অজিত ডোভাল। ফাইল ছবি।
সহমতের ভিত্তিতে প্যাংগং হ্রদের উত্তর এবং দক্ষিণ অংশ থেকে সেনা সরার পর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার অন্যান্য সংঘাতবিন্দু নিয়ে আজ আলোচনায় বসলেন ভারত এবং চিনের সেনা কমান্ডাররা। ভবিষ্যতে এই দীর্ঘ ৩৪৮৮ কিলোমিটার এলাকায় স্থিতাবস্থা বহাল রাখার প্রশ্নে কৌশলগত সহমত তৈরির লক্ষ্যে শীঘ্রই আলোচনায় বসতে চলেছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-ও। কূটনৈতিক সূত্রে এ খবর জানা গিয়েছে।
পূর্ব লাদাখে সংঘাতের পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে কূটনৈতিক বা সামরিক আলোচনার পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা স্তরে এই আলোচনা শুরু করা হচ্ছে। কোনও দেশই যেন অদূর ভবিষ্যতে সীমান্ত টপকে সেনা অনুপ্রবেশ না ঘটায়, তার জন্য বেশ কিছু নতুন মেকানিজম নিয়ে কথা হতে পারে। গত জুনেও ডোভাল আর ওয়াং ই-র মধ্যে আলোচনা হয়েছিল।
এক সরকারি কর্তার মতে, চিনের তরফে ফের আগ্রাসন দেখা গেলে অবশ্যই ভারত প্রত্যুত্তর দেবে। কিন্তু প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংক্রান্ত যে সব মতবিরোধ রয়েছে, তার নিষ্পত্তি করা এবং সীমান্তে ইতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি করার জন্য সাউথ ব্লক ধারাবাহিক ভাবে বিভিন্ন স্তরে বেজিং-এর সঙ্গে আলোচনায় রাজি। আজ সেনা কমান্ডার পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে দেপসাং সমতল এবং গোগরা-হট স্প্রিং অঞ্চলে স্থিতাবস্থা বজায় রাখা নিয়ে। পাশাপাশি আলোচনা হয়েছে, দেমচকের সিএনএন এলাকা (চারদিং-নিঙ্গগুলা-নাল্লাহ) নিয়ে। এই অঞ্চল ভারতের স্থায়ী মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানাচ্ছে প্রতিরক্ষা সূত্র। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আজকের এই বৈঠক হয়েছে চুশুল সেক্টরে নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে মলডোতে।
তবে দেপসাংয়ে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন হেলমেট টপ এবং ইয়েলো বাম্পের মতো এলাকাকে চুক্তির আওতায় না এনে আগেভাগে শুধু প্যাংগং থেকে কেন সেনা সরাতে রাজি হল ভারত, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। কারণ, ১৯৬২ সালের যুদ্ধের পর থেকে পারস্পরিক সম্মতিতেই হেলমেট টপ এবং ইয়েলো বাম্প অনধিকৃত জায়গা বলে চিহ্নিত ছিল। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের যুক্তি, দেপসাং পুরনো সমস্যা। তাই আলাদা ভাবেই তা মেটাতে হবে।
গলওয়ান সংঘর্ষে ৫ চিনা জওয়ানের প্রাণহানির কথা অবশেষে গতকাল স্বীকার করেছে বেজিং। সে দিনের হাতাহাতির একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করা হয়েছে সে দেশের সরকারি সংবাদমাধ্যমে। মনে করা হচ্ছে, অভ্যন্তরীণ ক্ষোভকে প্রশমিত করতেই এই ভিডিয়ো প্রকাশ করা হয়েছে। চিনা সরকারি সংবাদমাধ্যমের তরফে ভিডিয়োটি টুইটারে আপলোড করে লেখা হয়েছে, ‘গত জুনে গলওয়ান উপত্যকার ভিডিয়ো। এটা দেখাচ্ছে কী ভাবে ভারতীয় সীমান্তবাহিনী চিনের দিকে অনুপ্রবেশ করছে।’