এডিজি-সিআইডি জ্ঞানবন্ত সিংহ। ফাইল চিত্র।
বেআইনি কয়লা পাচার কাণ্ডে আজ ইডি দিল্লিতে রাজ্যের আইপিএস অফিসার জ্ঞানবন্ত সিংহকে জিজ্ঞাসাবাদ করল। জ্ঞানবন্ত এখন এডিজি-সিআইডি পদে রয়েছেন। এক সময় তিনি এডিজি(আইন-শৃঙ্খলা) পদে ছিলেন। বিধাননগরের কমিশনারও ছিলেন।
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরে(ইডি) সূত্রের খবর, রাজ্যের এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) হিসেবে জ্ঞানবন্ত বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমানের মতো জেলায় বেআইনি কয়লা পাচারের কাজকারবারের কথা জানতেন কি না, জানা থাকলে তিনি কী পদক্ষেপ করেছিলেন, সে বিষয়েই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। দিল্লিতে ইডি-র সদর দফতরে প্রায় ছয় ঘণ্টা ধরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। গত মে মাসে তাঁকে সিবিআই-ও কলকাতায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। তারপরে ইডি এই আইপিএস-কে দিল্লিতে ডেকে পাঠায়। ইডি সূত্রের খবর, তিন বার সমন পাঠানোর পরে জ্ঞানবন্ত তদন্তকারীদের মুখোমুখি হয়েছেন।
সিবিআই ও ইডি কর্তাদের সন্দেহ, পশ্চিমবঙ্গে কয়লা ও গরু পাচারে রাজ্য পুলিশের একাংশ অফিসারদের যোগসাজশ রয়েছে। তাঁদের দাবি, বেআইনি কয়লা ও গরু পাচারের টাকা নিচুতলার পুলিশ অফিসারদের একাংশের মাধ্যমেই ‘প্রভাবশালীদের’ কাছে পৌঁছেছে। রাজ্য পুলিশের উপরমহলের কর্তারা সে বিষয়ে কতটা ওয়াকিবহাল ছিলেন, তা বুঝতে দু’ডজন পুলিশ অফিসারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। যাঁদের মধ্যে আইপিএস অফিসাররাও রয়েছেন। এই সূত্র ধরেই ইডি বাঁকুড়া সদর থানার আইসি অশোক মিশ্রকে গ্রেফতার করেছিল। কয়লা কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজির থেকে অশোক বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়ে ‘প্রভাবশালীদের’ হাতে তুলে দিতেন বলে অভিযোগ। জামিনে মুক্ত অশোক সম্প্রতি দিল্লি হাই কোর্টে মামলা করে অভিযোগ জানিয়েছিলেন, তাঁকে দিল্লির রাউজ় অ্যাভিনিউ কোর্টের বিশেষ আদালতের বিচারক সমন পাঠিয়েছেন। অথচ ওই আদালতের এক্তিয়ারের মধ্যেই বিষয়টি পড়ে না। সিবিআই ও ইডি বেআইনি কয়লা পাচার কাণ্ডের তদন্তে যে মামলা দায়ের করেছে, তাতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, কয়লা পাচারের যে অভিযোগ, তার সবটাই পশ্চিমবঙ্গে হয়েছে। তা হলে দিল্লির কোর্ট কী ভাবে সমন পাঠাচ্ছে? বিচারপতি যোগেশ খন্না এ বিষয়ে ইডি-র বক্তব্য জানতে চেয়ে নোটিস জারি করেছেন। ২২ অক্টোবর ফের শুনানি হবে।
পশ্চিমবঙ্গের মামলায় কেন তাঁদের দিল্লিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হচ্ছে, তা নিয়ে অভিষেক ও রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ও দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। ইডি-র বক্তব্য ছিল, আর্থিক নয়ছয়ের অপরাধের কোনও ভৌগোলিক গণ্ডি থাকে না। আগামী সোমবার এই মামলার শুনানি হবে। ইডি-ও পাল্টা দিল্লি হাই কোর্টে মামলা করে অভিযোগ জানিয়েছিল, অভিষেক তাঁদের তদন্তে সমস্যা তৈরি করতে চাইছেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে কলকাতা পুলিশ কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তকারীদের অফিসাদের জেরার জন্য ডেকে পাঠাচ্ছে। আগামী সপ্তাহে এই মামলারও শুনানি হবে বলে হাই কোর্ট জানিয়েছে।