নরেন্দ্র মোদী।
লকডাউনের গোড়া থেকেই পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারগুলির চরম দুর্দশা নিয়ে প্রবল সরব রয়েছেন বিরোধী, সমাজকর্মী ও অর্থনীতিবিদেরা। তারই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিন্ রাজ্যে আটকে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের মন ভাল রাখার দাওয়াই দিলেন গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানদের সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠকে। তাঁর বক্তব্য, নিজের গ্রামের লোকজনের সঙ্গে মাঝেমধ্যে ফোনে কথা বলতে পারলে মনের ভার হালকা হবে ভিন্ রাজ্যে আটকে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের।
বৈঠকে বিহারের জহানাবাদের এক পঞ্চায়েত প্রধান অজয় সিংহ যাদবকে মোদী এ দিন বলেন “আপনাদের গ্রামের যাঁরা শহরে আটকে পড়েছেন, তাঁদের সঙ্গে মাঝেমাঝেই ফোনে কথা বলুন। তাঁরা শহরের লোক নন, বাবা-মা বাড়ির কথা তাঁদের মনে পড়বেই। কথা বললে মনের ভার লাঘব হবে অনেকটাই।”
রুজি নেই। ভাড়াবাড়ির ছাদ গিয়েছে। আশ্রয় শিবিরে পরিযায়ী শ্রমিকদের থাকাখাওয়ার বন্দোবস্তেও ঘাটতি বিস্তর। এখানে-ওখানে বিক্ষোভ মাথা চাড়া দিচ্ছে। মুম্বইয়ের বান্দ্রা বা দিল্লি সীমান্তে আনন্দবিহার বাসস্টান্ডে ঘরমুখো লাখো শ্রমিকের ভিড় করোনা ছড়ানোর আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে তুলেছে। মরিয়া হয়ে বাড়ির পথে শত শত মাইল হেঁটে মৃত্যু হচ্ছে অনেকের। এ ভাবেই প্রাণ খুইয়েছে ছত্তীসগঢ়ের বছর বারোর মেয়ে, জামলো মাকদম। এমন সময়ে মন ভাল রাখার এই দাওয়াইকে আদৌ যথেষ্ট মনে করছেন না বিরোধীরা। এই শ্রমিকদের জন্য কী করা হবে, তার নীতি ও রূপরেখা তৈরির দাবি জানিয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূলের মতো বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি।
আরও পড়ুন: প্লাজ়মা চিকিৎসায় সাড়া, দাবি কেজরীর
কংগ্রেসের দাবি, স্বাস্থ্য নিরাপত্তার দিকটি খতিয়ে দেখে এই শ্রমিকদের ঘরে ফিরতে দেওয়া হোক, দেওয়া হোক পথখরচ ও খাবার। নিশ্চিত করা হোক লকডাউনের শেষে কাজ ফিরে পাওয়া। লকডাউন পর্বে যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক। লকডাউনের আগে পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য আরও একটু সময় দেওয়া উচিত ছিল বলেও আওয়াজ উঠছে সর্বত্র। তৃণমূলের বক্তব্য, বাড়ি ফিরতে সাংসদেরা সময় পেলেন দু’দিন। আর পরিযায়ী শ্রমিকেরা মাত্র চার ঘণ্টা!
আরও পড়ুন: বালিকাকে খাটানো হচ্ছিল লঙ্কাখেতে
অবশ্য এর ভিন্ন দিকও রয়েছে। গ্রামে করোনা সে ভাবে থাবা বসায়নি দিল্লি-মুম্বইয়ের মতো শহর থেকে ফিরতে পারেননি বলেই। কেরল বা চণ্ডীগড়ের গ্রামে ছড়িয়েছে পশ্চিম এশিয়া ও কানাডা সংযোগের কারণে। লকডাউনের পরে অর্থনৈতিক কার্যকলাপ শুরু হলে মোদী প্রশাসন গ্রাম সামলাতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।