে দিল্লির পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দিয়ে জয় অভিযোগ করেছিলেন, মহুয়া তাঁর পোষ্য ‘চুরি’ করে ‘লুকিয়ে রেখেছেন’। তিনি এ-ও দাবি করেছিলেন, সিবিআইকে মহুয়ার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছিলেন, তা তুলে নেওয়ার জন্য ওই পোষ্যকে ব্যবহার করে ‘ব্ল্যাকমেল’ করছেন সাংসদ। এই ঘটনার পর থেকে প্রায় দিন সমাজমাধ্যমে পোষ্যের ছবি এবং ভিডিয়ো পোস্ট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জয়। পুলিশের কাছে অভিযোগে এ-ও জানিয়েছিলেন, কী ভাবে ৪০ দিনের হেনরিকে তিনি বড় করে তুলেছেন। পোষ্যের রেজিস্ট্রেশন নম্বরও দাখিল করেন। সমাজমাধ্যমে এ-ও জানিয়েছিলেন, হেনরি তাঁর সন্তানের মতোই।
জয়কে আইনি নোটিস পাঠান মহুয়া। ওই চিঠিতে লেখা হয়েছে, জয় এবং মহুয়া ঘনিষ্ঠ বন্ধু। বেশ কয়েক বছরের ঘনিষ্ঠতায় কিছু দিন আগে ‘ইতি’ পড়ে ব্যক্তিগত কারণে। এর পর থেকেই জয় প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে ওঠেন। তিনি মহুয়াকে বার বার হুমকি দিয়েছেন। জঘন্য, নোংরা, অশ্লীল মেসেজ পাঠাতে থাকেন। আরও অভিযোগ, দিল্লিতে সাংসদ হিসাবে পাওয়া মহুয়ার বাংলোয় অজান্তে ঢুকে পড়েন জয় এবং অনেক ব্যক্তিগত জিনিস চুরি করেন। শুধু তা-ই নয়, মহুয়ার পোষ্য কুকুরকে তিনি নিয়ে যান বলেও অভিযোগ। যদিও তা পরে মহুয়া ফেরত পান। বার বার মহুয়ার বাড়িতে না-জানিয়ে জয় প্রবেশ করায় সাংসদের তরফে দিল্লির বড়াখাম্বা রোড থানায় দু’টি অভিযোগ জানানো হয় গত ২৫ মার্চ এবং ২৩ সেপ্টেম্বর।
প্রসঙ্গত, মহুয়ার বিরুদ্ধে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবেকে চিঠি লিখেছিলেন এই জয়ই। জয়ের দেওয়া নথির ভিত্তিতেই নিশিকান্ত স্পিকারকে চিঠি লেখেন। অভিযোগ করেন, ঘুষ নিয়ে সংসদে প্রশ্ন করেছেন মহুয়া। নিশানা করেছেন গৌতম আদানি এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। জয় সিবিআইয়ের কাছেও অভিযোগ জানান। তাঁর অভিযোগ, সেই অভিযোগ তুলে নিতেই তাঁকে ‘ব্ল্যাকমেল’ করছেন মহুয়া। মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে শুনানি হয় সংসদের এথিক্স কমিটিতে। সেখানে শুনানির মাঝেই মহুয়া বেরিয়ে আসেন। অভিযোগ করেন, বৈঠকে ‘ব্যক্তিগত এবং অনৈতিক’ প্রশ্ন করা হয়েছে। প্যানেলের প্রধান বিনোদ সোনকর-সহ বিজেপির সাংসদেরা এই অভিযোগ মানেননি। বৃহস্পতিবার মহুয়াকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে কমিটি।