লাদাখে ভারতীয় সেনার তৎপরতা। —ফাইইল চিত্র
গালওয়ান উপত্যকায় সেনা মোতায়েন নিয়ে বুধবারই কিছুটা নমনীয় অবস্থান নিয়েছিল চিন। তারই প্রতিধ্বনি নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূতের গলাতেও। বুধবার চিনা রাষ্ট্রদূত সুন ওয়েডং সমঝোতার বার্তা দিয়ে বলেছেন, ভারত-চিন একে অন্যের পক্ষে বিপজ্জনক নয়। দুই দেশের মধ্যে মতবিরোধ কখনওই এমন পর্যায়ে যাবে না যে, তা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে। অন্য দিকে বরাবরের মতোই চিনের পক্ষ নিয়ে ভারত সরকারকে আক্রমণ করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল বা এলএসি) বরাবর আচমকাই চিনা সেনার তৎপরতা বেড়ে যাওয়ার পর থেকেই নয়াদিল্লি-বেজিং সম্পর্ক উত্তপ্ত। দু’দফায় হাতাহাতি সঙ্ঘাতের পর গালওয়ান উপত্যকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বিপুল সেনা মোতায়েন করে চিন। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার পর্যন্তও দু’দেশ কার্যত যুদ্ধের মেজাজে ছিল। প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং তাঁর সেনাবাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেন। ভারতেও সামরিক বাহিনীর তৎপরতা বাড়ে। প্রধানমন্ত্রী বৈঠক করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং তিন বাহিনীর সর্বাধিনায়ক বিপিন রাওয়াতের সঙ্গে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ তিন বাহিনীর প্রধানদের নিয়ে বৈঠক সারেন। নয়াদিল্লির তরফে বার্তা দেওয়া হয়, বেজিং আগ্রাসন বাড়ালে তার যোগ্য জবাব দেওয়া হবে। তবে বুধবার কিছুটা নরম অবস্থান নিয়ে চিনা বিদেশমন্ত্রকের তরফে বলা হয়, সীমান্তে ভারত-চিনের মধ্যে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। পরিস্থিতি স্থিতিশীল এবং আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান সম্ভব।
পরে কার্যতে সেই বার্তাই নয়াদিল্লিকে দিয়েছেন রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের মধ্যে মতবিরোধকে সঠিক ভাবে দেখা উচিত যাতে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে তার ছায়া না পড়ে। দু’পক্ষেরই এই ভাবে দেখা উচিত যে, ভারত এবং চিন একে অন্যের কাছে বহু ক্ষেত্রে বিরাট সুযোগ এবং কেউ যেন কারও বিপদের কারণ না হই।’’ পাশাপাশি তিনি বলেছেন, ‘কৌশলগত পারস্পারিক সমঝোতা’ বাড়াতে দুই দেশেরই উচিত উন্নয়নকে সঠিক পথে নিয়ে যাওয়া। অর্থাৎ চিনের তরফ থেকে কার্যত নমনীয় ও সমঝোতার বার্তা দেওয়া হয়েছে বলেই মনে করছে কূটনৈতিক শিবির।
আরও পড়ুন: পুলওয়ামার ধাঁচে হামলার ছক বানচাল, উদ্ধার বিপুল বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি
আরও পড়ুন: যুদ্ধ বাধলে কতটা তৈরি ভারত? এক নজরে দেখে নিন দেশের স্থল-জল-অন্তরীক্ষের অস্ত্র সম্ভার
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রায় সব বিষয়েই চিন-পাকিস্তান এক সুরে কথা বলে। এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। লাদাখে সেনা মোতায়েন নিয়ে চিনের পাশে দাঁড়িয়ে ইমরান খান বলেছেন, মোদী সরকারের উদ্ধত মনোভাব প্রতিবেশী দেশগুলির কাছে বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের জন্য বাংলাদেশ, সীমান্ত সমস্যা নিয়ে নেপাল, চিন ও পাকিস্তান ভুগছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।