রেলের খাবারের দায়িত্বে ফের আইআরসিটিসি

সাত বছর পরে নিজের ঘাড় থেকে ট্রেনে খাবার পরিবেশনের দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলল রেল। রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু আজ নতুন ক্যাটারিং নীতি ঘোষণা করে জানান, খাবার বানানো ও পরিবেশনের সম্পূর্ণ দায়িত্ব তুলে দেওয়া হচ্ছে রেলের অধীনস্থ সংস্থা ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ক্যাটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজম কর্পোরেশন বা আইআরসিটিসি-র হাতে

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৪:৩৯
Share:

সাত বছর পরে নিজের ঘাড় থেকে ট্রেনে খাবার পরিবেশনের দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলল রেল।

Advertisement

রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু আজ নতুন ক্যাটারিং নীতি ঘোষণা করে জানান, খাবার বানানো ও পরিবেশনের সম্পূর্ণ দায়িত্ব তুলে দেওয়া হচ্ছে রেলের অধীনস্থ সংস্থা ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ক্যাটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজম কর্পোরেশন বা আইআরসিটিসি-র হাতে। এর ফলে আগামী দিনে খাবারের মান নিয়ে রেলের কোনও দায় থাকবে না।

বর্তমানে যাত্রীরা চাইলে রেলের খাবারের পাশাপাশি চলন্ত ট্রেন থেকে ফোন করে বা অ্যাপের মাধ্যমে দেশের ৪০৮টি স্টেশনে নামী রেস্তোরাঁর বার্গার-পিৎজা-বিরিয়ানির মতো খাবার কিনতে পারেন। তবে এই বিক্রি যাত্রী সংখ্যার তুলনায় এখনও নগণ্য। তবে এই প্রকল্পে সাফল্য পেতে এ ধরনের স্টেশনের সংখ্যা দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আজ তাই দায়িত্ব পাওয়ার পরে ই-ক্যাটারিং পরিষেবাকে আরও বিস্তৃত করার উপর জোর দিতে চাইছে আইআরসিটিসি।

Advertisement

রাজধানী, দুরন্তের মতো ট্রেনে টিকিটের সঙ্গেই খাবারের দাম ধরা থাকে। কিন্তু দূরপাল্লার অন্য ট্রেনে যাত্রীরা ভরসা করেন রেলের খাবারের উপরে। যার দাম ও মান নিয়ে রোজই কয়েকশো অভিযোগ জমা পড়ে। আইআরসিটিসি চাইছে, এ সব দূরপাল্লার ট্রেনে যে যাত্রীদের সামর্থ্য রয়েছে তারা নামী দোকান বা জনপ্রিয় রেস্তোরাঁ থেকে সরাসরি খাবার কিনে নিক। সংস্থার বক্তব্য, যাত্রীরা সরাসরি খাবার কিনলে তাদের উপর কোনও দায় বর্তাবে না। তবে আইআরসিটিসির এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘যাদের পকেটে পয়সা কম, তাদের জন্য তো আমাদের খাবার রয়েছেই।’’

দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন আইআরসিটিসির হাত থেকে খাবার পরিবেশনের দায়িত্ব কেড়ে নিয়ে রেলের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তবে কার্যত তা চলে যায় বেসরকারি ঠিকাদারদের হাতেই। এখন ক্রমাগত অভিযোগ আসায় সেই দায়িত্ব আর নিজের হাতে রাখতে চাইছে না রেল। মন্ত্রকের কর্তাদের যুক্তি, রেলের কাজ হল ট্রেন চালানো। খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করা নয়। তা ছাড়া, রেলে মূলত খাবার পরিবেশনের জন্যই আইআরসিটিসি-র মতো সংস্থা বানানো হয়েছিল। এ বার তাদের হাতে ফের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হচ্ছে।

অতীতে পরিকাঠামোর অভাবে ট্রেনে খাবার পরিবেশনের দায়িত্ব ঠিকাদারদের হাতে তুলে দিতে বাধ্য হতো আইআরসিটিসি। নতুন নীতিতে ঠিকাদারদের পরিবর্তে খাবার বানানো ও পরিবেশনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কেবলমাত্র আইআরসিটিসিকে। ফলে আগামী দিনে গোটা দেশের অন্তত ৭৫-১০০টি স্টেশনে বেস কিচেন তৈরি করতে চলেছে ওই সংস্থা। সেখান থেকে হাতে গরম খাবার পরিবেশন করা হবে ট্রেনে। তবে খাবার পরিবেশনের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হবে বেসরকারি সংস্থার হাতে। আইআরসিটিসি জানিয়েছে, প্রশিক্ষিত যুবকদের দিয়েই খাবার পরিবেশন করা হবে। যদিও খাবার বানানো ও তার দাম ঠিক করার সম্পূর্ণ দায়িত্ব আইআরসিটিসি-র কাছেই থাকবে।

রেল জানায়, আগামী ৯ মাসের মধ্যে দেশের বড় স্টেশনগুলিতে বেস কিচেন বানিয়ে ফেলতে হবে আইআরসিটিসিকে। তা না পারলে সংস্থা ক্ষতিপূরণ দেবে রেলকে। তবে খাবারের মান নিয়ে কোনও অভিযোগ আসছে কিনা, তা খতিয়ে দেখার দায়িত্বে থাকবে রেল মন্ত্রকই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement