ছবি: সংগৃহীত।
আলোচনায় কাজ না হলে চিন সীমান্তে সামরিক পদক্ষেপ করা হতে পারে বলে মন্তব্য করলেন চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়ত।
লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় দু’দেশের সেনার সংঘর্ষের পরে পরিস্থিতি বিশেষ বদলায়নি। বিশেষত প্যাংগং হ্রদের কাছে এখনও ভারতের জমি দখল করে রয়েছে চিনা সেনা। গত বৃহস্পতিবারও এ নিয়ে কূটনৈতিক স্তরে এক দফা আলোচনা করেছে ভারত ও চিন। কিন্তু ভারতীয় সেনার একাংশের ধারণা, চিন আদৌ এই বিবাদ মেটাতে বা জমি ছাড়তে রাজি নয়।
আজ এক সাক্ষাৎকারে রাওয়ত বলেন, ‘‘প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা ঠিক কোথায় তা নিয়ে দু’দেশের ধারণার পার্থক্য থাকায় অনেক সময়েই সীমান্ত পেরোনোর ঘটনা ঘটে। সামরিক বাহিনীর কাজ হল সীমান্ত পেরোনোর ঘটনা যেন অনুপ্রবেশ হয়ে না দাঁড়ায় তা নিশ্চিত করা। সরকার শান্তিপূর্ণ ভাবেই এই বিবাদ মেটাতে চায়।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল-সহ জাতীয় নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা লাদাখে আগের অবস্থা ফেরানোর সব পথই বিবেচনা করছেন। যদি অন্য কোনও পথে চিনা সেনাকে আগের অবস্থা ফেরাতে বাধ্য করা না যায় তবে বাহিনী সব সময়েই সামরিক পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুত।’’
আরও পড়ুন: আইআইটি সমাবর্তনে সবাই হাজির ডিজিটাল অবতারে
দেশের প্রধান গোয়েন্দা সংস্থাগুলির মধ্যে সমন্বয়ের অভাবের অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছেন রাওয়ত। তাঁর বক্তব্য, উত্তর ও পশ্চিম সীমান্ত এবং ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল মিলিয়ে ভারতকে এক বিশাল সীমান্ত পাহারা দিতে হয়। সেই সীমান্তে নিয়মিত নজরদারি প্রয়োজন। পুরো সীমান্তে সব সময়ে নজরদারি চালানোর মতো ব্যবস্থা এখনও দিল্লির হাতে নেই। কিন্তু দেশের প্রধান গোয়েন্দা সংস্থাগুলি সব সময়েই নিজেদের মধ্যে তথ্য বিনিময় করে। গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের জন্য গঠিত ‘মাল্টি-এজেন্সি সেন্টার’-এর নিয়মিত বৈঠক হয়। লাদাখ-সহ যে কোনও ক্ষেত্রের তথ্য সব সময়েই যাঁদের জানানো প্রয়োজন তাঁদের জানানো হয়।
লাদাখের দারবুক-শিয়োক-দৌলত বেগ ওল্ডি এলাকায় ভারতের রাস্তা তৈরিই চিনা সেনার সাম্প্রতিক অনুপ্রবেশের কারণ বলে মনে করেন অনেকে। রাওয়তের কথায়, ‘‘সীমান্ত এলাকায় পরিকাঠামো প্রকল্পে গত তিন-চার বছর ধরে উপযুক্ত নজর দেওয়া হয়েছে। দারবুক-শিয়োক-দৌলত ওল্ড বেগ ওল্ডি বা উত্তর সীমান্তের অন্য এলাকায় স্থানীয় মানুষকে যোগাযোগের সুবিধে দেওয়ার জন্য পরিকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে। তা না হলে ওই এলাকার বাসিন্দারা অন্য এলাকায় সরে যেতে চাইছেন। পরিকাঠামো উন্নত হলে ওই এলাকায় মোতায়েন বাহিনীরও সুবিধে হয়। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রকল্পে হাত দিয়ে কৌশলগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ভবিষ্যৎ যোগাযোগের রাস্তা তৈরি করা সম্ভব হয়েছে।’’