প্রতীকী ছবি।
কেটে গিয়েছে ৭০টা বছর। স্বাধীনতার প্রথম সকালটা দেখেছিলেন, এমন মানুষের সংখ্যা আস্তে আস্তে কমে আসছে দেশে। এই প্রথম স্বাধীন ভারতে জন্মানো কেউ প্রধানমন্ত্রী পদে, উপরাষ্ট্রপতি পদেও। কালের নিয়মেই মলিন হয়ে আসছে ১৯৪৭ সালের সেই সকালটার স্মৃতিও। কিন্তু সেই সকালটার এক উজ্জ্বল স্মৃতিচিহ্ন আজও বুক বুক করে আগলে রেখেছে চেন্নাইয়ের ফোর্ট সেন্ট জর্জ। স্বাধীন ভারতের প্রথম ভোরে যে জাতীয় পতাকা উড়েছিল, অপরিসীম যত্নে সেই তেরঙা রক্ষা করছে ব্রিটিশ আমলে তৈরি দুর্গটা।
আর এই নতুনত্বের মাঝেই পুরনো কিছু পাওয়ার ঘটনা। প্রথম স্বাধীনতার সকালে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যে পতাকাগুলি তোলা হয়েছিল, সেগুলি সবই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অবশিষ্ট কেবল মাত্র একটাই। আর সেটি সংরক্ষিত রয়েছে চেন্নাইয়ের ফোর্ট সেন্ট জর্জ সংগ্রহশালায়। ভারতীয় পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণ বা এএসআই-এর তত্ত্বাবধানেই এই পতাকা সংরক্ষণের কাজটি করা হয়েছে।
এতগুলো বছর ধরে এই পতাকাটি সংরক্ষণ করে রাখা মোটেই সহজ ছিল না। যদিও কাজটা বেশ সফলভাবে করতে পেরেছেন ওই সংগ্রহশালার কর্মীরা।
কী ভাবে সংরক্ষিত হয়েছে ওই পতাকাটিকে?
আরও পড়ুন: অক্সিজেন নিয়ে দুর্নীতি চক্রের হদিস গোরক্ষপুরে
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে উপহার ভারতীয় ব্যান্ডের
সংগ্রহশালার এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, হাওয়া ঢুকতে পারে না এমন একটি কাঠের বাক্সে রাখা রয়েছে পতাকাটিকে। বাষ্প নিয়ন্ত্রণ করা এবং আর্দ্রতা শুষে নেওয়ার জন্য ওই বাক্সের মধ্যে ৬টি বাটিতে সিলিকা জেল রাখা আছে। যে শো-কেসে পতাকাটি রয়েছে, সেটির ভিতরের এবং গোটা হলের আলো নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর তাই সেন্সর যুক্ত এলইডি আলো লাগানো হয়েছে হলটিতে। অনুমতি নিয়ে কোনও দর্শনার্থী ঘরে ঢুকলে তবেই ওই ঘরের আলো জ্বালানো হয়।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সংগ্রহশালার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, যে শো-কেসে ওই জাতীয় পতাকা রাখা আছে, সেটিতে সূর্যালোক পড়তে দেওয়া হয় না। ধুলো-ময়লাও জমতে দেওয়া হয় না কোনও ভাবেই।
তিনি আরও জানান, ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট ভোর ৫.০৫ মিনিটে ব্রিটিশ পতাকা ইউনিয়ন জ্যাক নামিয়ে ফোর্ট সেন্ট জর্জের মাথায় তোলা হয়েছিল ১২ ফুট লম্বা ও ৮ ফুট চওড়া ভারতীয় জাতীয় পতাকা। হাজার হাজার মানুষ সেই পতাকা উত্তোলনের সাক্ষী ছিলেন সে দিন। কে এই পতাকা উত্তোলন করেছিলেন, তা অবশ্য লিপিবদ্ধ নেই সংগ্রহশালায়।