কার্বন নিঃসরণের হার ভারতে অনেকটাই কম। ছবি সংগৃহীত।
ভারতের মাথাপিছু কার্বন নিঃসরণের হার বিশ্বের গড়ের তুলনায় অনেকটাই নীচে। তবে কার্বন নিঃসরণে উল্লেখযোগ্য অন্য দেশগুলিতে সেই হার গড়ের থেকে অনেকটাই বেশি। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে এ কথা। উষ্ণায়ন নিয়ন্ত্রণে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষ আশার আলো দেখা যায়নি প্রতিবেদনটিতে।
আগামী মাসে মিশরে রাষ্ট্রপুঞ্জের আবহাওয়া পরিবর্তন সংক্রান্ত সম্মেলন (সিওপি২৭) হতে চলেছে। তার আগে ইউনাইটেড নেশনস এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম (এইএনইপি) ‘এমিশনস গ্যাপ রিপোর্ট ২০২২: দ্য ক্লোজিং উইন্ডো’ নামে ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ২০২০ সালে টন কার্বন ডাইঅক্সাইড ইকুইভ্যালেন্ট (টিসিও২ই) গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণের গড় বিশ্বে যেখানে ৬.৩, ভারতে সেটা ২.৪।
বাতাসে যত কার্বন ডাই অক্সাইড মেশে, অধিকাংশই আসে চিন, ব্রিটেন, ভারত ও রাশিয়া— এই চারটি দেশ থেকে। এ ছাড়া উল্লেখযোগ্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দেশগুলি। এই শতকে বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধি দেড় থেকে দু’ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখতে কার্বন নিঃসরণ কমানোর ব্যাপারে দেশগুলি একমত হয়েছিল ২০১৫-এ প্যারিস সম্মেলনে। কিন্তু রিপোর্টে প্রকাশ, বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি সেই লক্ষ্যের থেকে বহু দূরে।
কোন গ্যাস আবহাওয়াকে কতটা উত্তপ্ত করে, কার্বন ডাইঅক্সাইডের নিরিখে একটি এককে তা হিসাব করার পদ্ধতি টন কার্বন ডাইঅক্সাইড ইকুইভ্যালেন্ট (টিসিও২ই)। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে পৃথিবীতে মাথাপিছু গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণের হার ছিল ৬.৩ টিসিও২ই। গড়ের অনেকটাই উপরে আমেরিকা (১৪ টিসিও২ই), রাশিয়া (১৩ টিসিও২ই), চিন (৯.৭ টিসিও২ই)। এমনকী ব্রাজিল এবং ইন্দোনেশিয়াও (৭.৫ টিসিও২ই)। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিতে হার ৭.২ টিসিও২ই। অনুন্নত দেশগুলি থেকে মাথাপিছু ২.৩ টিসিও২ই গ্রিন হাউজ গ্যাস নির্গত হয়। ভারতে সেখানে ২.৪ টিসিও২ই। যা জি২০-র সদস্য দেশগুলির গড়ের প্রায় অর্ধেক। সৌদি আরবে হার জি২০-র গড়ের দ্বিগুণের বেশি।
রিপোর্টে দাবি, বিশ্বের উষ্ণতাবৃদ্ধি দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ধরে রাখতে ২০৩০ সালের মধ্যে নিঃসরণ অন্তত ৪৫ শতাংশ এবং ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখতে হলে ৩০ শতাংশ কমাতে হবে।