গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
ভুয়ো সংঘর্ষের প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য অস্বীকার করে সিবিআই যুক্তি দেখিয়েছিল, যদি সিআরপিএফ মোটেই প্রত্যক্ষদর্শীকে না মেরে ছেড়ে দিত না। এমন তদন্ত রিপোর্ট খারিজ করে পূর্ব ইম্ফলের মুখ্য দায়রা বিচারক জানালেন, সিবিআইয়ের বক্তব্য দেখে মনে হচ্ছে, সিআরপিএফ এমন কোনও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলে অবশ্যম্ভাবীভাবেই সব প্রত্যক্ষদর্শীদের মেরে ফেলে!
২০০২ সালের ৯ এপ্রিল পাঙ্গেই বাজারে চলতি ট্রাক থেকে টহলদার জওয়ানদের উপরে গুলি চালানোয় সংঘর্ষে চারজন সিআরপিএফ জওয়ান মারা যান। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এরপর জওয়ানরা এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে থাকে। দোকানে ঢুকে মানুষজনকে টেনে বের করে মারধর করা হতে থাকে। পাল্টা গুলিতে মারা যান স্থানীয় বাসিন্দা আসেম রমাজিৎ ও ইয়ুমনাম রবিতা।
মণিপুরে ভুয়ো সংঘর্ষে মৃত্যুর ঘটনাগুলি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যে মামলা চলছে, তার ভিত্তিতে সিবিআইয়ের বিশেষ তদন্তদল গড়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেখানে পাঙ্গেইয়ের ঘটনাও ছিল।
আরও পড়ুন: ছাত্রীদের যৌনাঙ্গে পেন্সিল ঢুকিয়ে ভিডিয়ো করে নিজের বয়ফ্রেন্ডকে পাঠালেন শিক্ষিকা!
সিবিআই ক্লোজার রিপোর্টে জানায়, একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী নাওরেম মাংলেম্বি নামে এক মহিলা জানান, সেলুন থেকে টেনে বের করে আসেমকে গুলি করে জওয়ানরা। রবিতা বাস স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়েছিলেন। গুলি চলতে শুরু করায় তিনি শুয়ে পড়েছিলেন। তাঁকেও মারে সিআরপিএফ। কিন্তু সিবিআইয়ের দাবি, তেমন হলে কাছ থেকে গুলি ঢুকত। কিন্তু ফরেনসিক পরীক্ষা বলছে গুলি এলেছিল রাস্তায় বাঁ দিকে থাকা দোতলা সমান কোনও জায়গা থেকে। এবং সিআরপিএফ যে দু’জনকে গুলি করে মেরেছে- তার আর কোনও সাক্ষী বা তথ্য-প্রমাণ নেই। প্রশ্ন তোলা হয়, জওয়ানরা যদি দু’জনকে মেরেই থাকেন, তাহলে কেন ভবিষ্যতে সাক্ষী হিসেবে তাঁদের বিপদে ফেলতে পারেন জেনেও সামনে দাঁড়ানো নাওরেমকে ছেড়ে দিলেন?
আদালত বলে, তদন্ত মোটেই সন্তোষজনক হয়নি। একজন সাক্ষীকে কেন মেরে ফেলেনি সিআরপিএফ- এমন প্রশ্ন তুলে তাঁর সাক্ষ্য অস্বীকার করা যায় না। তাই আদালত ফের ঘোটা ঘটনার তদন্ত করার নির্দেশ দেয় সিবিআইকে। এর আগে গৌহাটি হাইকোর্টের ইম্ফল বেঞ্চে ঘটনাটি নিয়ে বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। সেই তদন্ত রিপোর্টেও বলা হয়েছিল, জওয়ানদের উপরে হামলার পরেই হামলাকারীরা এলাকা ছেড়ে পালায় এবং যখন আসেম ও রবিতাকে মারা হয়, তখন সেখানে সিআরপিএফ জওয়ানরা ছাড়া আগ্নেয়াস্ত্র হাতে কেউ ছিল না। তাই তাঁদের জওয়ানরাই গুলি করে মারেন।