Buddhadeb Bhattacharjee

আম খেতে চান বুদ্ধদেব, রাইলস টিউব খুলে দিতেও চিকিৎসকদের অনুরোধ করছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য আম খেতে চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন তাঁরই চিকিৎসক। কিন্তু তেমন পরিস্থিতি প্রায় নেই। তবে আমের নরম অংশ মণ্ড বানিয়ে তাঁকে দেওয়া যায় কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২৩ ১৬:৩৮
Share:

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। — ফাইল ছবি।

রাইলস টিউবের মাধ্যমে খাবার ঢুকছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শরীরে। এই অবস্থায় নিজে থেকে আম খেতে চাইলেন তিনি। বুদ্ধদেবের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা এক চিকিৎসক এমনটাই জানিয়েছেন। যদিও এখনই সেই পরিস্থিতি নেই বলে জানা যাচ্ছে।

Advertisement

ফুসফুস এবং শ্বাসনালীতে সংক্রমণ নিয়ে শনিবার থেকে আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বুদ্ধদেব। তবে শনিবারের চেয়ে শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কিন্তু বিপন্মুক্ত নন। এই অবস্থায় ঝুঁকি না নিয়ে রাইলস টিউব দিয়ে তাঁর শরীরে খাবার প্রবেশ করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। বুধবারও সে ভাবেই খাবার খাচ্ছেন তিনি। যদিও শরীরে বিভিন্ন নল নিয়ে আপত্তি প্রকাশ করছেন বুদ্ধদেব। ঘনিষ্ঠ এবং চিকিৎসকদের জানিয়েছেন, যেন শরীর থেকে সমস্ত নল খুলে নেওয়া হয়।

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা মেডিক্যাল বোর্ডের অন্যতম সদস্য এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, বুধবার সকালে বুদ্ধদেব আম খাওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। কিন্তু তাঁর মতে, এখন সেই পরিস্থিতি প্রায় নেই। বুদ্ধদেবকে ‘স্পিচ অ্যান্ড সোয়ালো রিহ্যাবিলিটেশন থেরাপিস্ট’ দেখে গিয়েছেন যে, কিছু খেলে তাঁর বিষম লাগতে পারে কি না। তবে এখনও রাইলস টিউবের মাধ্যমেই বুদ্ধদেবের শরীরে খাবার প্রবেশ করানো হচ্ছে। ফলে মুখ দিয়ে কিছু খেতে হচ্ছে না। চিকিৎসকদের পরিকল্পনা হল, আস্তে আস্তে যাতে তিনি মুখ দিয়ে খেতে পারেন, তা নিশ্চিত করা। সে ক্ষেত্রে একবারে রাইলস টিউব খুলে দেওয়ার কথা ভাবছেন না চিকিৎসকেরা। বরং আগামিদিনে আস্তে আস্তে রাইলস টিউব খুলে মুখ দিয়ে খাওয়া শুরু করানোর কথাই ভাবছেন তাঁরা। সে ক্ষেত্রে বুদ্ধদেবকে আমের নরম অংশ দেওয়া যেতে পারে কি না তা নিয়েও ভাবনাচিন্তা চলছে।

Advertisement

এ দিকে, মাঝেমাঝেই বাইপ্যাপ সাপোর্টে রাখা হচ্ছে বুদ্ধদেবকে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, টানা চার ঘণ্টা বাইপ্যাপ সাপোর্টে রেখে তার পর এক ঘণ্টা বিশ্রাম দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। কারণ, এক টানা অনেক ক্ষণ বাইপ্যাপ সাপোর্টে থাকতে আপত্তি করছেন বুদ্ধদেব নিজেই। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর চিকিৎসক জানিয়েছেন, এখন ‘ফিজিয়োথেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন’ চলবে। যা শুধু প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শ্বাস-প্রশ্বাসের কার্যকারিতাই বৃদ্ধি করবে না, পাশাপাশি চলনশক্তি ফিরে পাওয়ার ক্ষেত্রেও সহায়তা করবে। চিকিৎসক মহল সূত্রে খবর, হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার পরেও পাম অ্যাভিনিউয়ের ফ্ল্যাটে গিয়ে ফিজিয়োথেরাপি করানো হবে। তবে চিকিৎসকদের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠছে, ‘সেকেন্ডারি ইনফেকশন’ ঠেকানো। তা ঠেকানো গেলেই যুদ্ধে অনেক দূর এগনো যাবে বলেই মনে করছেন বুদ্ধদেবের চিকিৎসক।

সম্প্রতি কথা বলতে শুরু করেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, তিনি চিকিৎসক এবং ঘনিষ্ঠদের কাছে বলেছেন, ‘‘আমাকে এ বার ছেড়ে দিন।’’ মনে করা হচ্ছে, তিনি হাসপাতালে থাকতে চাইছেন না, ফিরতে চান পাম অ্যাভিনিউয়ের সরকারি ফ্ল্যাটে। ২০১৯ সালেও এক বার এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বুদ্ধদেব। সে বার একটু সুস্থ হওয়ার পর তিনি চিকিৎসকদের কাছে ভ্যানিলা আইসক্রিম খেতে চেয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছিল। তখন অবশ্য চিকিৎসকেরা তাঁকে ভ্যানিলা আইসক্রিমকে গলিয়ে চামচ দিয়ে খাইয়ে দিয়েছিলেন। এ বার আম খেতে চাইলেন তিনি।

বুধবার মেডিক্যাল বোর্ডের বৈঠকে হাজির ছিলেন সিপিএমের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক তথা রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সূর্যকান্ত মিশ্র। বৈঠক শেষে বুদ্ধদেবের বিছানার পাশে চলে যান সূর্যকান্ত। সেখানে সাত-আট মিনিট সময় কাটান তিনি। তবে বুদ্ধদেবের সঙ্গে তাঁর কোনও কথা হয়েছে কি না, তা জানা যায়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement