Budget

বাড়তে পারে আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা

অরুণ জেটলির দুঃখ হল, এ দেশের অধিকাংশ লোকই নিজেদের সঠিক আয় স্বীকার করেন না।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৮ ১৫:৫৭
Share:

পকেটে কিছু বাড়তি টাকা এলে কার মুখে না হাসি ফোটে!

Advertisement

তুখোড় রাজনীতিক নরেন্দ্র মোদী তা ভাল করেই জানেন।

প্রশ্ন হল, তাঁর নিজের সিন্দুকেই টানাটানি অবস্থা হলে আমজনতার পকেটে বাড়তি টাকা জোগাবেন কী করে!

Advertisement

বাজেটের আগে এই প্রশ্নের সামনেই দোদুল্যমান নরেন্দ্র মোদীর অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।

এক দিকে, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে তিনি চান আয়করে কিছুটা সুরাহা দিতে। যাতে মধ্যবিত্ত, চাকুরিজীবী মানুষের পকেটে বাড়তি টাকা আসে। কিন্তু ছাড়ে দরাজহস্ত হতে গেলে, সরকারি কোষাগারে আয় কমবে। ভোটের দিকে তাকিয়ে গ্রাম-গরিব-চাষির জন্য অর্থ ঢালতে হবে তাঁকে। এ দিকে জিএসটি চালুর পর থেকেই আয় ক্রমশ কমছে। ফলে রাজকোষ ঘাটতি লাগামের মধ্যে থাকবে কি না, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন জেটলি।

এ বারের বাজেটে আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা আড়াই লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ৩ লক্ষ টাকা করা হতে পারে। আড়াই থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে এখন ৫ শতাংশ হারে আয়কর কর দিতে হয়। তারপর ৫ থেকে ১০ লক্ষ টাকা আয়ে দিতে হয় ১০ শতাংশ কর। ১০ লক্ষের বেশি আয়ে ৩০ শতাংশ হারে কর দিতে হয়। এই আয়করের স্তরেও কিছু বদল হতে পারে। পাশাপাশি মিউচ্যুয়াল ফান্ড, শেয়ার বাজারের সঙ্গে যুক্ত সঞ্চয় প্রকল্প (ইক্যুইটি লিঙ্কড সেভিংস স্কিম)-এর জন্য ৮০সি ধারার সীমা বাড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে মধ্যবিত্ত মানুষ আরও কিছুটা কর ছাড় পাবেন। পকেটে খরচ করার জন্য বাড়তি কিছু টাকা থাকবে।

অর্থমন্ত্রক সূত্র বলছে, অরুণ জেটলি গরিব, মধ্যবিত্তর জন্য আয়করে ছাড় দিলেও তা অন্য জায়গা থেকে পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবেন।

কেন? কারণ রাজকোষ ঘাটতি ও রাজস্ব ঘাটতি। এ বছর রাজকোষ ঘাটতি ৩.২ শতাংশের মধ্যে বেঁধে রাখা খুবই কঠিন। রাজস্ব ঘাটতিও লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে থাকবে কি না, তা নিয়ে চিন্তা। ঘাটতি লাগামছাড়া হলে, সুদের হার কমবে না। মূল্যবৃদ্ধি ফের মাথাচাড়া দেবে। বিদেশের রেটিং এজেন্সিগুলি নাক কুঁচকোবে। বিদেশি ঋণ, বিদেশি লগ্নি—দুই স্রোতই শুকিয়ে আসবে।

আরও পড়ুন: শেয়ার বাজার: কিছু প্রশ্ন, প্রত্যাশা, কিছু পরামর্শ

অরুণ জেটলির দুঃখ হল, এ দেশের অধিকাংশ লোকই নিজেদের সঠিক আয় স্বীকার করেন না। সঠিক আয় লুকিয়ে কর ফাঁকি দেন। একমাত্র চাকুরিজীবীরাই সততার সঙ্গে কর মেটান। কর বাবদ আয় বাড়াতে গিয়ে সেই তাঁদের উপরেই বাড়তি বোঝা চাপাতে হয়। অথচ আয়কর দাতার সংখ্যা বাড়লে, করের হারও অনেকটাই কমানো যেত।

আয়কর দফতর সম্প্রতি ২০১৪-’১৫-য় আয়কর জমার হিসেবনিকেশ শেষ করে তথ্য প্রকাশ করেছে। দেখা যাচ্ছে, ওই বছর দেশের ৫৯,৮৩০ জন নিজেদের কোটিপতি বলে ঘোষণা করেছেন। তার মধ্যে ৩০,৫৬৭ জনই চাকুরিজীবী। অর্থাৎ, গোটা দেশে কোটিপতি ব্যবসায়ী বা শিল্পপতির সংখ্যা মাত্র ২৯,২৬৩ জন। সরকারি পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট, এ দেশের কোটিপতিরা আয়কর দফতরকে সঠিক আয় জানান না। গোটা দেশে বিলাসবহুল গাড়ি বা দামি ফ্ল্যাটের সংখ্যা দেখলেই বোঝা যাবে, ১২০ কোটির বেশি মানুষের দেশে কোটিপতির সংখ্যা এর থেকে অনেক বেশি।

গ্রাফিক্স: শৌভিক দেবনাথ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement