নীতি আয়োগের সদস্য তথা জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ)-এর আচার্য বিজয় কুমার সরস্বত। ছবি: সংগৃহীত।
শুধুমাত্র ‘নোংরা ফিল্ম’ দেখার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয় কাশ্মীরে। উপত্যকায় নেট পরিষেবা বন্ধ রাখার বিষয়ে যুক্তি দিতে গিয়ে এমনই বেঁফাস মন্তব্য নীতি আয়োগের এক সদস্যের। তবে এ মন্তব্যের জেরে বিতর্কে পড়তে পারেন বুঝেই সঙ্গে সঙ্গে তাঁর দাবি, জম্মু ও কাশ্মীরে ইন্টারনেট বন্ধ রাখায় কোনও প্রভাব পড়েনি উপত্যকার অর্থনীতিতে।
শনিবার ওই মন্তব্য করেছেন নীতি আয়োগের সদস্য তথা জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ)-এর আচার্য বিজয় কুমার সরস্বত। গুজরাতের গাঁধীনগরে ধীরুভাই অম্বানী ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনলজি (ডিএআইআইসিটি)-র বার্ষিক সমাবর্তনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানিয়েছেন, কাশ্মীরে নেট পরিষেবা থাকা বা না থাকায় উপত্যকায় কোনও তফাৎ হয় না। তাঁর কথায়, ‘‘ওখানে ইন্টারনেট না থাকলে কী এমন পার্থক্য হবে। আর তা ছাড়া, ইন্টারনেটে ওখানে কী দেখা হয়? ওখানে কি ই-টেলিং (ইন্টারনেটের মাধ্যমে জিনিসপত্র বেচা) হচ্ছে! নোংরা ফিল্ম দেখা ছাড়া ওখানে আর কিছু করা হয়কি?’’ এতেই থেমে থাকেননি তিনি। সরস্বতের মতে, দিল্লির মতোই বিক্ষোভ করার জন্যই কাশ্মীরে যেতে চান রাজনীতিবিদরা। তিনি বলেছেন, ‘‘এই যত সব রাজনীতিকরা রয়েছেন, তাঁরা কিসের জন্য কাশ্মীরে যেতে চান? দিল্লির রাস্তায় যেমন আন্দোলন চলছে, সেটাই কাশ্মীরের রাস্তায় তুলে আনতে চান। আর সোশ্যাল মিডিয়াও রয়েছে তাকে আগুনের মতো ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য।’’
এই বেফাঁস মন্তব্যের জন্য বিতর্ক এড়াতে সরস্বত দাবি করেছেন, উপত্যকায় মাস পাঁচেক ইন্টারনেট বন্ধ থাকলেও তাতে সেখানকার অর্থনীতির উপর কোনও রকম প্রভাব পড়েনি। নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা করে তিনি বলেছেন, ‘‘আমি এটাই বলতে চাই যে কাশ্মীরে ইন্টারনেট না থাকলেও তাতে সেখানকার অর্থনীতিতে কোনও প্রভাব পড়েনি।’’
আরও পড়ুন: সিএএ: শীতের রাতে প্রতিবাদীদের কম্বল কেড়ে নিল যোগীর পুলিশ
আরও পড়ুন: সিএএ চালু করতে বাধ্য রাজ্য: সিব্বল
গত ৫ অগস্ট সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপের পর থেকেই উপত্যকায় কড়াকড়ি শুরু হয়। আধাসেনার মোতায়েন করে ১৪৪ ধারা জারি করা, স্কুল-কলেজ-সরকারি অফিস বন্ধ রাখা হয়। সেই সঙ্গে কোপ পড়ে ল্যান্ডলাইন, মোবাইল এবং ইন্টারনেট পরিষেবাতেও। জম্মুতে সপ্তাহখানেকের মধ্যে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে কড়াকড়া কমানো হলেও কাশ্মীরে তা দীর্ঘ দিন ধরে বজায় থাকে। গত পাঁচ মাসে ধাপে ধাপে তা শিথিল করা হয়েছে। পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর গত কালই উপত্যকায় প্রেপেইড মোবাইল পরিষেবা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেখানকার প্রশাসন। এই আবহে সরস্বতের মন্তব্য, ‘‘কাশ্মীরে ইন্টারনেট বন্ধ। কিন্তু, গুজরাতে কি বন্ধ রয়েছে? আসলে কাশ্মীরে ইন্টারনেট বন্ধ রাখার কারণটা অন্য। যদি ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করে উপত্যকার অগ্রগতি করতে হয় তবে আমরা জানি ওখানে এমন কিছু পক্ষ রয়েছে যাঁরা এই পরিষেবার অপব্যবহার করে সেখানকার আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে।’’