দাউদ ইব্রাহিম, হাফিজ সইদ এবং জাকিউর রহমান লকভি।
মুম্বই বিস্ফোরণের মূল অভিযুক্ত দাউদ ইব্রাহিমের পাকিস্তানে থাকা সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার জন্য ইসলামাবাদের কাছে অনুরোধ জানানোর সিদ্ধান্ত নিল ভারত। দাউদ ছাড়াও ভারত-বিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত হাফিজ সইদ ও জাকিউর রহমান লকভির ক্ষেত্রেও একই অনুরোধ জানানোর কথা ভাবছে নয়াদিল্লি।
কেন্দ্র জানিয়েছে, ওই তিন জনকে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ জঙ্গি হিসাবে চিহ্নিত করে বাধানিষেধ জারি করেছে। তাই রাষ্ট্রপুঞ্জের সদস্য দেশ হিসেবে পাকিস্তানের উচিত সে দেশে ওই তিন জঙ্গির নামে থাকা সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা। যাতে ওই জঙ্গিরা সন্ত্রাসের কাজে ওই তহবিল ব্যবহার না করতে পারে। চিরাচরিত সন্ত্রাস ছাড়াও ভারতের মাটিতে জাল নোট ঢুকিয়ে ভারতের অর্থনীতিকে দুর্বল করার জন্য পাকিস্তান ছায়াযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে বলে ফের ইসলামাবাদের দিকে আঙুল তুলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।
দাউদ কোথায় রয়েছে এ নিয়ে সংসদে হওয়া সাম্প্রতিক বিতর্কের পরেই তাঁর অবস্থান জানতে একটি বিশেষ দল গঠন করে কেন্দ্র। সাধারণত দাউদ করাচিতে ঘাঁটি গেড়ে থাকলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর, তাঁর নতুন ঠিকানা হয়েছে রাওয়ালপিন্ডি। যদিও পাকিস্তান প্রথম থেকেই অস্বীকার করে এসেছে যে দাউদ পাকিস্তানে রয়েছে। কিন্তু ভারতের পক্ষ থেকে দাউদ প্রশ্নে ফের পাকিস্তানের উপর চাপ বাড়ানোর কৌশল নিয়েছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দাবি, গোয়েন্দা তথ্য অনুয়ায়ী দাউদ এখন পাকিস্তানে লুকিয়ে রয়েছেন। এ ছাড়া ২৬/১১ মুম্বই হামলার অন্যতম মাথা হাফিজ সইদ ও লকভি দু’জনেই পাকিস্তানের নাগরিক এবং সে দেশে স্বাধীন ভাবে ঘোরাফেরা করছে। সে দেশের মাটি ব্যবহার করে ভারত-বিরোধী কার্যকলাপ জারি রেখেছে।
তাই কেন্দ্রের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের কাছে সরকারি ভাবে ওই তিন জনের সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার জন্য আবেদন জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ যখন কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে তখন সেই ব্যক্তি বা সংগঠন যে দেশে সক্রিয় রয়েছে সেই দেশকে তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত, অস্ত্র সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা ছাড়াও ওই ব্যক্তির দেশ ছাড়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করতে হয়। পাকিস্তান রাষ্ট্রপুঞ্জের সদস্য দেশ। আর রাষ্ট্রপুঞ্জ ইতিমধ্যেই ওই তিন জনের বিরুদ্ধে ওই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তাই পাকিস্তানের উচিত ওই তিন জঙ্গির সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা এবং গতিবিধির উপর নজরদারি চালানো।’’ তবে ভারত ওই দাবি জানালেও শেষ পর্যন্ত বাস্তবের মাটিতে কতটা কাজ হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে সরকারি স্তরেই।