—ফাইল চিত্র।
অসবর্ণে বিয়ে এ দেশের সমাজ ব্যবস্থায় জাত-পাতের ভেদাভেদ ও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা কমাতে পারে বলে মন্তব্য করল শীর্ষ আদালত।
এক তরুণীর বাবা-মায়ের দায়ের করা এফআইআর বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের দুই সদস্যের বেঞ্চ জানিয়েছে, মাঝে মধ্যেই দেখা যাচ্ছে, পরিবারের অমতে বিয়ে করতে গিয়ে কোনও ছেলে বা মেয়েকে বাধার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে দেশের আদালতই যুব সমাজের আসল সঙ্গী হয়ে উঠতে পারে।
ঘটনা কর্নাটকের বেলাগাভি জেলার। উচ্চশিক্ষিত এক তরুণী তাঁর বাবা-মায়ের অমতে ‘নিম্ন বর্ণের’ এক তরুণকে বিয়ে করেছেন। ওই যুবকও উচ্চশিক্ষিত। ধর্মে দু’জনেই হিন্দু। যুবকের বাড়ির লোক এই বিয়েতে মত দিলেও মেয়ে ও জামাইয়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন তরুণীর বাবা-মা। বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কল এবং বিচারপতি হৃষীকেশ রায়ের বেঞ্চ সেই এফআইআর খারিজ করে বলেছে, ‘এখনকার ছেলেমেয়েরা পুরনো রীতি ভেঙে নিজেদের পছন্দের মানুষকে বিয়ে করছেন। সম্ভবত এ ভাবেই সমাজ থেকে জাতিভেদ ও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার মতো বিষয় দূর হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রেই দেশের যুব সম্প্রদায়কে বাড়ির বড়দের বাধার সামনে পড়তে হয়। আর এ ক্ষেত্রে আদালতই তাঁদের সহায় হয়ে উঠতে পারে’।
সেই সঙ্গে ২০১৭ সালে শীর্ষ আদালতের এক রায়ের কথা তুলে ধরে বিচারপতিরা জানিয়েছেন, সেই সময়েই আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছিল পছন্দের পাত্র-পাত্রীকে বিয়ে করার সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে সাবালক যুবক-যুবতীর।
এই নির্দিষ্ট ঘটনার তদন্তকারী অফিসারের (আইও) ভূমিকায় অসন্তোষ জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। আদালত বলেছে, ‘মেয়েটি বিয়ের শংসাপত্রের কথা উল্লেখ করে স্পষ্ট জানিয়েছিলেন তিনি ওই যুবককে বিয়ে করেছেন। থানায় গেলে তাঁদের প্রাণ সংশয় রয়েছে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। তা সত্ত্বেও বয়ান রেকর্ডের জন্য তদন্তকারী অফিসার তাঁদের থানায় ডেকে উচিত কাজ করেননি। দম্পতির বাড়ি গিয়ে তিনি বয়ান নিতে পারতেন। তদন্তকারী অফিসার যা করেছেন তার সঙ্গে আদালত সহমত নয়। ওই অফিসারের কাউন্সেলিং করা উচিত’।
একই সঙ্গে এই ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে তদন্তকারী অফিসারদের কী ভূমিকা হওয়া উচিত, সে নিয়ে নির্দেশ জারির কথা বলেছে আদালত। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, এ ক্ষেত্রে পুলিশ আধিকারিকদের প্রশিক্ষণ হওয়া উচিত।