মরিগাঁওয়ের জনসভায় কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। বৃহস্পতিবার উজ্জ্বল দেবের তোলা ছবি।
অসহিষ্ণুতার পরিবেশে দেশকে পথ দেখাতে পারে শঙ্কর-আজানের রাজ্য অসমই, মনে করোন সনিয়া গাঁধী। আজ শেষ পর্যায়ের ভোট প্রচারে এসে বরপেটার সরুক্ষেত্রী, মরিগাঁওয়ের জাগি রোডে কংগ্রেস সভানেত্রী সংখ্যালঘু অধ্যূষিত এই এলাকায় বলেন, ‘‘আরএসএস পরিচালিত নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপি দেশে অসহিষ্ণুতার বাতাবরণ তৈরি করেছে। দেশের সংবিধান ও গণতন্ত্রেও ওঁদের আস্থা নেই।’’ সনিয়ার অভিযোগ, এ ভাবেই তাঁরা সংবিধান ধ্বংস করে অরুণাচল-উত্তরাখণ্ডে সরকার ভেঙেছে।
সনিয়ার কথায়, অসম এবং উত্তর-পূর্বের পরিস্থিতি জটিল। এই অবস্থায় শঙ্করদেব, আজান পীরের রাজ্য অসমই দেশকে পথ দেখাতে পারে। এবং কংগ্রেসই একমাত্র দল, যারা সকলকে এক সুতোয় বেঁধে চলতে পারে। মোদী সরকারের সমালোচনা করে সনিয়া বলেন, “বিজেপি পুঁজিপতিদের জন্য সরকার চালাচ্ছে। ললিত মোদী, বিজয় মাল্যদের মতো মানুষ হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাত করে পালিয়ে যাচ্ছে। আর কেন্দ্র ছোট ব্যবসায়ী, আমআদমিদের উপরে কর বাড়াচ্ছে।” সনিয়ার দাবি, যে বরপেটা কাঁসা-পিতল শিল্প, মৃৎশিল্প, মেখলার জন্য বিখ্যাত, সেখানে শিল্পীদের পেটে লাথি মারছে বিজেপি।
তাঁর আরও অভিযোগ, বিজেপি মানুষকে ভুল বোঝাতে প্রতিবার ‘মিথ্যা’ বলে। মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে ভরা ইস্তাহার প্রকাশ করে। কিন্তু কেন্দ্রের অসহযোগিতা সত্ত্বেও গগৈ রাজ্যের বিকাশ চালিয়ে যাচ্ছেন। ১৫ বছর আগের ‘অন্ধকার অসম’ থেকে কৃষি, শিক্ষা, পরিকাঠামোর বিকাশ হয়েছে। মহিলাদের জন্য চাকরিতে ৩০ শতাংশ সংরক্ষণ, কন্যা সন্তানের জন্ম হলে পাঁচ হাজার টাকার ব্যবস্থা করা, এনআরসি নবীকরণের মতো জটিল প্রক্রিয়া কংগ্রেসের উদ্যোগেই শেষ হতে চলেছে। তার ফলে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীর সমস্যাও শেষ হবে। কিন্তু অসমে বড় বড় প্রতিশ্রুতি দেওয়া মোদী দিল্লি গিয়ে অসমকে বিশেষ সাহায্যের টাকা পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন বলে তাঁর অভিযোগ।
বিজেপি সব সভায় বলছে, অসমের সাংসদ থাকার সময় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ রাজ্যের জন্য কিছু করেননি। সনিয়ার দাবি, “আপনাদের প্রধানমন্ত্রীই আপনাদের উন্নয়নের জন্যে সংঘর্ষ করেছেন। আপনাদের সাহায্যে গগৈ অনেক সমস্যাসঙ্কুল পথ পার হয়েছেন। এই উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখতে আপনাদের সাহায্য এবারেও প্রয়োজন।”
অন্য দিকে, আজ চিরাং জেলার বাসুগাঁওয়ে বিপিএফ প্রধান হাগ্রামা মহিলারির সভায় তেমন ভিড় না হওয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত। তিনি সভায় হাজির, হাতে গোণা মানুষকে জিজ্ঞাসা করেন সংখ্যালঘু, বাঙালি বা কোচ-রাজবংশীরা কেউ এসেছেন কিনা। কয়েকজন বাঙালি বাদে অন্য কেউই সেখানে আসেননি। ক্ষিপ্ত হাগ্রামা বলেন, “আপনারা সভায় আসবেন না, ভোট দেবেন না। তাহলে সমস্যার সমাধান হবে কী করে? পরে বলতে আসবেন না আপনাদের পরিবারের কাউকে ডি-ভোটার সন্দেহে ধরে নিয়ে গিয়েছে বা কোথাও রাস্তা লাগবে।”