মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী। পিটিআই
লকডাউন শেষে সারা দেশ এক বারে হুড়মুড়িয়ে রাস্তায় নেমে এলে, তার উদ্দেশ্যই মাটি। তাই কী ভাবে ধাপে ধাপে স্বাভাবিক জীবনের ছন্দে ফেরা যায়, সমস্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের কাছে তা জানতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এ বিষয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনার পরে পরামর্শ দিতে বললেন কেন্দ্রকে।
তবে একুশ দিনের মেয়াদ শেষে লকডাউন ১৪ এপ্রিলই শেষ হবে কি না, সেটা এ দিনও স্পষ্ট করেননি প্রধানমন্ত্রী। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, পরিস্থিতি কোন দিকে গড়াচ্ছে, প্রতি মুহূর্তে সে দিকে নজর রাখছে কেন্দ্র। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে তার ভিত্তিতেই।
কিন্তু লকডাউন উঠে যাওয়ার পরেই সারা দেশের রাস্তায় নেমে আসা যে বিরাট বিপদ ডেকে আনতে পারে, সেই আশঙ্কা এ দিন মুখ্যমন্ত্রীদের জানিয়েছেন মোদী। চেয়েছেন, কী ভাবে ধাপে ধাপে এবং ধীরে ধীরে জনজীবন স্বাভাবিক করা যায়, আলোচনার মাধ্যমে তার নীল-নকশা তৈরি করুক প্রত্যেক রাজ্য। তা জানাক কেন্দ্রকে। যাতে তার পরে সবাই মিলে বসে ঠিক করা যায় যে, ঠিক কেমন হবে লকডাউন থেকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার কৌশল। পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখা ছাড়া যে এই অতিমারিকে হারানো অসম্ভব, এ দিন ফের তা মনে করিয়ে দিয়েছেন মোদী।
তবে কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার কটাক্ষ, “প্রধানমন্ত্রী এখন সমস্ত রাজ্যের সঙ্গে কথা বলার আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তাঁর উচিত ছিল লকডাউনের আগেই সমস্ত মুখ্যমন্ত্রীকে তা জানানো। তাতে সারা দেশে আরও ভাল ভাবে নিয়মকানুন পালিত হত।”
সমস্ত রাজ্য যে ভাবে কেন্দ্রের সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে লকডাউন সফল করার চেষ্টা করছে, বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে তার প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তারিফ করেছেন তাঁদের সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়াকেও। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মতে, কিছু রাজ্যে লকডাউন আরও কড়া ভাবে পালন করা জরুরি। ছাড়ের আওতার বাইরে অনেক দোকানপাট খোলা থাকছে বা জমায়েত দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ। এ নিয়ে সব রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব।
লকডাউনের এই সময়ে করোনার পাহাড়প্রমাণ চ্যালেঞ্জের সঙ্গে যুঝতে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোও যতটা সম্ভব তৈরি রাখার জন্য রাজ্যগুলিকে পরামর্শ দিয়েছেন মোদী। মনে করিয়ে দিয়েছেন, আগামী কয়েক সপ্তাহে সমস্ত সরকারেরই পাখির চোখ যত বেশি সম্ভব করোনার পরীক্ষা, রোগীদের চিহ্নিত করা এবং তাঁদের চিকিৎসার বন্দোবস্ত। সঙ্গে জরুরি যাঁরা রোগীদের সংস্পর্শে এসেছেন, তাঁদের নিভৃতবাসের (কোয়রান্টিন) ব্যবস্থা। দরকার যাবতীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম পর্যাপ্ত পরিমাণে জোগাড়ে মন দেওয়া। সব মিলিয়ে আগামী কয়েক সপ্তাহে চিকিৎসার যে বিপুল পরিকাঠামোর প্রয়োজন পড়তে পারে, রাজ্যগুলিকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় তা যতটা সম্ভব তৈরি রাখার আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
সারা দেশে করোনার পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নিচ্ছে, রাজ্যগুলিকে তা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব।