চন্দ্রবাবু নায়ডু। — ফাইল ছবি।
দিল্লির আমলাদের বদলি এবং নিয়োগ সংক্রান্ত বিলে সমর্থন দেওয়ার কথা জানাল চন্দ্রবাবু নায়ডুর দল তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি)। এর ফলে লোকসভায় তো বটেই, রাজ্যসভাতেও এই বিল পাশ করানো নিয়ে কোনও চিন্তা রইল না কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির। টিডিপির সমর্থন মেলার ফলে রাজ্যসভায় বিলটির অনুকূলে প্রায় ১২৭টি ভোট নিশ্চিত করে ফেলল বিজেপি। অন্য দিকে বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোটের পক্ষে খাতায়কলমে রইল ১০৯টি ভোট।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে বিরোধী জোট গঠনে বিশেষ উদ্যোগী হয়েছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু। এক সময় এনডিএ জোটের অন্যতম শরিক হলেও পরে বিরোধী শিবিরে যোগ দেন তিনি। ২০১৮ সালে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবও এনেছিল তাঁর দল। অন্ধ্রপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে অবশ্য জগন্মোহন রেড্ডির দল ওয়াইএসআর কংগ্রেসের কাছে শোচনীয় ভাবে পর্যুদস্ত হয় টিডিপি। তার পর চন্দ্রবাবুর রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। সম্প্রতি বিজেপির প্রতি নরম হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন তিনি। এ বার বিরোধী দলগুলির বিপক্ষে গিয়ে দিল্লির আমলা নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত বিলে সমর্থন দেওয়ার কথা জানাল তাঁর দল।
লোকসভায় বিলটি সংখ্যার জোরে পাশ করিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত মোদী সরকার। তবে সম্মিলিত বিরোধী শক্তির সামনে রাজ্যসভায় বড় শক্তি পরীক্ষার মুখে পড়ার সম্ভাবনা ছিল তাদের। কারণ সংসদের উচ্চ কক্ষে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই বিজেপির। এর আগে অবশ্য এই বিলে সমর্থন দেওয়ার কথা জানায় ওড়িশার শাসকদল বিজেপি এবং অন্ধ্রপ্রদেশের শাসকদল ওয়াইএসআর কংগ্রেস। এর সঙ্গে মায়াবতীর বিএসপির সমর্থন পাওয়া গেলে সরকারের হাতে থাকবে ১২৭টি ভোট। বিরোধীরা এককাট্টা থাকলে, বিলটির বিরুদ্ধে থাকবেন ১০৯ জন সাংসদ। উল্লেখ্য যে, টিডিপির তিন জন লোকসভার সাংসদ এবং এক জন রাজ্যসভার সাংসদ রয়েছেন।
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ‘ডেপুটি’ নিত্যানন্দ রাই লোকসভায় বিলটি পেশ করার পরেই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের দল ‘আম আদমি পার্টি’ (আপ)-র সুশীলকুমার রিঙ্কু-সহ বিরোধী সাংসদেরা প্রতিবাদ শুরু করেন। ‘জাতীয় রাজধানী অঞ্চল দিল্লি (সংশোধনী) বিল ২০২৩’-কে ‘গণতন্ত্রের পরিবর্তে বাবুতন্ত্রের সূচনা’ বলে বর্ণনা করেন তাঁরা।
মোদী সরকারের ওই বিতর্কিত অর্ডিন্যান্স সংক্রান্ত মামলা সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে বিচারাধীন। শীর্ষ আদালত গত মাসে জানিয়েছে, অর্ডিন্যান্সের সাংবিধানিক বৈধতা খতিয়ে দেখা হবে। সেই সঙ্গে যাচাই করা হবে, এ বিষয়ে সংসদের অধিকারের সীমাও। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই লোকসভায় বিল পেশ করায় মণিপুরকাণ্ডের জেরে উত্তপ্ত বাদল অধিবেশনে নতুন করে অশান্তি ছড়াতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।