উৎসব: পটনায় গণনাট্যের মঞ্চে রবিবার। —নিজস্ব চিত্র
এ যেন ফের ফ্যাসিবিরোধী লেখক-শিল্পী সঙ্ঘ গড়ার ডাক!
‘গেরুয়া সন্ত্রাসে’র সঙ্গে লড়াইয়ে গণনাট্য সঙ্ঘের নেতৃত্বে শিল্পী-সাহিত্যিকদের বৃহত্তর মঞ্চ গড়ার ডাক দিচ্ছেন শাবানা আজমি। গুজরাতের বিধায়ক জিগ্নেশ মেবাণী প্রস্তাব করছেন সেই মঞ্চের নাম। গণনাট্য সঙ্ঘের ৭৫ বছর পূর্তির সম্মেলন এ ভাবেই সরাসরি ঢুকে পড়ল রাজনীতির পরিমণ্ডলে।
অনুষ্ঠান জুড়ে ঘুরে ফিরে এসেছে ‘অ্যান্টি ন্যাশনাল’, ‘আরবান নকশাল’-এর প্রসঙ্গ। উঠেছে কালবুর্গীদের নাম। এমন সময়ে গণনাট্য সঙ্ঘের নেতৃত্বে আরও বড় মঞ্চ তৈরির প্রয়োজনের কথা বলেছেন শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। ৫ দিনের অনুষ্ঠানে এ নিয়ে আলোচনার পরে অধিবেশন-শেষে সিদ্ধান্ত হবে।
ভোটের আবহে এ কি বামপন্থী ভোটপ্রচার? সরাসরি ভোটের কথা মানতে চাইছেন না শাবানা। তবে তাঁর মতে, ‘‘ফ্যাসিবাদ আটকাতে হলে বামপন্থীদের একত্রিত হতেই হবে। ময়দানে নামতে হবে শিল্পী- সাহিত্যিকদের।’’ একটি স্লোগানও বেঁধেছেন তিনি— ‘কমানেওয়ালা খায়েগা/ লুঠনেওয়ালা জায়েগা/ নয়া জমানা আয়েগা’। স্লোগানকে স্বাগত জানিয়ে জিগ্নেশ নতুন মঞ্চের নাম প্রস্তাব করেছেন—‘রঙ্গিন’। এই দলিত নেতার বক্তব্য, ‘‘দেশ জুড়ে গেরুয়া সন্ত্রাস যে ভাবে বাড়ছে, তাতে কে লাল, কে নীল দেখার সময় নেই। বামপন্থী, অম্বেডকরপন্থী-সহ সমস্ত প্রগতিশীল মানুষকে তৈরি করতে হবে রঙ্গিন জোট।’’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ব্যাখ্যা, বাম এবং অম্বেডকরপন্থীদের মধ্যে জোট তৈরির প্রস্তাব এত সরাসরি আগে আসেনি। যে ভাবে সারা দেশের প্রতিনিধিরা পটনায় এসে বক্তৃতা দিচ্ছেন, তা দেখে খানিক স্তম্ভিত রাজ্যের বিজেপি মহলও। রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তাও স্বীকার করে নিয়েছেন, এত বড় অনুষ্ঠান হবে, তাঁরা আঁচ করতে পারেননি।
রবিবারও পটনা শহরের সমস্ত প্রেক্ষাগৃহ কার্যত গণনাট্যের দখলে। দিনভর নাটক, গান, প্রদর্শনী এবং আলোচনাসভা। যাতে যোগ দিয়েছেন পরিচালক সৈয়দ মির্জা থেকে শুরু করে শশী কপূরের মেয়ে সঞ্জনা কপূর, নাট্যকার রণবীর সিংহ থেকে কানচা ইলহাইয়ার মতো অম্বেডকরপন্থী অধ্যাপক— সকলেই।