ভারতীয় বায়ুসেনার প্রতিষ্ঠা দিবসে গাজ়িয়াবাদের হিন্ডন সেনা-ঘাঁটিতে কুচকওয়াজ। শুক্রবার। পিটিআই
লাদাখ সীমান্তে নিঃশ্বাস ফেলছে চিন, কাশ্মীর সীমান্তে পাকিস্তান। ভারতের সীমান্ত পরিস্থিতি যে কার্যত খুবই স্পর্শকাতর তা ৮৯তম বায়ুসেনা দিবসে স্বীকার করে নিলেন বায়ুসেনা প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল বিবেকরাম চৌধরি। তাঁর দাবি, ‘‘সীমান্তে চ্যালেঞ্জ থাকলেও দেশবাসীকে আশ্বাস দিতে পারি বিদেশি শক্তিকে কোনও ভাবেই সীমান্ত পেরোতে দেব না।’’
সদ্য বায়ুসেনা প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। আজ দিল্লি সংলগ্ন গাজ়িয়াবাদের হিন্ডন বায়ুসেনা ঘাঁটিতে বায়ুসেনা দিবসে চৌধরি স্বীকার করে নেন, বর্তমানে সীমান্ত পরিস্থিতি যথেষ্ট স্পর্শকাতর। তিনি বলেন, ‘‘আমি ভীষণ ভাবে বুঝতে পারছি যে সময়ে আমি দায়িত্ব নিয়েছি তা দেশের সীমান্ত নিরাপত্তার প্রশ্নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। কিন্তু আমি বলতে পারি কোনও বিদেশি শক্তিকে সীমান্ত পার হতে দেব না।’’ গত বছর লাদাখের গালোয়ান উপত্যকায় সীমান্ত সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল ভারতীয় ও চিনা সেনা। স্থল সীমান্তে সেনা বাড়ানোর পাশাপাশি যুদ্ধের আশঙ্কায় ফরোয়ার্ড বেসে যুদ্ধবিমান মোতায়েন করে দু’দেশই। গত বছরের জুন-জুলাই মাসে বেশ কয়েক বার চিনের যুদ্ধবিমানের ভারতের আকাশসীমায় ঢুকে পড়ার অভিযোগ ওঠে। পাল্টা জবাব দিতে তৎপর হয় ভারতীয় বায়ুসেনা। আজ সেই ঘটনার উল্লেখ করে বায়ুসেনা প্রধান বলেন, ‘‘লাদাখ সীমান্তে প্রতিবেশী দেশকে আমরা যে তৎপরতার সঙ্গে জবাব দিয়েছে তা প্রমাণ করে ভারতীয় বায়ুসেনা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।’’ আগামী দিনে ভারতীয় বায়ুসেনা সব ধরনের চ্যালেঞ্জের সঙ্গে মোকাবিলা করতে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান বিবেকরাম। তিনি বলেন, ‘‘প্রথাগত স্থলে, জলে ও আকাশে যুদ্ধের পাশাপাশি লড়াইয়ের নতুন-নতুন দিক খুলে যাওয়ায় সামরিক অভিযানের পদ্ধতি আগের থেকে পাল্টে গিয়েছে। যদিও সেই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সব ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করতে প্রস্তুত ভারতীয় বায়ুসেনা।’’
আজ বায়ুসেনা দিবসে ৪৭ নম্বর স্কোয়াড্রন, ১১৬ নম্বর হেলিকপ্টার ইউনিট ও ২২৫৫ নম্বর স্কোয়াড্রনকে পুরস্কৃত করেন চৌধরি। এর মধ্যে ৪৭ নম্বর স্কোয়াড্রন গত বছর লাদাখে সীমান্তরক্ষার কাছে উল্লেখজনক সাফল্যের পাশাপাশি ২০১৯ সালে বালাকোট অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। ১১৬ নম্বর হেলিকপ্টার ইউনিট গত বছরের জুন মাসে লাদাখে ভারতীয় ও চিনা সেনা যখন সীমান্তে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সেই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আকাশপথে দেশরক্ষায় কাজে উল্লেখজনক ভূমিকা নেয়। বায়ুসেনা জানিয়েছে, প্রতিকূল আবহাওয়া সত্ত্বেও লাদাখের মতো উচ্চতায় গোলাবারুদ, সেনা পৌঁছনোর কাজে অভূতপূর্ব দক্ষতা দেখায় ওই হেলিকপ্টার ইউনিট। ২২২৫ নম্বর স্কোয়াড্রনকে মোতায়েন করা হয়েছিল লাদাখ সীমান্তে চিনা বিমানের সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য। যা সাফল্যের সঙ্গে করায় আজ তাদের পুরস্কৃত করা হয়।