ইশরত জাহান। ছবি: সংগৃহীত
ইশরত জাহানের ভুয়ো সঙ্ঘর্ষ মামলায় বেকসুর খালাস পেলেন শেষ তিন অভিযুক্তও। বিশেষ সিবিআই আদালতের যুক্তি, ইশরতরা সন্ত্রাসবাদী ছিল তার যেমন প্রমাণ নেই, তেমনই তারা যে সন্ত্রাসবাদী ছিল না তারও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তা ছাড়া অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার জন্য গুজরাত সরকারের অনুমোদন দরকার ছিল। গুজরাত প্রশাসন তা না দেওয়ায় এ বার ভুয়ো সঙ্ঘর্ষ মামলায় আর কোনও অভিযুক্তই রইল না। ফলে কার্যত খারিজ হয়ে গেল ইশরাত জাহানের ভুয়ো সঙ্ঘর্ষ মামলাটি।
আদালতের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারত সিবিআই। ২০১৩ সালে তারাই ভুয়ো সঙ্ঘর্ষ মামলায় ৭ পুলিশ কর্তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছিল। তবে এর আগে ২০১৯-এ যখন অভিযুক্ত পুলিশ কর্তাদের মুক্তি দেওয়া হয়নি, তখন সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানায়নি সিবিআই। তাই এ ক্ষেত্রেও সিবিআই চ্যালেঞ্জ জানাবে বলে মনে করছে না ওয়াকিবহাল মহল।
বুধবার ভুয়ো সঙ্ঘর্ষ মামলা থেকে যাঁরা খালাস পেলেন সেই তিন পুলিশকর্তা হলেন আইপিএস অফিসার জিএল সিংঘল, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্তা তরুণ বারোট এবং পদস্থ পুলিশ কর্তা অনাজু চৌধুরী। এর আগে গত ২০ মার্চ আদালতে মুক্তির আবেদন করেছিলেন তাঁরা। বুধবার তিন অভিযুক্ত পুলিশ কর্তাকে বেকসুর খালাস করে বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক ভি আর রাভাল জানান, তদন্তে এমন কিছু পাওয়া যায়নি যা প্রমাণ করে ইশরত জাহান-সহ আরও যে চার জনকে হত্যা করা হয়েছিল তারা সন্ত্রাসবাদী নয়।
ইশরাত, জাভেদ শেখ ওরফে প্রাণেশ পিল্লাই, আমজাদ আলি রানা এবং জিশন জোহরকে ২০০৪ সালে ১৫ জুন আমদাবাদের কোতারপুরে ভুয়ো সঙ্ঘর্ষে হত্যার অভিযোগ ওঠে আমদাবাদ পুলিশের অপরাধ দমন শাখার কর্তাদের বিরুদ্ধে। সেসময় আমদাবাদের অপরাধ দমন শাখার প্রধান ছিলেন ডিজি বানজারা। যদিও তাঁর নেতৃত্বাধীন আমদাবাদের অপরাধ দমন শাখার দাবি ছিল, ইশরত-সহ চার জন পাকিস্তানের নাগরিক। লস্কর-ই-তৈবা জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্য। গুজরাতে এসেছিলেন তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে হত্যা করতে।
২০১৩ সালে এই হত্যার ঘটনায় বানজারা-সহ সাতজন পুলিশ কর্তার বিরুদ্ধে ভুয়ো সঙ্ঘর্ষ মামলায় চার্জশিট দেয় সিবিআই। প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই হত্যা, অপহরণ এবং প্রমাণ লোপাটের মামলা দায়ের হয়েছিল।এর মধ্যে ডিজি বানজারা এবং এন কে আমিনকে ২০১৯-এ মুক্তি দেয় সিবিআই আদালত। পিপি পাণ্ডে এবং যে জি পারমারও মুক্তি পেয়েছেন। এদের কারও বিরুদ্ধেই তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি গুজরাত সরকার। চ্যালেঞ্জ জানিয়ে পাল্টা মামলা দায়ের করেনি সিবিআই-ও।