ফাইল চিত্র।
অতিমারির দীর্ঘকালীন প্রকোপ অন্য সব কিছুর মতো থাবা বসিয়েছে রেলের পণ্য পরিবহণেও। করোনা প্রশমনের সঙ্গে সঙ্গে সেই খরা কাটিয়ে চলতি বছরে পণ্য পরিবহণে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে রেল। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তারা ১২,৭৮০ লক্ষ টন পণ্য বহন করেছে। এই আর্থিক বছরে অর্থাৎ আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে রেল ১৪,০০০ লক্ষ টন পণ্য পরিবহণের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে।
প্রাক্-করোনা পরিস্থিতিতেই, ২০১৭-১৮ সালে রেলের পণ্য পরিবহণ অনেকটা কমে এসেছিল। ওই অর্থবর্ষে বছরে পণ্য বহনের পরিমাণ ছিল ১১,৬২৬ লক্ষ টন। পরের বছর ২০১৮-১৯ সালে তা বেড়ে হয় ১২,২৫৩ লক্ষ টন। করোনা পরিস্থিতি এবং শিল্পে মন্দার কারণে ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে রেলে পণ্য পরিবহণের পরিমাণ কমে হয় ১২,১২২.২০ লক্ষ টন।
পণ্য পরিবহণ এবং যাত্রী ভাড়া খাতে আয় কমে যাওয়ায় রেল পরিচালনায় খরচের অনুপাত ১০০ টাকার কমে রাখা যাবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয় রেলের বিভিন্ন দফতরে। এর পরেই চাপ লাঘব করতে চলতি অর্থবর্ষের শুরু থেকেই সারা দেশে পণ্য পরিবহণের উপরে ব্যাপক জোর দেওয়া হতে থাকে। কয়লা, আকরিক, রাসায়নিক সার, ইস্পাতের মতো চিরাচরিত পণ্য ছাড়াও গুরুত্ব দেওয়া নতুন পণ্য পরিবহণের উপরে। রেল সূত্রের খবর, বিভিন্ন জ়োনের নিজস্ব বিজ়নেস ডেভেলপমেন্ট ইউনিটের তৎপরতায় চিরাচরিত পণ্যের সঙ্গে আঞ্চলিক স্তরে বিভিন্ন নতুন পণ্যের পরিবহণ বাড়ানো হচ্ছে। তাতেই সুফল মিলছে।
সূত্রের খবর হিসাবে জানা গিয়েছে, দেশে রেলপথে মোট পরিবহণের মাত্র এক শতাংশ ছিল নতুন গাড়ি পরিবহণ। রেল সূত্রের জানা গিয়েছে, চলতি বছরে ওই ক্ষেত্রে বৃদ্ধি ঘটেছে ৩৪ শতাংশ। আরও জানা গিয়েছে দেশের অর্থনীতির চাকা ঘোরাতে রেলকে সারা দেশের মোট পণ্য পরিবহণের অন্তত ৫০ শতাংশ বহন করতে হবে। এখন ওই হার ২৫-২৬ শতাংশের মধ্যে আছে। তবে, এ-ও জানা গিয়েছে যে আগামী দিনে ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডর চালু হলে বহনের হার আরও বাড়বে বলে রেল শিবিরের আশা। এক রেলকর্তা এই বিষয়ে বলেন, ‘‘পণ্য পরিবহণ
আগামী দিনে আরও বাড়াতে না-পারলে রেলের আর্থিক স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করা যাবে না। দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক কাজকর্মের পরিসর বাড়াতেও সেটা অত্যন্ত জরুরি।’’