প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে ও তাঁর ছেলে আদিত্য। শুক্রবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: প্রধানমন্ত্রীর দফতরের সৌজন্যে
মুখ্যমন্ত্রী হয়ে প্রথম বার দিল্লি এলেন উদ্ধব ঠাকরে। পুত্র ও রাজ্যের মন্ত্রী আদিত্য ঠাকরেকে নিয়ে প্রথম বার আনুষ্ঠানিক বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। আদিত্য আগে গেলেও উদ্ধব প্রথম বার দশ জনপথে পা দিয়ে দেখা করলেন সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে। প্রথম বার আশীর্বাদ নিলেন লালকৃষ্ণ আডবাণীর বাড়ি গিয়ে। আর সকলকে চমকে দিয়ে প্রথম বার বৈঠক করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে।
এত কিছু ‘প্রথম’ হলেও এ বারেও তাঁর দেখা হল না রাহুল গাঁধীর সঙ্গে। আদিত্য একবার ‘গোপন’ বৈঠক করে গিয়েছেন রাহুলের সঙ্গে। সেটি জানাজানি হওয়া সত্ত্বেও রাহুলের পক্ষ থেকে কোনও ছবি পোস্ট করা হয়নি। আর এই ঝটিকা সফরে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে বেরিয়ে এবং সনিয়ার বাড়ি যাওয়ার আগেই উদ্ধব সাংবাদিক সম্মেলন করে ফেললেন। যেখানে ঘোষণা করলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি (এনপিআর) এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে কথা হয়েছে। গোটা দেশে এনআরসি হচ্ছে না। আর সিএএ নিয়ে কারও ভয় পাওয়ার কারণ নেই। কারও নাগরিকত্ব যাচ্ছে না। এনপিআর প্রতি দশ বছর অন্তর হয়। আমি রাজ্যের নাগরিকদের আশ্বস্ত করেছি, কারও অধিকার কাড়া হবে না।’’ যদিও এনপিআর-এর প্রশ্ন নিয়ে আপত্তি উঠলে বন্ধ করার ইঙ্গিতও তিনি দিয়েছেন বলে শিবসেনার দাবি।
স্বাভাবিক ভাবেই চারটি বৈঠকের মধ্যে তিনটিই বিজেপি নেতাদের সঙ্গে। মহারাষ্ট্রে সরকার কংগ্রেস ও এনসিপির সঙ্গে মিলে হলেও ঝোঁক কি বিজেপির দিকেই হচ্ছে না? মহারাষ্ট্রের শাসক জোটে কি তা হলে চিড় ধরছে? এ প্রশ্ন আজ সকাল থেকেই ঘুরছে রাজধানীতে। জবাবে উদ্ধব বলেন, ‘‘মতভেদের কোনও প্রশ্নই নেই। এই সরকার পাঁচ বছরই চলবে।’’ উদ্ধবের সেনাপতি সঞ্জয় রাউতও বলেন, ‘‘সনিয়া গাঁধীর সমর্থনে সরকার চলছে মহারাষ্ট্রে। যাঁরা ভাবছেন, সরকারে চিড় ধরেছে, তাঁরা লাড্ডু খেতে পারেন, কিন্তু সেটা গলা দিয়ে নামবে না! লালকৃষ্ণ আডবাণীর আশীর্বাদ সব সময়ই রয়েছে। আর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে। কেন্দ্র ও রাজ্যের নানা বিষয় নিয়ে।’’
কিন্তু যে ভাবে আদিত্যকে সঙ্গে নিয়ে উদ্ধব প্রধানমন্ত্রীর দফতরে গিয়েছেন এবং আদিত্যকে জড়িয়ে ধরার ছবি মোদী পোস্ট করেছেন, তাতে অন্য গন্ধই পাচ্ছে রাজধানী। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে বেরিয়ে উদ্ধব যে ভাবে সিএএ, এনপিআর, এনআরসি নিয়ে মোদী-শাহের মতই জোরালো ভাষায় বক্তব্য রাখলেন। কংগ্রেস-সহ অনেক বিরোধী দল এই তিন বিষয়েরই বিরোধিতা করছে। উদ্ধবের ঘোষণার পরে মহারাষ্ট্র সরকারে কংগ্রেসের মন্ত্রী বালাসাহেব থোরাট বলেন, ‘‘একটু মতভেদ আছে। আমরা বসে এক মত তৈরি করব।’’
আরও পড়ুন: কেজরীর ‘আনন্দ পাঠে’ কি সঙ্গী ইভাঙ্কাও?