মাউন্ট এভারেস্ট। পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। কিন্তু, তার উচ্চতা নাকি কমে গিয়েছে!
২০১১-য় নেপালে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়। তার পর থেকেই বিজ্ঞানী মহলে বার বার এই আলোচনাটা উঠেছে। এক দল বিজ্ঞানীর মতে, রিখটার স্কেলে ৭.৮ কম্পনমাত্রার ওই ভূমিকম্পের জেরে এভারেস্ট নাকি বসে গিয়েছে। ফলে তার উচ্চতা কমেছে। আবার বিজ্ঞানীদের অন্য একটা দল বলছে, এভারেস্টের উচ্চতা কমেনি। যা ছিল তাই আছে। এমন একটা পরিস্থিতিতে সর্বোচ্চ ওই শৃঙ্গকে নতুন করে মাপার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সার্ভে অব ইন্ডিয়া। খুব শীঘ্রই এভারেস্টের উচ্চতা নতুন করে মাপতে বিশেষজ্ঞ দল পাঠানো হবে।
সার্ভে অব ইন্ডিয়া সূত্রে খবর, ১৮৫৫ সালে এভারেস্টে প্রথম তারাই মাপজোক শুরু করে। তখন এর উচ্চতা ছিল ৮ হাজার ৮৪৮ মিটার অর্থাত্ ২৯ হাজার ২৯ ফুট। সেই হিসেবই চলে এসেছে গত দেড়শো বছরেরও বেশি সময় ধরে। সার্ভেয়র জেনারেল স্বর্ণ সুব্বা রাও বলেন, ‘‘দ্বিতীয় বার এভারেস্টের উচ্চতা মাপার অনুমতি আমরা বিদেশ মন্ত্রকের কাছ থেকে পেয়েছি। সব যদি ঠিক থাকে, আগামী দু’মাসের মধ্যেই আমরা এভারেস্টে দল পাঠাব।’’
আরও পড়ুন: তুষারধসে এক সেনা অফিসার-সহ পাঁচ জনের মৃত্যু কাশ্মীরে
নেপালের ওই ভূমিকম্পে হাজারখানের মানুষের মৃত্যু হয়। শুধু তাই নয়, এক দল বিজ্ঞানীর মতে ভয়াবহ ওই ভূমিকম্পে গোটা হিমালয়ের চরিত্রগত বদল ঘটেছে। এর জেরে এভারেস্টের উচ্চতা কোথাও কয়েক মিলিমিটার, কোথাও বা এক সেন্টিমিটারের মতো কমে গিয়েছে। স্যাটেলাইট চিত্রে সেই ছবি ধরাও পড়েছে বলে দাবি। কিন্তু, আদৌ কি কমেছে পৃথিবীর বৃহত্তম ওই শৃঙ্গের উচ্চতা? তা জানতেই সার্ভে অব ইন্ডিয়ার এই উদ্যোগ।
সুব্বা রাও জানিয়েছেন, দু’টি পদ্ধতিতে এভারেস্ট মাপার কাজ করা হবে। প্রথমে ওই শৃঙ্গে একটি বিশেষজ্ঞ দল পাঠানো হবে। তার মধ্যে সংস্থার তিন চার জন আধিকারিক থাকবেন। রাওয়ের দাবি, শারীরিক ভাবে ওই আধিকারিকরা সক্ষম তো বটেই পাশাপাশি হিমালয় বিষয়েও যথেষ্ট জ্ঞান রয়েছে তাঁদের। দলের বাকি সদস্য হিসাবে পেশাদার পর্বতারোহীদের রাখা হবে। এই দলটি প্রায় দু’ঘণ্টা শৃঙ্গে থাকবে। ওই সময়ের মধ্যেই জিপিএস ব্যবস্থায় উচ্চতা মাপার প্রাথমিক কাজটি হয়ে যাবে। পরবর্তী দু’সপ্তাহ ধরে ওই তথ্যই যাচাই করা হবে ত্রিকোণোমিতি পদ্ধতিতে। এর পরেই জানা যাবে, এভারেস্টের এখনকার প্রকৃত উচ্চতা। সুব্বার দাবি, গোটা প্রক্রিয়ায় মোট সাত লক্ষ মার্কিন ডলার খরচ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এভারেস্টের উচ্চতা তো বটেই, সুবাব রাওয়ের মতে এই সমীক্ষায় ভূমিকম্পজনীত কারণে ভূ-পৃষ্ঠের নীচের প্লেট সরে যাওয়ার তথ্যও জানা যাবে।