বৃহস্পতিবার সকালে লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারত ও চিনা সেনার মিষ্টি বিনিময়। ছবি: পিটিআই।
বৃহস্পতিবার সকালে ভারত-চিন সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চিনা সেনার সঙ্গে মিষ্টি বিনিময় করল ভারতীয় সেনা। লাদাখের দু’টি এলাকায়, অরুণাচল প্রদেশের দু’টি এলাকায় এবং সিকিমের নাথু লায় চিনা ফৌজের হাতে ‘সৌজন্যের মিষ্টি’ তুলে দিলেন ভারতীয় জওয়ানেরা। ভারত-চিন কূটনৈতিক সম্পর্কে সম্প্রতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। সূত্রের খবর, পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্ররেখার বিতর্কিত অঞ্চলগুলিতে ‘মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা পিছোনো’-র কাজ শেষ করেছে ভারতীয় এবং চিনা সেনা। এই আবহে বৃহস্পতিবার চিনা ফৌজের সঙ্গে ভারতীয় সেনার মিষ্টি বিনিময় যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
২০২০ সালের এপ্রিল থেকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পূর্ব লাদাখের বিভিন্ন এলাকায় এলএসি পেরিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগ উঠেছিল চিনা ফৌজের বিরুদ্ধে। তা নিয়ে দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কেও টানাপড়েন তৈরি হয়। উত্তেজনার আবহে ওই বছরের ১৫ জুন গলওয়ানে ভারতীয় সেনার উপর হামলা চালিয়েছিল চিনা ফৌজ। হামলায় নিহত হয়েছিলেন ২০ জন ভারতীয় সেনা। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতীয় জওয়ানদের পাল্টা হামলায় বেশ কয়েক জন চিনা সেনাও নিহত হয়েছিলেন।
জুন মাসে গলওয়ান উপত্যকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পরে নতুন করে দ্বিপাক্ষিক শান্তি আলোচনা শুরু হয়। ভারত-চিন সীমান্তে স্থিতাবস্থা ফেরানোর জন্য দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালাচ্ছিল দিল্লি। দ্বিপাক্ষিক স্তরে একাধিক বার আলোচনা হয়েছে। গলওয়ান-কাণ্ডের পর থেকেই কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনে দফায় দফায় বৈঠক শুরু হয়েছিল। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে চুশুল-মলডো পয়েন্টে দুই সেনার কোর কমান্ডার স্তরের বৈঠকে এলএসির কিছু এলাকায় ‘মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা পিছোনো’ এবং ‘সেনা সংখ্যা কমানো’-র বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছিল।
কিন্তু প্যাংগং হ্রদ লাগোয়া ফিঙ্গার এরিয়া, ডেপসাং উপত্যকা-সহ বিভিন্ন এলাকা নিয়ে সমস্যা অমীমাংসিতই ছিল। শেষে গত সপ্তাহেই বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানান, পূর্ব লাদাখের এলএসিতে টহলদারির সীমানা নির্ধারণের প্রশ্নে দুই দেশ ঐকমত্যে পৌঁছেছে। পরে চিনা বিদেশ মন্ত্রকও লাদাখ সীমান্তে বিবাদের শান্তিপূর্ণ সমাধানের কথা ঘোষণা করে। তার ভিত্তিতেই ভারত ও চিনের সেনা ২০২০-র মে মাসের আগেকার অবস্থানে পিছিয়ে যেতে শুরু করেছে।