প্রতীকী ছবি
পুণ্যার্থীদের ব্রত পালনে, বিশেষ করে ব্রত উদ্যাপনে সঙ্গী হতে চাইছে রেল, আরও নির্দিষ্ট করে বললে ইন্ডিয়ান রেলওয়ে কেটারিং অ্যান্ড টুরিজ়ম কর্পোরেশন (আইআরসিটিসি)। চৈত্র নবরাত্রি উপলক্ষে ব্রত রাখেন অসংখ্য মানুষ। সেই ব্রত পালনের সময়ে তাঁদের অনেকেই ট্রেনে সফর করেন এবং ব্রত সাঙ্গ হলে উপবাস ভাঙেন ট্রেনেই। দূরপাল্লার এক্সপ্রেস ট্রেনে সফরকালে ব্রত উপলক্ষে উপবাস পালন করছেন, এমন যাত্রীদের জন্য ২ এপ্রিল থেকে বিশেষ নবরাত্রি থালি চালু করছে আইআরসিটিসি।
রাজধানী, দুরন্ত, শতাব্দী-সহ সারা দেশে প্রায় ৫০০ এক্সপ্রেস ট্রেনে এই সুবিধা মিলবে বলে রেল সূত্রের খবর। রেলকর্তারা জানান, আজ, সোমবার আইআরসিটিসি-র ওয়েবসাইটে টিকিটের সঙ্গে ওই থালির বুকিং শুরু হচ্ছে। যে-সব যাত্রী আগে বুক করতে পারবেন না, তাঁরাও ই-কেটারিং ব্যবস্থায় ওই বিশেষ থালির বরাত দিতে পারবেন। আইআরসিটিসি সূত্রের খবর, ওই থালিতে পেয়াঁজ, রসুন বর্জন করা হবে। রান্নায় সাধারণ নুনের বদলে ব্যবহার করা হবে বিট নুন। ওই থালিতে থাকবে লস্যি, ফলের রস, পুরি, তরকারি, ক্ষীর, ছানার মিষ্টি, শুকনো ফল এবং চা। বিশেষ নবরাত্রি থালির দাম হবে ১২৫ থেকে ২০০ টাকা।
রেল সূত্রের খবর, অতিমারিতে ট্রেনে প্রায় দু’বছর রান্না করা খাবার দেওয়া বন্ধ ছিল। আইআরসিটিসি-র কাছ থেকে কেটারিংয়ের লাইসেন্স পাওয়া বিভিন্ন সংস্থার আর্থিক স্বাস্থ্যও রুগ্ণ। এই অবস্থায় কেটারিং ব্যবস্থাকে চাঙ্গা করতে বিভিন্ন অভিনব উদ্যোগ চলছে বলে রেলের দাবি। নবরাত্রি পালন করা যাত্রীরা অতীতে ট্রেন সফরে খাবার নিয়ে সমস্যায় পড়তেন। বছরে চার বার নবরাত্রি পালন করা হয়। তার মধ্যে শারদীয়া নবরাত্রি এবং চৈত্র নবরাত্রি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত উত্তর ভারতে অনেকেই নবরাত্রি উপলক্ষে ব্রত পালন করেন। যাত্রীদের সেই চাহিদা মেটাতেই আইআরসিটিসি-র এই উদ্যোগ।
রেলের আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, নিরামিষ খাবার পরিবেশনের বিষয়টি ইদানীং রেলে বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে। রেলে পরিবেশিত নিরামিষ খাবারের মান উন্নয়নে সাত্ত্বিক কাউন্সিলের সঙ্গে চুক্তিও করেছে আইআরসিটিসি। নয়াদিল্লি-বারাণসী এবং নয়াদিল্লি-বৈষ্ণোদেবী বন্দে ভারত, শ্রী রামায়ণ এক্সপ্রেসেও নিরামিষ খাবার পরিবেশিত হয়। রেল সূত্রের খবর, তীর্থক্ষেত্র-কেন্দ্রিক রুটগুলিতে যাত্রীদের চাহিদার সঙ্গে তাল রেখে নিরামিষ খাবার পরিবেশনের চেষ্টা করা হচ্ছে।
এর আগে বিমানে এই ধরনের সুবিধা দেওয়া হত যাত্রীদের। এয়ার ইন্ডিয়া বহু বার যাত্রীদের এই ধরনের ব্রত পালনের কথা ভেবে বা পুজোয় বাঙালির রসনা তৃপ্ত করতে বিশেষ মেনু বা খাদ্য-তালিকার ব্যবস্থা করেছে। এখনও পুজোর সময় যাত্রীদের রসনাতৃপ্তির ব্যবস্থা করা হয়। যে-সব শহরের বাসিন্দারা মূলত নিরামিষাশী, তাঁদের কথা ভেবে প্রধানত নিরামিষ খাবার দেওয়া হয় সেই সমস্ত শহর থেকে ছাড়া উড়ানে। কিন্তু রেলে এর আগে কখনওই এ ভাবে বিশেষ ব্রতের কথা ভেবে আলাদা থালির আয়োজন আগে হয়নি বলে জানাচ্ছেন রেলকর্তারা।