প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে সারা দেশে। এই ঘটনার প্রতিবাদে এবং দেশ জুড়ে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবিতে এ বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখল সর্বভারতীয় চিকিৎসক সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)। চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঁচটি দাবি রেখেছেন চিকিৎসকেরা।
হাসপাতালে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছে আইএমএ। চিঠিতে মোদীর উদ্দেশে বলা হয়েছে, ‘‘আমরা ঘটনার এই পর্যায়ে সরাসরি আপনার হস্তক্ষেপ দাবি করছি। তা শুধু মহিলা চিকিৎসকদের নয়, সমস্ত কর্মরত মহিলাকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে।’’ চিঠিতে আইএমএ এ-ও জানিয়েছে, দেশের ৬০ শতাংশ চিকিৎসক মহিলা। এই পরিসংখ্যান সবচেয়ে বেশি দন্তচিকিৎসার ক্ষেত্রে। প্রত্যেক মহিলার নিরাপত্তার অধিকার আছে বলে জানিয়েছে তারা।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষায় একটি কেন্দ্রীয় আইন বলবৎ করার দাবিও জানিয়েছে আইএমএ। ১৮৯৭ সালের মহামারী রোগ আইনে ২০২০ সালে যে সমস্ত সংস্কার করা হয়েছিল এবং সব মিলিয়ে যে আইনের খসড়া প্রস্তুত করা আছে, তা একটি কেন্দ্রীয় আইন হিসাবে প্রয়োগ করার দাবি তোলা হয়েছে। চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষায় ওই কেন্দ্রীয় আইন প্রযুক্ত হবে।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠিতে আরজি কর-কাণ্ডের প্রকৃত, স্বচ্ছ তদন্ত নিশ্চিত করে দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবিও জানিয়েছে সর্বভারতীয় চিকিৎসক সংগঠনটি।
হাসপাতালগুলিতে বিমানবন্দরের মতো নিরাপত্তা চেয়েছেন চিকিৎসকেরা। প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁদের আর্জি, দেশের সমস্ত হাসপাতালকে ‘সেফ্ জ়োন’ হিসাবে ঘোষণা করতে হবে। বিমানবন্দরের চেয়ে হাসপাতালের নিরাপত্তা যেন কোনও অংশে কম না থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে।
এ ছাড়া, আরজি কর-কাণ্ডে নিহত চিকিৎসকের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিও জানিয়েছে আইএমএ।
আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার দেশ জুড়ে কর্মবিরতি পালনের ডাক দিয়েছিল আইএমএ। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালেই জরুরি পরিষেবা বাদে বাকি সব পরিষেবা বন্ধ ছিল। যার ফলে ভোগান্তির শিকার হন রোগীরা। তবে জরুরি পরিষেবায় কোথাও ব্যাঘাত ঘটেনি বলে দাবি চিকিৎসকদের।
উল্লেখ্য, গত ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চার তলার সেমিনার হল থেকে মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই।