মাসুদ আজহার
জইশ প্রধান মাসুদ আজহারকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে ফের চিনের সঙ্গে কথা বলবে ভারত। আজ বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ জানান, এ নিয়ে ক্রমাগতই দৌত্য চালিয়ে যাবে দিল্লি।
জইশ প্রধানকে নিষিদ্ধ করতে পঠানকোট হামলার পরে রাষ্ট্রপুঞ্জে আর্জি জানায় ভারত। কিন্তু চিন প্রক্রিয়াগত বিষয় নিয়ে আপত্তি তোলায় সেই চেষ্টা সফল হয়নি। সম্প্রতি সেই আপত্তির মেয়াদ আরও তিন মাস বাড়িয়েছে বেজিং।
বিকাশের বক্তব্য, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জ জইশকে নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু ওই সংগঠনের সব চেয়ে ভয়ঙ্কর জঙ্গিকে নয়। এ এক অদ্ভূত অবস্থা।’’ আজ রাষ্ট্রপুঞ্জেও এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছে ভারত। এমনকী রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের কাজকর্ম নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে দিল্লি।
ভারতে অসংখ্য সন্ত্রাসবাদী কাজের চক্রী মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী হিসেবে তুলে ধরতে রাষ্ট্রপুঞ্জে প্রস্তাব এনেছিল ভারত। কিন্তু চিনের আপত্তিতে সেই প্রয়াস সফল হয়নি। এ দিন রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের সদস্য সৈয়দ আকবরউদ্দিন বিষয়টি নিয়ে প্রবল ক্ষোভ জানান। তাঁর অভিযোগ, যাকে জঙ্গি সংগঠন বলে মনে করে রাষ্ট্রপুঞ্জ, তার নেতাকেই
সন্ত্রাসবাদী হিসেবে তুলে ধরতে কোনও পদক্ষেপ করতে পারল না নিরাপত্তা পরিষদ। ভারতের প্রতিনিধির অভিযোগ, ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের উপর গোটা বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার ভার রয়েছে। অথচ তারা সময়ের দাবি ও প্রয়োজন অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া জানাতে ব্যর্থ হয়েছে। নজিরবিহীন ভাবে নিরাপত্তা পরিষদের কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুললেও ভারত যদিও সরাসরি চিনের কথা তোলেনি।
মাসুদকে সন্ত্রাসবাদী হিসেবে তুলে ধরতে ভারতের সামনে বাধা বেজিং। নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে চিন ভেটো প্রয়োগ করে দিল্লির প্রস্তাব আটকে দিয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদের বাকি ১৪টি সদস্য দেশ যদিও মাসুদকে সন্ত্রাসবাদী চিহ্নিত করতে চেয়েছিল। ভারতের চেষ্টা সফল হলে জইশ প্রধানের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও তার যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা লাগু হতো।
রাষ্ট্রপুঞ্জে চিন যে আপত্তি জানিয়েছে, তার মেয়াদ গত সোমবার শেষ হওয়ার কথা ছিল। এ বিষয়ে বেজিং নতুন বক্তব্য হাজির না করলে সন্ত্রাসবাদী হিসেবে মাসুদকে তুলে ধরার কোনও অসুবিধা হতো না। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তাদের আপত্তির সময়সীমা বাড়িয়ে দেয় বেজিং। চিন সরকারের মুখপাত্র যুক্তি দেন, এর ফলে মাসুদের বিষয়ে আলোচনা করার সুযোগ বাড়বে।
ভারতে সন্ত্রাসবাদী কাজের অন্যতম ষড়যন্ত্রী এ ভাবে ছাড় পেয়ে যাওয়ায় রাষ্ট্রপুঞ্জে ক্ষোভ জানিয়েছে নয়াদিল্লি। আকবরউদ্দিনের মন্তব্য, নিরাপত্তা পরিষদ কোনও রকমে পরিস্থিতি সামাল দিতে এককালীন সিদ্ধান্ত নেওয়ার জায়গায় পরিণত হয়েছে। রাজনৈতিক পঙ্গুত্ব একে গ্রাস করছে।