ফাইল চিত্র। পিটিআই।
যে ভাবে কালো ধোঁয়াশা আর দূষণের জালে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে পড়ছে দিল্লি তা নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন পরিবেশবিদরা। তাঁদের মতে এ রকম পরিস্থিতি যদি চলতে থাকে তা হলে ১৯৫২ সালে লন্ডনের মতো পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে। আজ থেকে ৬৪ বছর আগে লন্ডনে এ রকমই ভয়ানক দূষণের কারণে ৪ হাজার লোকের মৃত্যু হয়েছিল। পরিবেশবিদরা তাই সতর্ক করেছেন, এখনই যদি এই দূষণ রোখার কোনও ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, আরও একটা ইংল্যান্ড দেখতে হবে ভারতবাসীকে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাতাসে সালফার-ডাই অক্সাইডের মাত্রা কিছুটা কমলেও অন্যান্য দূষক পদার্থের মাত্রা কিন্তু একই রয়েছে। রবিবার বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ প্রতি কিউবিক সেন্টিমিটারে ৬০০ মাইক্রোগ্রামে পৌঁছে গিয়েছিল। যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মাত্রার ৬০ গুণ বেশি। কিন্তু সরকারের পরিবেশ সংক্রান্ত নিয়ম অনুযায়ী যা ১০ গুণ বেশি।
সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট (সিএসই)-এর অনুমিত্র রায়চৌধুরী জানান, লন্ডনে বাতাসে সালফার-ডাই অক্সাইডের পরিমাণ অত্যধিক মাত্রায় বেড়ে গিয়েছিল। বাতাসে পার্টিকুলেট ম্যাটার (পিএম) ছিল ৫০০ মাইক্রোগ্রাম প্রতি কিউবিক মিটারে। তিনি বলেন, “দিল্লির বাতাসে সালফার-ডাই অক্সাইডের মাত্রা অতটা না থাকলেও, অন্য বিষাক্ত গ্যাসের মাত্রা কিন্তু যথেষ্টই রয়েছে। দূষণের মাত্রা যদি এ রকম হারে বাড়তে থাকে তা হলে অচিরেই মারা পড়বে মানুষ।” সিএসই-র রিপোর্ট বলছে, প্রতি বছর দিল্লিতে দূষণের কারণে প্রচুর মানুষের মৃত্যু হয়।
রবিবার বাতাসে দূষণের মাত্রা এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে বাধ্য হয়ে সরকারকে রাজ্যের স্কুলগুলিকে বুধবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিতে হয়েছে। পাঁচ দিনের জন্য নির্মাণকার্য সংক্রান্ত প্রকল্পগুলি বন্ধ করতে বলা হয়েছে। সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বদরপুর বিদ্যুত কেন্দ্র। পরিবেশবিদরা রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। কিন্তু সেই সঙ্গে প্রশ্ন উঠছে, এত কিছু করেও কি দূষণ ঠেকানো সম্ভব? এরই মধ্যে দূষণ নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনীতি। দিল্লিকে শ্বাসরোধ করার জন্য পার্শ্ববর্তী রাজ্য পঞ্জাব, হরিয়ানাকে দায়ী করেছেন। সেই সঙ্গে কেন্দ্রকেও এই ঘটনার জন্য কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে ছাড়েননি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলির জন্যই যে দিল্লির এই অবস্থা, কেজরীর এই দাবিতে কিন্তু সায় দেয়নি কেন্দ্র। তাদের বক্তব্য, দূষণের জন্য ৮০ শতাংশ দায়ী দিল্লিই। কেন্দ্রীয় পরিবহণ মন্ত্রী অনিল মাধব দাভে সংবাদ সংস্থাকে জানান, ইসরোর উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে দূষণের জন্য ২০ শতাংশ দায়ী পাশের রাজ্যগুলি।
আরও খবর...
দিল্লি কী ভাবে ‘গ্যাস চেম্বার’ হয়ে উঠল? শুনানি সুপ্রিম কোর্টে