national news

ফেব্রুয়ারিতে দিনে ৩ লাখ করে সংক্রমণ বাড়বে ভারতে? দাবি গবেষণার

৮৪টি দেশে বিশ্বের জনসংখ্যার ৬০ শতাংশের উপর সমীক্ষা চালিয়ে এই দাবি এমআইটি-র।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২০ ১০:৫১
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

টিকা না বেরলে আগামী ফেব্রুয়ারিতে ভারতে প্রতি দিন প্রায় তিন লক্ষ মানুষ আক্রান্ত হতে পারেন করোনায়। এখনকার পরিস্থিতি না বদলালে বিশ্বে করোনা আক্রান্ত দেশগুলির তালিকায় শীর্ষে পৌঁছে যাবে ভারত। পিছনে ফেলে দেবে আমেরিকা, ব্রাজিল, রাশিয়াকে। পরিস্থিতিটা সবচেয়ে খারাপ জায়গায় পৌঁছবে সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের মধ্যে। করোনা নিয়ে ভারতের জন্য এই উদ্বেগের কথাই শোনাল ম্যাসাচুসেট্‌স ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি)।

Advertisement

৮৪টি দেশে বিশ্বের জনসংখ্যার ৬০ শতাংশের উপর সমীক্ষা চালিয়ে ভারতের পক্ষে রীতিমতো উদ্বেগজনক এই পূর্বাভাস দিয়েছে এমআইটি-র স্লোয়ান স্কুল অফ ম্যানেজমেন্ট। গবেষকদের দাবি, করোনা সংক্রমণে আরও উদ্বেগজনক পরিস্থিতি দেখা দেবে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আমেরিকায়। আগামী ৮ মাসে।

গবেষকদের দাবি, কোনও কার্যকরী টিকা না বেরলে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভারতে করোনায় আক্রান্ত হবেন দৈনিক ২ লক্ষ ৮৭ হাজার মানুষ। আর আগামা মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে গোটা বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছবে ২০ থেকে ৬০ কোটির মধ্যে।

Advertisement

যদিও কলকাতার চিকিৎসক, বিশেষজ্ঞদের একাংশ এমআইটি-র এই সমীক্ষাকে ততটা গুরুত্ব দিতে রাজি হচ্ছেন না। মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অরিন্দম বিশ্বাস বলছেন, ‘‘আমি এমআইটি-র অঙ্ক কষে একটা সংখ্যা বলে দেওয়াকে গুরুত্ব দিতে নারাজ।আমাদের দেশের সরকার প্রয়োজন হলে কিছু ব্যবস্থা নেবেন এই রোগ নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য। তার ফলে, এমআইটি-র হিসাব মিলবে না বলেই আমার বিশ্বাস।আগামী দিনে দেশে কোভিড পরীক্ষাকেন্দ্র অনেক বাড়বে। প্রয়োজনে আরও অনেক কোভিড হাসপাতাল হবে| এই সমীক্ষায় মানুষ অযথা আতঙ্কিত হয়ে পড়বেন।’’

এমআইটি-র স্লোয়ান স্কুল অফ ম্যানেজমেন্টের গবেষকরা এই সমীক্ষা চালাতে গিয়ে দু’টি বিশেষ মডেল ব্যবহার করেছেন। একটি, ‘এসইআইআর (সাসেপ্টেব্‌ল, এক্সপোজ্‌ড, ইনফেকশাস, রিকভার্ড)’। অন্য মডেলটি পুরোপুরি গাণিতিক। কোনও সংক্রামক ব্যাধির সংক্রমণ কতটা হতে পারে, তার আঁচ পেতে যে মডেলটি আকছারই ব্যবহার করে থাকেন এপিডিমিয়োলজিস্টরা।

আরও পড়ুন- দেশে মোট আক্রান্ত সাত লক্ষ ৪২ হাজার, সুস্থ ৬১ শতাংশ​

আরও পড়ুন- বর্ধিত কন্টেনমেন্ট জ়োনে নতুন করে ঘরে বন্দি, কাল বিকেল ৫টা থেকে

কোভিড পরীক্ষা চলছে মুম্বইয়ে। ছবি- রয়টার্স।

এমআইটি-র সমীক্ষা জানিয়েছে, টিকা না বেরলে আগামী ফেব্রুয়ারির শেষাশেষি দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যায় বিশ্বের সব দেশকেই টপকে যাবে ভারত। তার ঠিক পরেই থাকবে আমেরিকা। ওই সময় আমেরিকায় করোনায় দৈনিক আক্রান্ত হবেন ৯৫ হাজার মানুষ। দক্ষিণ আফ্রিকায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা হবে ২১ হাজার। আর ইরানে ১৭ হাজার এবং ইন্দোনেশিয়ায় ১৩ হাজার।

এই পূর্বাভাস করতে গিয়ে গবেষকরা তিনটি সূচকের কথা মাথায় রেখেছিলেন।

প্রথমত, এখন কী হারে কোভিড পরীক্ষা হচ্ছে আর তার ফলাফল কী?

দ্বিতীয়ত, জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে যদি কোভিড পরাক্ষার হার দিনে ০.১ শতাংশ বাড়ে, তা হলে কী হবে?

তৃতীয়ত, কোভিড পরীক্ষার হার যদি এখনকার মতোই থাকে আর যদি এক জন সংক্রমিত সর্ববাধিক আরও ৮ জনকে সংক্রমিত করেন, তা হলে কী হবে?

সমীক্ষা এও জানিয়েছে, যত বেশি সম্ভব কোভিড পরীক্ষা হবে, ততই সংক্রমণ রোখার কাজটা সহজ হবে। পরীক্ষার হার এখনকার মতোই থাকলে বিশ্বের ৮৪টি দেশে আগামী ফেব্রুয়ারির শেষে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হবে সাড়ে ১৫ কোটি। আর কোভিড পরীক্ষার হার যদি দিনে ০.১ শতাংশ বাড়ে, তা হলে ওই ৮৪টি করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আগামী ৮ মাসে বেড়ে হবে ১৩ কোটি ৭০ লক্ষ।

এমআইটি-র এই সমীক্ষা এও জানিয়েছে, করোনা আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যায় গোটা বিশ্বেই গলদ থেকে যাচ্ছে। আক্ষরিক অর্থে, যত জন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন বা মারা যাচ্ছেন, তার সঠিক হিসাব দেওয়া হচ্ছে না।

কোভিড রোগীর পরীক্ষা চলছে মুম্বইয়ে। ছবি- রয়টার্স।

গবেষকরা বলেছেন, ‘‘আমাদের হিসাবমতো এ বছরের ১৮ জুন পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৮ কোটি ৮৫ লক্ষ মানুষ। মৃত্যু হয়েছে ৬ লক্ষ মানুষের। যা সংক্রমণের সরকারি হিসাবের চেয়ে ১১.৮ গুণ বেশি। আর মৃতের সংখ্যার সরকারি হিসাবের চেয়ে বেশি ১.৪৮ গুণ।’’

অথচ, জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১৮ জুন পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৮২ লক্ষ ৪০ হাজার মানুষ। মৃতের সংখ্যা ৪ লক্ষ ৫৪ হাজার ৬১০।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement