ফাইল চিত্র।
ভারত-চিন সীমান্তে নতুন করে আর হিংসার ঘটনা আপাতত ঘটবে না এটা ধরে নিয়ে, এই সপ্তাহে চিনের সঙ্গে দু’টি কূটনৈতিক বৈঠকে শামিল হচ্ছে নয়াদিল্লি। প্রথমটি অবশ্য দ্বিপাক্ষিক নয়, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই ব্যাখ্যা করছেন কূটনীতিকরা। সেটি আগামিকাল ভারত-চিন-রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের ত্রিপাক্ষিক (আরআইসি বা রিক) ভিডিয়ো বৈঠক। দ্বিতীয়টি, এই সপ্তাহের শেষে ভারত এবং চিনের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে আলোচনার ‘ওয়ার্কিং মেকানিজম ফর কনসাল্টেশন অ্যান্ড কোঅর্ডিনেশন’ (ডবলিউএমসিসি)-এর সচিব পর্যায়ের বৈঠক। পাশাপাশি আজ তিন দিনের সফরে মস্কো গিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। সেখানে রাশিয়ার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানিকে হারানোর ৭৫ বর্ষপূর্তির উৎসবে যোগ দেবেন তিনি। চলতি ভূকৌশলগত আলোচনার প্রসঙ্গে ভারত-চিন সীমান্ত প্রসঙ্গও মস্কোতে উঠে আসতে পারে বলেই জানাচ্ছে বিদেশ মন্ত্রক সূত্র।
আগামিকাল ত্রিদেশীয় বৈঠকের পরে কোনও যৌথ বিবৃতির সম্ভাবনা কম বলেই জানাচ্ছে বিদেশ মন্ত্রক সূত্র। সাউথ ব্লকের কর্তারা জানাচ্ছেন, রাশিয়ার তরফ থেকে একটি খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছিল। কিন্তু তার কিছু অংশে ভারতের আপত্তি রয়েছে। কোন অংশ স্পষ্ট ভাবে না জানা গেলেও সেগুলি ভারত-চিনের চলতি টানাপড়েনের প্রেক্ষিতে স্পর্শকাতর বলেই দাবি বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের। তবে এই বৈঠককে কাজে লাগিয়ে ভারত এবং চিন কিছুটা পারস্পরিক আস্থা তৈরি করার চেষ্টা করবে বলেই দাবি করছে সাউথ ব্লক।
আরও পড়ুন: সামনে এল দুই সেনার লড়াইয়ের ভিডিয়ো
সচিব পর্যায়ের সীমান্ত মেকানিজম ডবলিউএমসিসি তৈরি হয়েছিল ২০১২ সালে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় উত্তেজনা তৈরি হলে দু’পক্ষের মধ্যে সমন্বয় বাড়িয়ে জট ছাড়ানোটাই এর উদ্দেশ্য। ফলে এই আলোচনার দিকে নজর থাকবে গোটা দক্ষিণ এশিয়ারই। পাশাপাশি রাশিয়ায় বিজয় উৎসবে একই সঙ্গে প্যারেড করতে দেখা যাবে ভারতীয় এবং চিনা সেনাদের। ভারত থেকে ইতিমধ্যেই ৭৫ জন সেনাপ্রতিনিধি পৌঁছে গিয়েছেন। আমন্ত্রিত চিনও।
আরও পড়ুন: মোদীর ব্যাখ্যাই সুর বদলে দেয় বৈঠকের
ফলে কথা না হলেও সে দেশের শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিরক্ষা প্রতিনিধির সঙ্গে একই অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন রাজনাথ। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী যন্ত্র দ্রুত ভারতকে পাঠাতে রাজনাথ সিংহের চলতি সফরে রাশিয়ার উপরে চাপ তৈরি করা হবে। মন্ত্রক সূত্রের খবর, এই সরঞ্জামের জন্য একটি বড় অংশের টাকা ভারত ইতিমধ্যেই দিয়ে দিয়েছে। কিন্তু কোভিড সঙ্কটের কারণে রাশিয়া এখনও পাঠিয়ে উঠতে পারেনি। বিদেশ মন্ত্রকের সূত্রের বক্তব্য, এই একই অস্ত্র ব্যবস্থা চিনকে কোভিড সঙ্কটের আগেই পাঠিয়ে দিয়েছিল মস্কো। ফলে বর্তমান পরিস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগের কথাও মস্কোকে জানাবে নয়াদিল্লি।