National News

শিক্ষা আর শিল্পে কি হিংসা বাড়াচ্ছে বেহাল অর্থনীতি?

ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস বুরো (এনসিআরবি)-র, ২০১৮ সালের তথ্য বলছে, শিল্প ক্ষেত্রে ও ছাত্রদের আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষ, দু’টিই ক্রমশ বাড়ছে গোটা দেশে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২০ ০২:১০
Share:

প্রতীকী ছবি।

দেশে শিল্প ক্ষেত্রে ঝিমুনি নড়িয়ে দিয়েছে অর্থনীতির ভিতকে। অন্য দিকে গত কয়েক বছর ধরে ছাত্র সমাজের আন্দোলন অস্বস্তি বাড়িয়ে তুলেছে শাসক শিবিরের। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস বুরো (এনসিআরবি)-র, ২০১৮ সালের তথ্য বলছে, শিল্প ক্ষেত্রে ও ছাত্রদের আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষ, দু’টিই ক্রমশ বাড়ছে গোটা দেশে। উল্টো দিকে কমেছে রাজনৈতিক ও জাতিগত সংঘর্ষের সংখ্যা। ভাবনার বিষয়, বৃদ্ধি পেয়েছে জল নিয়ে হাঙ্গামার ঘটনা। ২০১৭ সালের চেয়ে যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে ২০১৮ সালে। যার মধ্যে কেবল নরেন্দ্র মোদী রাজ্য গুজরাতেই ১৮ জন ব্যক্তির খুনের কারণ হল জল নিয়ে হওয়া মনোমালিন্য।

Advertisement

তলানিতে দেশের অর্থনীতি। কারখানার উৎপাদন কমে যাওয়া, গাড়ি শিল্পে মন্দার কারণে চলতি বছরে আর্থিক বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশে আটকে থাকতে চলেছে। ত্রুটিপূর্ণ জিএসটি পদ্ধতি, আবাসন নিয়ন্ত্রণ আইন চাপিয়ে দেওয়া, তাড়াহুড়ো করে নোট বাতিলের মতো সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়েছে দেশীয় অর্থনীতিতে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। চাকরি হারিয়েছেন বহু মানুষ। বন্ধ হয়ে গিয়েছে বহু কারখানা। শিল্প ক্ষেত্রে বিশেষত গাড়ি ও আবাসান শিল্পে ছাঁটাইয়ের শিকার বহু মানুষ।

যার প্রভাব পড়েছে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতে। কাজ হারানোর ক্ষোভে সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও সরকারের বিরুদ্ধে পথে নামতে শুরু করেছেন মানুষ। জড়িয়ে পড়ছেন পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে। এনসিআরবি-র খতিয়ান বলছে, তিন বছরে বৃদ্ধি পেয়েছে শিল্প ক্ষেত্রে সংঘর্ষ। এমন সংঘর্ষের সংখ্যা ২০১৬-তে ছিল ১৬৮। ২০১৭-তে হয় ১৭৮। ২০১৮ সেটাই প্রায় আড়াই গুণ বেড়ে হয়েছে ৪৪০। শিল্প ক্ষেত্রে সংঘর্ষের প্রশ্নে এক নম্বরে তামিলনাড়ু (২০৮)। এর পরে যথাক্রমে ওড়িশা (৭৫), কর্নাটক (৪৭) ও হরিয়ানা (৩২)। তথ্য দেয়নি পশ্চিমবঙ্গ।

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘সুটবুটের বাজেট’, কটাক্ষ রাহুলের

সিটুর সাধারণ সম্পাদক তপন সেনের প্রশ্ন, ‘‘শিল্প ক্ষেত্রে আন্দোলন যদি অন্যায় হয়, কারখানা বন্ধ করে দেওয়াটা অন্যায় নয়? শ্রমিকদের আন্দোলনকে দাঙ্গা হিসাবে চিহ্নিত করাটা মোদী সরকারের বিকৃত মানসিকতার পরিচয়। এটা ঠিক শিল্প ক্ষেত্রে আন্দোলন বাড়ছে। কারণ ছাঁটাইও বাড়ছে। গাড়ি শিল্পে পাঁচ দিনের জায়গায় তিন দিন করে কারখানা চালু রাখা হচ্ছে। উপার্জন হারাচ্ছেন শ্রমিকেরা। শ্রমিকদের ওই আন্দোলনকে অপরাধ হিসাবে চিহ্নিত করাটাই একটা অপরাধ।’’

পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ছাত্র বিক্ষোভও। জেএনইউয়ে কানহাইয়া কুমারদের আন্দোলন থেকে শুরু করে হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে রোহিত ভেমুলার মৃত্যুতে বিক্ষোভ— মোদী সরকারের নীতির বিরুদ্ধে দফায় দফায় পথে নেমেছেন ছাত্ররা। হিসেব বলছে, ২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে ছাত্র বিক্ষোভের সংখ্যাটা উর্ধ্বমুখী।

দ্বিগুণ হয়েছে জল নিয়ে ঝামেলার ঘটনা। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, আগামী দিনে পানীয় জলের অপ্রতুলতাই হয়ে উঠতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ। ভূগর্ভস্থ জল অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ও অনিয়ন্ত্রিত ভাবে তুলে নেওয়ার প্রভাব পড়েছে ভারতেও। এ দেশে ২০১৭ সালে যেখানে ৪৩২টি জল নিয়ে ঝামেলার ঘটনা ঘটেছিল। ২০১৮-তে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৩৮টিতে। তালিকায় শীর্ষে রয়েছে বিহার (২৮৮)। পশ্চিমবঙ্গে ২০১৮ সালে জল নিয়ে দু’টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। জল নিয়ে বিরোধে গোটা দেশে খুন হয়েছেন ৯১ জন ব্যক্তি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement