সারা দেশের মধ্যে সব চেয়ে পরিচ্ছন্ন শহরের শিরোপা পেল ইনদওর।
সারা দেশের মধ্যে সব চেয়ে পরিচ্ছন্ন শহরের শিরোপা পেল ইনদওর। এই নিয়ে টানা পাঁচ বার কেন্দ্রীয় সরকারের বার্ষিক ‘স্বচ্ছ সর্বেক্ষণ’ পুরস্কারে প্রথম স্থান পেল মধ্যপ্রদেশের শহরটি। পরিচ্ছন্নতার নিরিখে গত বারের মতোই রাজ্যগুলির মধ্যে প্রথম স্থানে ফের ছত্তীসগঢ়। আর সবার শেষে, ২৩তম স্থানে পশ্চিমবঙ্গ। কোন মানদণ্ডের বিচারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্য সবার শেষে স্থান পেল, তা স্পষ্ট নয় বলে পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক সূত্রে জানানো হয়েছে।
পরিচ্ছন্নতার বিচারে রাজ্যগুলির যে ক্রমতালিকা কেন্দ্র প্রকাশ করেছে, তার সর্বশেষ অর্থাৎ ২৩তম স্থানে যুগ্ম ভাবে রয়েছে মেঘালয় ও পশ্চিমবঙ্গ। তালিকায় দেখা যাচ্ছে, ‘রাজ্যের তরফে পুরসভাগুলিকে সাহায্য’— এই একটি মাত্র কলামেই পশ্চিমবঙ্গকে ২২৫ নম্বর দেওয়া হয়েছে। আর সমস্ত বিভাগে রাজ্যের নম্বর শূন্য। রাজ্য প্রশাসনের কাছেও এই র্যাঙ্কিংয়ের ব্যাখ্যা নেই। প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য, দিল্লির দূষণ নিয়ে ইদানীং সারা দেশ সরগরম। অথচ তালিকায় দিল্লির কোনও উল্লেখ নেই। রাজ্য প্রশাসন সূত্রের বক্তব্য, কোন মাপকাঠিতে পশ্চিমবঙ্গকে সর্বশেষ স্থানে রাখা হল, তা বোধগম্য নয়।
স্বচ্ছ ভারত অভিযানের অঙ্গ হিসেবে ২০১৬ সাল থেকে দেশব্যাপী এই বার্ষিক সমীক্ষা চালাচ্ছে কেন্দ্র। বিভিন্ন ছোট ও বড় শহরগুলিতে পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্যবিধি, নিকাশির অবস্থা খতিয়ে দেখে এই সমীক্ষা করে কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রক। ২০২১ সালে ৪৩২০টি শহরকে নিয়ে এই সমীক্ষা হয়েছিল। তাই এ বারের সমীক্ষাকে পরিচ্ছন্নতা সংক্রান্ত বিশ্বের বৃহত্তম সমীক্ষা বলেছে কেন্দ্র। ৪.২ কোটিরও বেশি নাগরিকের মতামত সংগ্রহ করে, ২৮ দিনের মধ্যে এ বারের সমীক্ষাটি করা হয়েছে। প্রায় পাঁচ লক্ষ নথি এবং ২৮ লক্ষের বেশি জিয়ো-ট্যাগড ছবি সংগ্রহ করে সব কিছুর ভিত্তিতে শহর ও রাজ্যগুলির ‘র্যাঙ্ক’ দেওয়া হয়েছে। আজ রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। অনুষ্ঠানে ছিলেন কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী।
সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন শহরের তালিকায় ইনদওরের পরে রয়েছে সুরাত এবং বিজয়ওয়াড়া। তৃতীয় থেকে এ বার চতুর্থ স্থানে নেমে গিয়েছে নবি মুম্বই। গত বারের মতো এ বারও গঙ্গাতীরের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন শহরের পুরস্কার জিতেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর লোকসভা কেন্দ্র বারাণসী। এই বিভাগে দ্বিতীয় ও তৃতীয় যথাক্রমে বিহারের মুঙ্গের ও পটনা। জঞ্জালমুক্ত শহর হিসেবে ইনদওর, সুরাত, নয়াদিল্লি পুর পরিষদ, নবি মুম্বই, নয়ডা, বিজয়ওয়াড়া, ছত্তীসগঢ়ের অম্বিকাপুর এবং গুজরাতের পাটণ পাঁচতারা শহরের তকমা পেয়েছে। তিনতারা শহরের তালিকায় রয়েছে ১৪৩টি শহর।
একশোরও বেশি পুরসভা রয়েছে যে সমস্ত রাজ্যে, ছত্তীসগঢ় তাদের মধ্যেই পরিচ্ছন্নতার নিরিখে সেরা হয়েছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় যথাক্রমে মহারাষ্ট্র ও মধ্যপ্রদেশ। একশোর কম পুরসভা-সমন্বিত রাজ্যগুলির মধ্যে ঝাড়খণ্ড, হরিয়ানা ও গোয়া প্রথম তিনটি স্থানে রয়েছে। এক লক্ষের বেশি জনসংখ্যার শহর, এক লক্ষের কম জনসংখ্যার শহর, মাঝারি মাপের শহর, জনতার মতামতের ভিত্তিতে সেরা ছোট শহর, সাফাই মিত্র সুরক্ষা চ্যালেঞ্জ— ইত্যাদি নানা বিভাগে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে এ দিন। সমস্ত বিভাগ মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি পুরস্কার জিতেছে মহারাষ্ট্র (৯২), তার পরে ছত্তীসগঢ় (৬৭)। রাষ্ট্রপতি তাঁর বক্তৃতায় বলেছেন, এ বারের স্বচ্ছ সর্বেক্ষণ পুরস্কার বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এই বছর স্বাধীনতার ‘অমৃত মহোৎসব’ পালন করছে দেশ। কোভিড অতিমারি সত্ত্বেও সাফাই মিত্র এবং নিকাশি কর্মীদের নিরন্তর পরিষেবার প্রশংসা করেছেন তিনি।