ISRO

ISRO: গগনযান পরে, চাঁদে মানুষ পাঠাতে তৎপর ইসরো, হঠাৎ সিদ্ধান্ত বদল নিয়ে মুখে কুলুপ

চন্দ্রযান-২ অভিযানে বিক্রম নামের ল্যান্ডারটি ভেঙে পড়ার পরে অনেকেই ইসরোর প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৭:৩০
Share:

ফাইল চিত্র।

আর মাত্র ছ’মাসের ব্যবধান। তার পরেই ফের চাঁদের উদ্দেশে পাড়ি দিতে চলেছে ভারত। সম্প্রতি সংসদে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ জানিয়েছেন, আগামী অগস্টে চন্দ্রযান-৩ উৎক্ষেপণ করবে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো)। তার প্রস্তুতি এগোচ্ছে বলেও তিনি জানান। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে চন্দ্রযান-২ অভিযানে রোভার-সহ বিক্রম নামের ল্যান্ডারটি চাঁদে মুখ থুবড়ে পড়ার পর থেকে সে ভাবে চন্দ্রাভিযান নিয়ে সাড়াশব্দ করেনি ইসরো। বরং গগনযান (মহাকাশে মানুষ পাঠানোর অভিযান) নিয়েই নানা কথা বলা হয়েছে। তা হলে আচমকা চন্দ্রযান-৩ পাঠানোর সিদ্ধান্ত কেন?

Advertisement

ইসরো কর্তারা এ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ। তবে ভারতের মহাকাশবিজ্ঞান চর্চার সঙ্গে জড়িত নানা সূত্রের দাবি, চাঁদের মাটিতে সফল ভাবে অবতরণ ঘটাতে না-পারলে স্বাধীন ভাবে গগনযান পাঠানোর আশা কার্যত ছাড়তে হবে ইসরোকে। কারণ, কক্ষপথে উপগ্রহ পাঠালেও এ পর্যন্ত চাঁদ কিংবা মঙ্গল, কোথাও যান অবতরণ করাতে পারেনি ইসরো। তাই মহাকাশ থেকে কোনও যানকে কী ভাবে নিরাপদে অবতরণ করানো যায়, সে ব্যাপারে সাফল্যের হার শূন্য।

বিজ্ঞানীদের অনেকের মতে, চাঁদে অবতরণের থেকে পৃথিবীতে অবতরণ করানো অনেক কঠিন। কারণ, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ঘনত্ব বেশি এবং তাতে ঘর্ষণে প্রবল তাপ উৎপন্ন হয়। তাই একেবারে কোনও অভিজ্ঞতা না থাকলে গগনযান অভিযানে মহাকাশচারীদের ঝুঁকি অনেক বাড়বে। অনেকের মতে, এই কারণেই সম্ভবত অতিমারি পরিস্থিতি-সহ নানা কারণ দেখিয়ে আপাতত গগনযান প্রকল্পকে সরিয়ে রাখা হয়েছে। তার বদলে চন্দ্রযান-৩ নিয়েই তৎপর হয়েছে ইসরো।

Advertisement

ইন্ডিয়ান সেন্টার ফর স্পেস ফিজ়িক্স-এর অধিকর্তা সন্দীপ চক্রবর্তীর মতে, “চন্দ্রযান-৩ প্রকল্পে চাঁদের মাটিতে অবতরণ করতে হবে। আবার গগনযান প্রকল্পেও মহাকাশচারীদের নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা আবশ্যিক। তাই গগনযানের আগে সফল ভাবে চন্দ্রযান-৩ অভিযানের নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্যপূর্ণ।”

অতীতে চন্দ্রযান-১, মঙ্গলযান এবং চন্দ্রযান-২ অভিযানের অনেক আগে থেকেই ইসরো অভিযানের খুঁটিনাটি প্রকাশ্যে এনেছিল। কিন্তু চন্দ্রযান-৩ নিয়ে তারা সে ভাবে সরব নয়। বরং অনেকটাই আড়াল করে রাখা হয়েছে। চন্দ্রযান-২ অভিযানের তিনটি অংশ ছিল, অরবিটার (যা কক্ষপথে পাক খায়), ল্যান্ডার (যা মাটিতে অবতরণ করে এবং এক জায়গায় থিতু হয়) এবং রোভার (যন্ত্রচালিত গাড়ি)। সূত্রের খবর, চন্দ্রযান-৩ অভিযানে অরবিটার থাকছে না। শুধু ল্যান্ডার এবং রোভার থাকবে। সেগুলির পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে। কিন্তু তার নাম কী হবে, সেগুলির বিশেষত্ব কী, তা নিয়ে ইসরো আপাতত নীরব।

প্রসঙ্গত, চন্দ্রযান-২ অভিযানে বিক্রম নামের ল্যান্ডারটি ভেঙে পড়ার পরে অনেকেই ইসরোর প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। প্রস্তুতির সময়েও বিক্রমের পা ভেঙে ছিল বলে শোনা যায়। এ বার অনেকেরই ধারণা, চন্দ্রযান-২ অভিযান যেখানে ব্যর্থ হয়েছিল সেখান থেকেই থেকেই বোধ হয় চন্দ্রযান-৩ শুরু করতে চাইছে ইসরো। সে ক্ষেত্রে বিক্রমের থেকে নতুন ল্যান্ডারে খুব বেশি বদল থাকার কথা নয়। একই কথা প্রযোজ্য বিক্রমের ক্ষেত্রেও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement