নিজেদের রাজস্বের কথা মাথায় রেখে অধিকাংশ রাজ্য চায় পণ্য-পরিষেবা করের (জিএসটি) হার বাঁধা হোক ১৮ শতাংশের উপরে। কিন্তু শিল্পমহলের একটি বড় অংশের দাবি, সিংহভাগ জিনিসপত্তরের উপর তা বসুক ১৮% হারেই। আগামী ১ এপ্রিল থেকে মোদী সরকার জিএসটি চালু করতে আগ্রহী ঠিকই। কিন্তু তার আগে ওই করের হার ঠিক করা থেকে শুরু করে একগুচ্ছ সমস্যার দ্রুত সমাধান প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিভিন্ন রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা।
মঙ্গলবার দিল্লিতে জিএসটি নিয়ে রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটির বৈঠকের ফাঁকে তার চেয়ারম্যান তথা পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বলেন, ‘‘আমরা এ বিষয়ে কাজ করছি। কিন্তু সংসদে জিএসটি আইন পাশ হতে হবে।’’
সম্প্রতি জিএসটি-র সংবিধান সংশোধনী বিল সংসদে পাশ হয়েছে। তারপরে এই প্রথম বৈঠকে বসলেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা। নিজেদের মধ্যে আলোচনার পাশাপাশি মত জানতে চাইলেন শিল্পমহল ও বণিকসভাগুলির। অধিকাংশ রাজ্যই চায়, জিএসটি-র হার ১৮ শতাংশের উপরে থাকুক। এক রাজ্যের অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘‘জিএসটি-র হার ১৮ থেকে ২২%-এর মধ্যে থাকবে।’’ সেক্ষেত্রেও সাধারণ মানুষের উপর করের বোঝা কমবে বলেই তাঁর দাবি।
জিএসটি নিয়ে এ দিন নিজেদের দাবিদাওয়া জানিয়েছে শিল্পমহলও। যদিও রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা তাঁদের কাছে আশ্বাস চেয়েছেন যে, করের বোঝা কমলে জিনিসপত্রের দাম কমাবে শিল্পও। যাতে সাধারণ মানুষের কাছে তার সুবিধা পৌঁছয়। বণিকসভাগুলি জানিয়েছে, তারা করের হার কম রাখার পক্ষে। কিন্তু অর্থমন্ত্রীরা বলেন, যুক্তমূল্য কর (ভ্যাট) চালুর পরেও দেখা গিয়েছিল যে, করের হার কমা সত্ত্বেও জিনিসপত্রের দাম কমায়নি শিল্প সংস্থাগুলি।
বণিকসভা সিআইআইয়ের দাবি, সিংহভাগ পণ্যের উপর ১৮% হারেই কর বসুক। তাতে কেন্দ্র ও রাজ্যের রাজস্ব একই থাকবে। বণিকসভা ফিকি-র দাবি, যে সব পণ্য উৎপাদন শুল্ক ও ভ্যাট থেকে ছাড় পায়, সেগুলিকে ছাড় দেওয়া হোক জিএসটি থেকেও। ই-কমার্স সংস্থাগুলির আবার দাবি, তাদের জিএসটির আওতার বাইরে রাখা হোক। যদিও রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা তাতে রাজি বলে মনে হয়নি।
অর্থ মন্ত্রক জানে, ১ এপ্রিল থেকে জিএসটি চালু করতে সব রাজ্যের সহযোগিতা প্রয়োজন। সেই কারণেই জিএসটির সংবিধান সংশোধনী বিলে তাদের সিলমোহর চাইছে কেন্দ্র। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভার সংক্ষিপ্ত অধিবেশনে যে ভাবে শেষ মুহূর্তে সেই প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়েছে, তা নিয়ে চিন্তা ছড়িয়েছে অর্থ মন্ত্রকে। এ দিন অবশ্য দিল্লিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এক কর্তার দাবি, দু’দিনের অধিবেশনে বিষয়টি ছিলই না। মূলত রাজ্যের নাম বদলের জন্যই তা ডাকা হয়েছিল।