অনলাইনে টিকিট কাটলে যাত্রীদের জন্য বিমার সুযোগ করে দেয় ইন্ডিয়ান রেলওয়ে কেটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজম কর্পোরেশন (আইআরসিটিসি)। ইনদওর-পটনা রাজেন্দ্রনগর এক্সপ্রেসের যাত্রীরাও ব্যতিক্রম ছিলেন না। কিন্তু এত বড় একটা দুর্ঘটনার পরে জানা গেল ৬৯৫ জন যাত্রীর মধ্যে মাত্র ১২৮ জন যাত্রীই সেই বিমার জন্য আলাদা করে খরচ করেছিলেন। টাকা নয়। অঙ্কটা পয়সায়। যাত্রী পিছু মাত্র ৯২ পয়সার বিনিময়ে লক্ষ লক্ষ টাকার বিমা পাওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে আইআরসিটিসি। গত তিন মাস ধরে শুরু হয়েছে এই প্রক্রিয়া। অথচ এ বিষয়ে স্রেফ ধারণা না থাকায় সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হলেন রাজেন্দ্রনগর এক্সপ্রেসের যাত্রীরা। সূত্রের খবর, সব দেখে শুনে এ বার প্রত্যেক অনলাইনে টিকিট কাটা যাত্রীর জন্য বিমার কথা ভাবছে রেল।
গত কাল ভোররাতে কানপুরের কাছে লাইনচ্যুত হয়েছিল পটনাগামী রাজেন্দ্রনগর এক্সপ্রেসের ১৪টি বগি। রেলের একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই এই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ১৪৬ জনের। আইআরসিটিসি-র এক কর্তাই পরে জানালেন, বিমা করালে মৃতদের পরিবার তো বটেই, আহতরাও মোটা টাকা ক্ষতিপূরণ পেতে পারতেন।
আইআরসিটিসি-র একটি সূত্র জানিয়েছে, ১২৮ যাত্রীর মধ্যে দুর্ঘটনার সময় ট্রেনে ছিলেন ৭৮ জন। বাকিদের পরের স্টেশনগুলিতে ওঠার কথা ছিল। এই ৭৮ জন যাত্রীর মধ্যে যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের পরিবার পিছু ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেবে আইআরসিটিসি। পুরোপুরি বা আংশিক প্রতিবন্ধীরাও পাবেন যথাক্রমে ১০ লাখ ও সাড়ে সাত লাখ করে। আহতরা চিকিৎসার জন্য পাবেন দু’লক্ষ টাকা। কারও দেহ এক জায়গা থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য আবার বরাদ্দ রয়েছে আরও ১০ হাজার টাকা। ঘটনার খবর পাওয়ার পরে তিনটি বিমা সংস্থার সদস্য ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশের দুর্ঘটনাস্থল পৌঁছে গিয়েছেন। মূলত এই তিন সংস্থাই বিমার টাকা দিয়ে থাকে।
তিন মাস আগে পরীক্ষামূলক ভাবে প্রকল্পটি চালু করেছিল আইআরসিটিসি। প্রকল্পটি জনপ্রিয় করার জন্য ই-টিকিট পিছু মাত্র এক পয়সার বিনিময়ে বিমা করানোর কথাও সম্প্রতি ভেবেছে সংস্থাটি। তবে রেলের একটি সূত্র ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, ই-টিকিটের সব যাত্রীর জন্যই এখন বিমা বাধ্যতামূলক করার কথা ভাবা হচ্ছে। তবে সে ক্ষেত্রে যদি কেউ চান, তা হলে তিনি বিমার সুযোগ থেকে নিজেকে সরিয়ে আনতে পারেন।