নরেন্দ্র মোদী (বাঁ দিকে) এবং জাস্টিন ট্রুডো। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
কানাডার মাটিতে সে দেশের খলিস্তানি নেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জরকে খুনের ঘটনার জেরে উত্তেজনার পারদ চড়েছে দ্বিপাক্ষিক কূটনীতিতে। এই আবহে কানাডার নাগরিকদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ বলবতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক। বৃহস্পতিবার বিদেশ মন্ত্রকের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, পরবর্তী বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত কানাডার নাগরিকদের ভিসা দেওয়া স্থগিত রাখা হবে।
কূটনৈতিক মহলের একাংশের মতে, টানাপড়েনের আবহে নরেন্দ্র মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্ত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জটিল করে তুলতে পারে। কানাডার মাটিতে সে দেশের খলিস্তানি নেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জরকে খুনের ঘটনায় ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা ‘র’-এর ‘ভূমিকা’ রয়েছে বলে সোমবার অভিযোগ করেছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ঘটনাচক্রে, ট্রুডোর ওই বিবৃতির পরেই কানাডার এক ভারতীয় এক কূটনীতিককে বহিষ্কার করা হয়। ট্রুডো সরকারের বিদেশমন্ত্রী মেলানি জোলি অভিযোগ করেন, ওই ভারতীয় কূটনীতিক আদতে ‘র’-এর আধিকারিক।
ওই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবার মোদী সরকার কানাডার এক শীর্ষ কূটনীতিককে পাঁচ দিনের মধ্যে দিল্লি ছাড়ার নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি, নিজ্জর খুনের ঘটনায় দায় অস্বীকার করে ভারত। ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় সংহতির বিরোধী শক্তিকে কানাডা মদত দিচ্ছে বলেও বিদেশ মন্ত্রকের তরফে অভিযোগ তোলা হয়। টানাপড়েনের এই আবহেই বুধবার কানা়ডার উপর চাপ বাড়িয়ে কানাডায় বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিক এবং পড়ুয়াদের উদ্দেশে সতর্কবার্তা জারি করে নয়াদিল্লি। কানাডার স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় ভারতীয় নাগরিক এবং পড়ুয়াদের।
চলতি মাসেই স্বাধীন ও সার্বভৌম খলিস্তান রাষ্ট্রের দাবিতে কানাডার খলিস্তানপন্থী শিখ গোষ্ঠী ‘শিখস ফর জাস্টিস’ (এসএফজে) অন্টারিও-সহ কয়েকটি এলাকায় জমায়েত এবং গণভোটের ডাক দিয়েছে। ভারতে নিষিদ্ধ এবং খলিস্তানপন্থী সংগঠন সাম্প্রতিক কালে কানাডার কয়েকটি ভারতীয় দূতাবাসে বিক্ষোভও দেখিয়েছে। বুধবার কানাডায় বসবাসকারী এসএফজে নেতা গুরপতবন্ত সিংহ পান্নুন অবিলম্বে ভারতীয় বংশোদ্ভূত হিন্দুদের কানাডা ছাড়ার জন্য হুমকি দেওয়ায় পরিস্থিতি আরও গুরুতর হয়েছে। ২০১৯ সালে এসএফজে-কে ‘আন’ল’ফুল অ্যাক্টিভিটিজ প্রিভেনশন অ্যাক্ট’ (ইউএপিএ) আইনের আওতায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। সংগঠনের প্রধান গুরুপতবন্তের বিরুদ্ধে ‘রেড কর্নার নোটিস’ জারির জন্য আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের কাছে নয়াদিল্লির তরফে আবেদনও জানানো হয়েছিল। কিন্তু সেই আবেদন ইন্টারপোল খারিজ করে দেয়। এর পরে কানাডা়য় খোলাখুলি ভারত বিরোধী প্রচার চালাচ্ছেন ওই শিখ কট্টরপন্থী নেতা।