Indian Railways

আয় বাড়াতে আরও বাতানুকূল শ্রেণির কোচ

বাতানুকূল শ্রেণির মধ্যে এসি থ্রি-টিয়ার কামরার ক্ষেত্রে যাত্রী ভাড়ার খরচ পুষিয়ে কিছুটা অতিরিক্ত আয় হয়। এর কারণ থ্রি-টিয়ার বাতানুকূল কামরায় ৭২টি আসন থাকে।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম 

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মে ২০২৪ ০৮:৫১
Share:

প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

যাত্রিবাহী ট্রেন থেকে আয় বাড়াতে বাতানুকূল শ্রেণির কোচ তৈরির উপর জোর দিচ্ছে রেল।

Advertisement

বছর পাঁচেক আগে ২০১৯-২০ সালে রেলের তিনটি নিজস্ব কোচ উৎপাদন কারখানায় যেখানে মাত্র ১ হাজারের কাছাকাছি বাতানুকূল শ্রেণির কোচ তৈরি হয়েছে, সেখানে ২০২৪-২৫ সালে ওই লক্ষ্যমাত্রা গিয়ে ঠেকেছে আড়াই হাজারের উপরে। তুলনায় পাঁচ বছর আগে যেখানে স্লিপার শ্রেণির কোচ প্রায় ২ হাজারের কাছাকাছি তৈরি হয়েছে সেখানে ওই লক্ষ্যমাত্রা তিনশোর নীচে নেমে এসেছে বলে রেল সূত্রে খবর।

বহু বছর ধরেই রেলের অভ্যন্তরীণ তথ্যে দেখা গিয়েছে যাত্রিবাহী ট্রেনের টিকিটের জন্য রেলকে ভর্তুকি দিতে হয়। সাধারণ ভাবে ট্রেনে সফরের ক্ষেত্রে যাত্রী পিছু খরচের মাত্র ৫৭ টাকা টিকিট বিক্রি থেকে উঠে আসে। সাধারণ শ্রেণিতে এবং শহরতলির ট্রেনের ক্ষেত্রে ওই ভর্তুকির পরিমাণ আরও বেশি হয়। তুলনায় বাতানুকূল শ্রেণিতে ভর্তুকির পরিমাণ কম।

Advertisement

বাতানুকূল শ্রেণির মধ্যে এসি থ্রি-টিয়ার কামরার ক্ষেত্রে যাত্রী ভাড়ার খরচ পুষিয়ে কিছুটা অতিরিক্ত আয় হয়। এর কারণ থ্রি-টিয়ার বাতানুকূল কামরায় ৭২টি আসন থাকে। নতুন ইকনমি শ্রেণিতে ৮২টি আসন থাকছে। যার মধ্যে ৭৯টি বার্থ সংরক্ষিত। এসি টু-টিয়ারে সর্বোচ্চ ৪৬টি আসন থাকে। ওই শ্রেণির কামরা থেকে রেলের সামান্য লোকসান হয়। একই অবস্থা প্রথম শ্রেণির ক্ষেত্রেও। এই পরিস্থিতিতে যাত্রী ভাড়া থেকে আয় বাড়াতে বিভিন্ন ট্রেনে উল্লেখযোগ্য হারে এসি থ্রি-টিয়ার কামরার সংখ্যা বৃদ্ধি করছে রেল। চাহিদার মরশুমে বিশেষ ট্রেনেও অতীতের তুলনায় রুট অনুযায়ী থ্রি-এসি কামরার সংখ্যা বাড়াচ্ছে রেল। ফলে, ওই শ্রেণির কোচের চাহিদা বাড়ছে।

রেল সূত্রে খবর, ২০১৯-২০ সালে রেলের তিনটি কোচ উৎপাদন কারখানা চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি, পঞ্জাবের কপূরথালার রেল কোচ ফ্যাক্টরি এবং উত্তরপ্রদেশের রায়বরেলীর মডার্ন কোচ ফ্যাক্টরি মিলে বাতানুকূল কোচ তৈরি করেছিল ৯৯৭টি। ওই সময়ে সাধারণ স্লিপার শ্রেণির কোচ তৈরি হয়েছিল ১৯২৫ টি। তুলনায় ২০২৪-২৫ সালে বাতানুকূল শ্রেণির কোচ তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হয়েছে ২৫৭১টি। তুলনায় স্লিপার শ্রেণির কোচ তৈরির লক্ষ্যমাত্রা কমে এসেছে ২৭৮-এ।

যাত্রিবাহী ট্রেনের জন্য রেলকে পণ্য পরিবহণ ক্ষেত্র থেকে ভর্তুকি দিতে হয়। ওই ভর্তুকিজনিত ক্ষতির বোঝা কমাতে রেল টিকিটে বয়স্ক যাত্রীদের ছাড় বাতিল করেছে। পাশাপাশি বেশি সংখ্যায় উন্নত পরিষেবা যুক্ত বাতানুকূল ট্রেন চালানোর মাধ্যমে আয় বাড়াতে মরিয়া রেল। নতুন ব্যবস্থায় সাধারণ যাত্রীদের সফরের সুযোগ সংকুচিত হয়ে আসার আশঙ্কা করছেন অনেকেই। বস্তুত, সাধারণ কামরায় সফরের সুযোগ না পেয়ে সংরক্ষিত শ্রেণিতে, বাতানুকূল কামরায় যাত্রীদের ওঠার একাধিক নজির সম্প্রতি চোখে পড়েছে।

তবে, রেল কর্তাদের একাংশের দাবি, কোচ নির্মাণের বিষয়টি বিভিন্ন ধরণের কোচের মেয়াদ ফুরিয়ে আসার সঙ্গেও সম্পর্কযুক্ত। ফলে, সাধারণ শ্রেণির কোচের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে এমন আশঙ্কা ঠিক নয়। আগামী দিনে রেলের পক্ষ থেকে অমৃত ভারত ট্রেনের স্লিপার কোচ উৎপাদনের উপরে জোর দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে। চাহিদা আছে এমন রুটে ওই ট্রেনের সংখ্যা অনেকটাই বাড়বে বলে দাবি রেল কর্তাদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement