সুইস ব্যাঙ্কে কালো টাকা জমানোর নিরীখে ভারতের স্থানে ১২ ধাপ উঠে দাঁড়াল ৭৩-এ। —ফাইল চিত্র
গত এক বছরে সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয়দের জমা টাকা বেড়েছে ৫০ শতাংশ। কয়েকদিন আগে এই তথ্য প্রকাশিত হওয়ার পরই কালো টাকা নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে খড়গহস্ত বিরোধীরা। কেন্দ্র তথা বিজেপির সেই অস্বস্তি এবার আরও বাড়িয়ে দিল সুইস ব্যাঙ্কের সরকারি তথ্য। সুইস ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের তরফে প্রকাশ করা ওই তথ্য বলছে, সুইস ব্যাঙ্কে বিদেশিদের টাকা রাখার নিরিখে ভারতের স্থান ১২ ধাপ উঠে দাঁড়াল ৭৩-এ। তালিকার শীর্ষে রয়েছে ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় স্থানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর পাকিস্তানের স্থান ভারতের এক ধাপ উপরে।
২০১৪-র লোকসভা ভোটে ভারতীয়দের বিদেশে গচ্ছিত কালো টাকা দেশে ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু ক্ষমতায় আসার চার বছর পরও কালো টাকা ফেরানোর জন্য কোনও কড়া পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। তার মধ্যেই সামনে আসে সুইস ব্যাঙ্কে গত এক বছরে ভারতীয়দের জমা টাকার পরিমাণ ৫০ শতাংশ বেড়েছে। এরপরই তেড়েফুঁড়ে ফের আসরে নামে কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি। তাতে কেন্দ্র তথা প্রধানমন্ত্রীর অস্বস্তি বাড়ে। কেন্দ্রের তরফে সাফাই দেওয়ার চেষ্টা হয়, সুইস ব্যাঙ্কে জমা ভারতীয়দের টাকার পুরোটাই কালো টাকা নয়। তবে নিয়ম ভেঙে যাঁরা টাকা রেখেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু তাতেও সেই বিতর্ক থামেনি। তার মধ্যেই সুইস ব্যাঙ্কের নতুন এই তথ্য গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতোই অস্বস্তি বাড়িয়ে দিল কেন্দ্রের।
প্রতি বছরই সুইৎজারল্যান্ডের এই কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক বিদেশিদের টাকা জমার একটি তালিকা প্রকাশ করে। টাকা জমার নিরিখে কোন দেশের স্থান কত, তা ওই তালিকায় তুলে ধরা হয়। সেই তালিকাতেই ২০১৬ সালের ৮৮তম স্থান থেকে ভারত উঠে এসেছে ৭৩তম স্থানে। ২০১৬ সালে ভারতীয়দের জমা টাকা বৃদ্ধির হার ছিল ৪৪ শতাংশ। ২০১৭ সালে সেই বৃদ্ধি যে ৫০ শতাংশ হয়েছে, তা আগেই প্রকাশিত হয়েছে। নতুন এই তথ্য কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিরোধীদের আক্রমণে নয়া অস্ত্র তুলে দিল বলেই মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সমহারে জিএসটির দাবি খারিজ করলেন প্রধানমন্ত্রী
২০১৫ সালে ভারতের স্থান ছিল ৭৫ এবং তার আগের বছর ছিল ৬১। আর সবচেয়ে উপরে ছিল ৩৭তম স্থানে ২০০৪ সালে। এবারের তালিকায় এক নম্বরে রয়েছে ইংল্যান্ড, যাদের মোট জমা জমার পরিমাণ ৪০ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। যা সুইস ব্যাঙ্কে বিদেশিদের জমা টাকার ২৭ শতাংশ। এ বছর ইংল্যান্ডের জমা পড়া টাকার পরিমাণ বেড়েছে ১২ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আমেরিকার মোট জমা টাকার পরিমাণ ১৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। মোট জমার ১১ শতাংশ।
আরও পড়ুন: প্যান-আধার লিঙ্ক করার সময়সীমা বেড়ে পরের বছর ৩১ মার্চ
এই তালিকায় ভারতের উপরে রয়েছে সিঙ্গাপুর, সৌদি আরব, পানামা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ড, ইতালি, বেলজিয়ামের মতো দেশ। মরিশাস, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভ্যাটিকান সিটি, আফগানিস্তান, ভূটানের মতো দেশগুলি রয়েছে ভারতের নিচে।