—প্রতীকী ছবি।
লোকসভা নির্বাচন চলাকালীনই দেশের প্রথম বিমানবাহী রণতরী আইএনএস বিক্রান্তের জন্য ২৬টি রাফাল মেরিন বিমান কেনার জন্য আগামিকাল ফ্রান্সের সঙ্গে বাণিজ্যিক আলোচনা শুরু করতে চলেছে ভারত। এই ধরনের ২৬টি বিমান কেনার জন্য প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার চুক্তি হতে পারে বলে সূত্রের খবর।
গত লোকসভা নির্বাচনে রাফাল চুক্তি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বিদ্ধ করে ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ স্লোগান তুলেছিলেন রাহুল গান্ধী। তবে এ বার আর বিষয়টি নিয়ে কোনও বাড়তি উত্তাপ নেই বিরোধীদের। কিন্তু বিজেপির নির্দিষ্ট রণকৌশল রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
গত জুলাইয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের নেতৃত্বে ভারতের প্রতিরক্ষা অধিগ্রহণ কাউন্সিল ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য ২৬টি রাফাল এম যুদ্ধবিমান কেনার প্রস্তাব অনুমোদন করেছিল। এ দিকে ফ্রান্সও গত ডিসেম্বরে ভারতীয় টেন্ডারে সাড়া দেয়। রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, এই মুহূর্তে ভারত সরকার পরিবর্তনের মুখে দাঁড়িয়ে। দেশে লোকসভা ভোট চলছে, সরকারের মেয়াদ আর এক সপ্তাহ। এত গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক লেনদেনের আলোচনা শুরুর জন্য এটা উপযুক্ত সময় নয়। কিন্তু তবুও যে বিরত হচ্ছে না মোদী সরকার, তার কারণ একাধিক বলেই মনে করা হচ্ছে। প্রথমত, মোদী তাঁর জনসভাগুলিতে আগামী একশো দিনের কাজের পরিকল্পনা করে ফেলেছেন বলে দাবি করছেন। অর্থাৎ এই বার্তা দিতে চাইছেন তিনি যে বিজেপি জিতেই গিয়েছে, ঘোষণা নিমিত্তমাত্র। ফলে তাঁর যে যোজনাগুলি রয়েছে, সেগুলিকেই এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে আগামী মাস থেকেই। সম্ভাব্য রাফাল চুক্তি সম্পাদনাও তার মধ্যে পড়ে।
দ্বিতীয়ত, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ফ্রান্সকে বরাবরই পাশে রাখতে চায় মোদী সরকার। সে দেশের সঙ্গে ভারতের পরমাণু এবং কৌশলগত সম্পর্ক রয়েছে তো বটেই। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যতম শক্তিধর এই সদস্যকে সঙ্গে রাখতে চায় মোদী সরকার। ভারতের গণতান্ত্রিক অধিকার, বহুত্ববাদ, ধর্মীয় সহিষ্ণুতার মতো বিষয়গুলি নিয়ে যখন বারবার প্রশ্ন তুলছে আমেরিকা তার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি রিপোর্টে, তখন ফ্রান্সের মতো শক্তিধর দেশকে পাশে পাওয়াটা জরুরি। নির্বাচনের ফলাফল মোদী সরকার গড়লেও ভোট প্রক্রিয়া নিয়ে যদি আন্তর্জাতিক স্তরে প্রশ্ন ওঠে, ফ্রান্সের মতো দেশকে মোদী পাশে পাবেন বলেই মনে করা হচ্ছে।