ইরানের বিদেশমন্ত্রী জাভাদ জারিফ
মার্কিন চাপে ইরান থেকে তেল আমদানি ভারত আপাতত বন্ধ রেখেছে ঠিকই। কিন্তু সে দেশের চাবাহার বন্দর নিয়ে সহযোগিতার প্রশ্নে তেহরানের উপর ভারতের কৌশলগত নির্ভরতা ক্রমশ বাড়ছে। তার মধ্যেই কিন্তু দিল্লির সাম্প্রতিক হিংসার পরিপ্রেক্ষিতে তৈরি হল দ্বিপাক্ষিক জট। বিষয়টি এমন পর্যায়ে গেল যে, নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়ে প্রতিবাদ করতে বাধ্য হল সাউথ ব্লক।
গত কাল রাতে ইরানের বিদেশমন্ত্রী জাভাদ জারিফ দিল্লিতে হিংসার কড়া নিন্দা করেছিলেন। ভারতের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে সুর মিলিয়ে গোটা বিষয়টিকে, ‘মুসলমানদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত হিংসা’ বলে বর্ণনা করেছিলেন জারিফ। টুইট করে তিনি জানান, ‘ভারতের মুসলমান সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে এই হিংসার নিন্দা করছে ইরান। ভারত-ইরান সম্পর্ক শতাব্দী প্রাচীন। সমস্ত ভারতীয়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং হিংসা বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার জন্য আর্জি জানানো হচ্ছে। আইনের শাসন জারি করে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের জন্যও আবেদন জানানো হচ্ছে।’
এই মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পরেই ইরানের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে বলা হয়েছে, ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে এই মন্তব্যের কড়া প্রতিবাদ জানাচ্ছে দিল্লি। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্রের বক্তব্য, ‘‘দিল্লির সাম্প্রতিক ঘটনায় ইরানের বিদেশমন্ত্রীর মন্তব্য পক্ষপাতদুষ্ট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বৈষম্যমূলক। ইরানের মতো দেশ থেকে এই ধরনের বিবৃতি আমরা আশা করি না। আজ এই বার্তাই সে দেশের রাষ্ট্রদূতকে দিয়ে গোটা বিষয়টির তীব্র নিন্দা করা হয়েছে।’’
ইরানের পাশাপাশি নয়াদিল্লির অস্বস্তি বাড়িয়ে মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও কর্টেজ এই ‘সাম্প্রদায়িক হিংসা’র নিন্দা করেছেন। তিনি টুইট করে বলেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে অস্ত্র চুক্তি করছেন, তখন তাঁর (মোদী) প্রশাসন সে দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিশ্চিহ্ন করছে। এই সাম্প্রদায়িক হিংসাকে আমরা সমর্থন করতে পারি না।’’