ফাইল চিত্র।
পূর্ব লাদাখে নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে উত্তেজনা কমাতে রবিবার চিনের সঙ্গে সামরিক স্তরে ফের বৈঠকে বসছে ভারত। দু’দেশের মধ্যে এটি ১৬তম বৈঠক। নিয়ন্ত্রণরেখায় যে সব সংঘর্ষ বিন্দুতে এখনও চিনা সেনার উপস্থিতি রয়েছে, সেখান থেকে দ্রুত সেনা সরানোর জন্য ভারতের তরফে চাপ অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি এই দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে নিয়ন্ত্রণরেখায় চিনা যুদ্ধবিমানের গতিবিধির প্রসঙ্গও তোলা হতে পারে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সেনার একটি সূত্র। ভারতের তরফে বারবারই বলা হচ্ছে, সীমান্তে শান্তি ও সুস্থিতি বজায় না থাকলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে তার প্রভাব পড়বে।
দু’দেশ যখন পূর্ব লাদাখে চিনা সেনার উপস্থিতি নিয়ে বৈঠকে বসছে, তার কয়েক ঘণ্টা আগে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারতের বায়ুসেনার প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল ভি আর চৌধরি বলেন যে, ‘‘প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর চিনের বায়ুসেনার কার্যকলাপের দিকে ক্রমাগত নজর রাখা হচ্ছে।’’ সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, ‘‘যখনই আমরা বুঝতে পারি যে চিনা যুদ্ধবিমান প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার খুব কাছাকাছি আসছে, আমরা আমাদের ফাইটার প্লেন এবং সিস্টেমগুলিকে হাই অ্যালার্টে রেখে যথাযথ ব্যবস্থা নিই। এতে ওরা ভয় পেয়েছে।’’ যদিও চিনের তরফে কেন এমন করা হচ্ছে, তার সদুত্তর জানা নেই তাঁর। তাঁর কথায়, ‘‘চিন কেন এমন করছে, তার কারণ আমি বলতে পারব না।’’
পূর্ব লাদাখের অবশিষ্ট সংঘর্ষবিন্দুগুলি থেকে চিনের সেনা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে শেষ বার দু’দেশ বৈঠকে বসেছিল গত ১১ মার্চ। সামরিক সূত্রের অনুমান, ডেপসাং ও ডেমচক থেকে চিনের সেনা প্রত্যাহারের দাবিও তোলা হবে এ বারের বৈঠকে।
সম্প্রতি সেনা সূত্রে জানানো হয়েছিল যে, জুন মাসের শেষের দিকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার খুব কাছ দিয়ে উড়ে গিয়েছিল চিনা সামরিক বাহিনীর যুদ্ধবিমান। সেনার রিপোর্ট অনুযায়ী, জুন মাসের শেষ সপ্তাহে ঘটনাটি ঘটেছিল। তবে জুন মাসের কোন তারিখে চিনা যুদ্ধবিমান প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে চলে এসেছিল, তা অবশ্য জানানো হয়নি ভারতীয় সেনার তরফে। তবে তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, জুন মাসের শেষ সপ্তাহের কোনও একদিন ভারতীয় সময় ভোর চারটের নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় মোতায়েন সেনাকর্মীদের চোখে পড়ে চিনা যুদ্ধবিমানটি। বায়ুসেনার রাডারেও ফুটে ওঠে চিনা বিমানের অবস্থিতি। সেটি ভারতীয় আকাশসীমা লঙ্ঘনের অবস্থানে পৌঁছতেই বায়ুসেনা তৎপর হয়ে ওঠে এবং সেই মতো যথাযথ পদক্ষেপ করা হয় বলে জানা গিয়েছে।
ভারতের তরফে ‘উপযুক্ত জবাব’ দেওয়ার পরে চিনা যুদ্ধবিমানটি ফিরে যায় বলে জানা গিয়েছে। সামরিক রীতি অনুযায়ী, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত কোনও দেশই যুদ্ধবিমান ওড়ায় না। এই অঞ্চলটি ‘নো ফ্লাই জোন’ নামে পরিচিত। কিন্তু ২০২০-র জুনে পূর্ব লাদাখের গলওয়ান উপত্যকায় চিন ও ভারতের সেনার মধ্যে সংঘর্ষের পরে চিনের তরফে নিয়ন্ত্রণরেখায় সামরিক কার্যকলাপ বেড়েছে বলে বারবার অভিযোগউঠেছে।