শাহরুখ খান এবং আমজাদ আলি খান
নেহাতই ভুল বোঝাবুঝি? নাকি অন্য কিছু? এক বার, দু’বার, তিন বার। তিন বার আমেরিকার তিন বিমানবন্দরে অভিবাসন দফতরের হাতে হেনস্থা হতে হল শাহরুখ খানকে। শাহরুখের মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ব্যক্তিত্বের সঙ্গে এক দেশে বার বার এই একই হেনস্থার ঘটনা ঘটতে পারে কী করে!
মার্কিনরা তো যে কোনও কাজ নিঁখুত, নির্ভুল ভাবে করার জন্য প্রশংসা পেয়ে থাকেন। নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে মার্কিন প্রশাসনের নজরদারি তো আরও চৌখস। কিন্তু, একটা মানুষের নাম সফরকারীদের তালিকায় দেখলে মার্কিনদের সব কিছু গোলমাল হয়ে যায় কেন? বলিউড সুপারস্টারকে বার বার কোনও এক দুষ্কৃতীর সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা হয় কেন?
শাহরুখ খান নামেই কোনও এক জঙ্গি বা কট্টরবাদী আমেরিকার কালো তালিকায় রয়েছে। কোনও মার্কিন বিমানবন্দরে পা রাখলেই সে গ্রেফতার হবে। কিন্তু, বলিউড সুপারস্টার এবং সেই দুষ্কৃতী যে সম্পূর্ণ আলাদা দু’জন মানুষ, তা কি এত বছরেও বুঝে ওঠা গেল না? কোনও কম পরিচিত ব্যক্তিত্বের ক্ষেত্রে এই ভুল হতে পারে। না চেনার কারণে কোনও ব্যক্তির নামধামের সঙ্গে কালো তালিকাভুক্ত জঙ্গির নামধামের মিল পেয়ে অভিবাসন কর্মী বিভ্রান্ত হতে পারেন। কিন্তু, শাহরুখের মতো খ্যাতির চূড়ায় বসে থাকা মানুষের ক্ষেত্রেও বার বার ভুলক্রমে এই ঘটনা ঘটছে, এমনটা মানা একটু শক্ত। শাহরুখ আমেরিকার বিমানবন্দরে আগেও একাধিক বার এই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। তা নিয়ে প্রবল হইচই-ও হয়েছে। মার্কিন কূটনীতিকরা এ বারের মতো আগের দু’বারও দুঃখপ্রকাশ করেছেন। এমন ঘটনা আর ঘটবে না বলে কথা দিয়েছেন। তবু, ঘটল।
অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ ভাবে একই দিনে আর এক পশ্চিমী দেশ আমজাদ আলি খানকে ভিসা দেওয়া নিয়ে সমস্য তৈরি করল। আমজাদ আলি খানের মতো বিশ্ববন্দিত শিল্পীর ভিসা দেওয়া নিয়ে ব্রিটেন কী ভাবে এমন জটিলতা তৈরি করতে পারে, তাও মাথায় ঢোকে না।
এই পরিস্থিতিটাই বোধহয় সেই পটভূমি, যে পটভূমিতে ‘মাই নাম ইজ খান’-এর মতো ছবি তৈরি করতে হয় এবং সে ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র বলতে বাধ্য হন, ‘‘মাই নেম ইজ খান অ্যান্ড আই অ্যাম নট এ টেররিস্ট।’’
বার বার এই ঘটনা, বার বার ভুল বোঝাবুঝির দোহাই— বেশ বিরক্তিকর। আমেরিকা-সহ সব পশ্চিমী দেশকেই আরও সতর্ক হতে হবে, সংবেদনশীল হতে হবে।